বুধবার, মে ৮ ২০২৪ | ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল | ২৮শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সাইবার নিরাপত্তায় মাসব্যাপী ক্যাম কর্মসূচিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলো সৈকত আইটি এন্ড মিডিয়া পয়েন্ট

প্রকৌশলী জুনায়েদ আহমেদ: প্রতি অক্টোবর আন্তর্জাতিকভাবে সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস হিসেবে উদযাপিত হয়ে থাকে। মূলত মাসব্যাপী এই ক্যাম্পেইন হলো সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার ও ইন্ডাস্ট্রিগুলোর মধ্যে একটি সম্মিলিত প্রয়াস। সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস উদযাপনের মধ্য দিয়ে দেশের প্রত্যেক নাগরিককে এটা নিশ্চিত করা হয় যে, ইন্টারনেটে নিরাপদ থাকতে ও অধিক নিরাপদ অনলাইনের জন্য যেসব পূঁজি থাকা আবশ্যক আমাদের তার সবই রয়েছে।

 

আশা করা হচ্ছে খুব অল্প সময়ের মধ্যে ক্যাম ক্যাম্পেইন বিশ্বের বাংলাভাষীদের মধ্যে ব্যাপকভাবে বিস্তৃতি লাভ করবে। পৌঁছে যাবে
দেশের সব ভোক্তা, ছোট ও মাঝারি আকৃতির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, করপোরেশন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও তরুণ সমাজসহ তৃণমূল পর্যায়ের
প্রতিটি মানুষের কাছে।

 

প্রতিবছর অনুষ্ঠিত সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস অক্টোবরের বিশ্বব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে দায়িত্ব পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ
হয়েছে সৈকত আইটি এন্ড মিডিয়া পয়েন্ট।
দেশব্যাপী এই ক্যাম্পেইনের নেতৃত্ব দেয়া ‘সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস বিষয়ক জাতীয় কমিটির’ ওয়েবসাইটে ‘ক্যাম ২০২১
চ্যাম্পিয়ন’ হিসেবে নিবন্ধন করার মাধ্যমে দেশব্যাপী এই ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে সৈকত আইটি এন্ড মিডিয়া
পয়েন্ট। এর মাধ্যমে অনলাইন নিরাপত্তা এবং ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির একটি ক্রমবর্ধমান ক্সবশ্বিক প্রচেষ্টায়
যোগদান করল এই সংগঠন।

 

সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস (ক্যাম) চ্যাম্পিয়ন্স কর্মসূচি হলো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সরকারি সংস্থা, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়,
সমিতি, অলাভজনক সংস্থা এবং ব্যক্তিদের নিয়ে একটি যৌথ প্রচেষ্টা, যা সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাসের মূল প্রতিপাদ্য ‘সচেতন
রই #সাইবারথস্মার্টথহই’- এর মর্মকথা দেশবাসীর কাছে প্রচারের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

 

সৈকত আইটি এন্ড মিডিয়া পয়েন্ট এর পরিচালক প্রকৌশলী জুনায়েদ আহমেদ বলেন, “সাইবার নিরাপত্তায় আমাদের নিজেদেরকে
সচেতন হতে হবে সর্বাগ্রে। এরপর আমাদের বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনসহ আমাদের চারপাশের সবাইকে সচেতন করতে হবে। এটি
আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব। আর এই দায়িত্ববোধ থেকেই সৈকত আইটি এন্ড মিডিয়া পয়েন্ট এই ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণ
করেছে, যার মাধমে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলা শহর এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই সচেতনতা কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হবে।”
ইন্টারনেটের এই অবাধ দুনিয়ায় প্রতিনিয়ত বিচরণ করছে সকল বয়সী ও শ্রেণি পেশার মানুষ। বাংলাদেশে ২০১৯ সাল পর্যন্ত
ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৯ কোটি ৬১ লাখ ৭৬ হাজার। ইন্টারনেটের সুবিধা আমাদের জীবনধারাকে সহজ করেছে
ঠিকই, কিন্তু এর কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে। ইন্টারনেট ব্যবহারর ঝুঁকির বিষয়গুলো সম্পর্কে না জানার কারণে অনেকেই
আজকাল নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। প্রতিনিয়ত সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছেন অসচেতন ও অল্পসচেতন মানুষ। ইন্টারনেটের
প্রকৃত সুবিধা ভোগের স্বার্থে নিরাপদ ইন্টারনেট ও সচেতনতার বিকল্প নেই।

 

২০২০ সালের একই প্রতিপাদ্য (Do Your Part, #BeCyberSmart ) আন্তর্জাতিকভাবে এবারও (২০২১) ‘সাইবার
সচেতনতা মাসের মূল প্রতিপাদ্য হিসেবে পরিগণিত হবে। এবার বাংলাভাষীদের জন্য ‘সচেতন রই #সাইবারথস্মার্টথহই’ প্রতিপাদ্য
নির্ধারণ করেছে জাতীয় কমিটি। এর ভাবার্থ হলো- সাইবার নিরাপত্তা শুধুই যৌথ দ্বায়িত্ব নয়, এটি প্রত্যেকের ব্যক্তিগত দ্বায়িত্বও
বটে। এছাড়া পুরো মাসের কর্মসূচিকে চারটি সপ্তাহে ভাগ করে বিষয়ভিত্তিক সচেতনতার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে
থাকছে – প্রথম সপ্তাহ (৪-৮ অক্টোবর): সাইবার স্মার্ট হই,
দ্বিতীয় সপ্তাহ (১১-১৫ অক্টোবর): ফিশিংপ্রতিরোধ,
তৃতীয় সপ্তাহ (১৮-২২ অক্টোবর): সাইবার সিকিউরিটিতে ক্যারিয়ার এবং
চতুর্থ সপ্তাহ (২৫-২৯ অক্টোবর): সবার আগে সাইবার নিরাপত্তা।

২০২১ সালের এই ক্যাম্পেইন বাস্তবায়নে পার্টনারহিসেবে থাকছে প্রযুক্তিবিদদের আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আইসাকা ঢাকা
চ্যাপ্টার ও সিসিএ ফাউন্ডেশন।

 

সৈকত আইটি এন্ড মিডিয়া পয়েন্ট, নাটোর মূলত একটি আইটি ফার্ম, যা ডোমেইন, হোস্টিং, ওয়েবপেজ ডিজাইন, অনলাইন
মার্কেটিং, অনলাইন ও অফলাইন ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার, কনসালটেন্সি প্রভৃতি সেবা প্রদান করে থাকে। পাশাপাশি বিনামূল্যে এবং
স্বল খরচে তরুণদেরকে আইটি বিষয়ক বিভিন্ন সেমিনার, কনফারেন্স ও ট্রেনিং প্রদান করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটি হতে অতি জনপ্রিয় দুটি
অনলাইন ও হার্ডকপি পত্রিকাও প্রকাশিত হয়, যার একটি প্রকৌশল পেশাজীবীদের পত্রিকা ‘ইঞ্জিনিয়ার্স ভয়েস
(engrsvoice.com)’ এবং অপরটি নাটোর জেলার লোকাল পত্রিকা ‘ইঞ্জিনিয়ার্স ভয়েস (natoretimes.com)’। সেই
সাথে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ করে থাকে সংগঠনটি।

 

সাইবার সচেতনতা মাস সম্পর্কে:
সাইবার সচেতনতা মাস বা ক্যাম-অক্টোবর। ২০০৪ সাল থেকে আমেরিকা, ২০১১ থেকে নরওয়ে এবং ২০১২ থেকে ইউরোপসহ
বিভিন্ন দেশ অক্টোবরকে ‘সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস’ হিসেবে পালন করে আসছে। সাইবার দস্যুতা থেকে নাগরিকদের
নিরাপদে থাকতে মাসব্যাপী নানা কর্মসূচি নেওয়া হয় এ মাসে।

 

বাংলাদেশে ২০১৬ সাল থেকে এটি বেসরকারি উদ্যোগে পালন শুরু হয়। গণমানুষের জন্য সচেতনতামূলক কর্মসূচির গুরুত্ব অনুধাবন
করে ২০২১ সাল থেকে এই সচেতনতামূলক প্রচারাভিজান আরও ব্যাপক পরিসরে পালনে যৌথভাবে উদ্যোগ নিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি
পেশাজীবীদের আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইনফরমেশন সিস্টেমস অডিট অ্যান্ড কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের (আইসাকা) ঢাকা
চ্যাপ্টার ও বাংলাদেশের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন (সিসিএ ফাউন্ডেশন)।

 

এ প্রেক্ষাপটে সংশ্লিষ্ট খাতের পেশাজীবীদের নিয়ে ‘সাইবার সচেতনতা মাস বিষয়ক জাতীয় কমিটি-এনসিক্যাম’ (National
Committee on Cyber Awareness Month – NCCAM) করা হয়েছে। দেশি-বিদেশি প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের
গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ ও দিকনির্দেশনার আলোকে দেশের মানুষকে সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতন করতে কর্মসূচি প্রণয়ন করবে এই
কমিটি।

 

আইসাকা ঢাকা চ্যাপ্টার: তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবীদের আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইনফরমেশন সিস্টেমস অডিট অ্যান্ড কন্ট্রোল
অ্যাসোসিয়েশনের (আইসাকা) ঢাকা চ্যাপ্টার। আইসাকা একটি অলাভজনক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান। তথ্যপ্রযুক্তি নিরাপত্তা ও অডিটের
বিভিন্ন স্ট্যান্ডার্ড প্রণয়নে কাজ করে থাকে এই সংগঠন। বাংলাদেশসহ প্রায় ২০০টি দেশের এক লাখ ৪৫ হাজারের বেশি পেশাজীবী
এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত।

 

সিসিএ ফাউন্ডেশন: সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন (সিসিএ ফাউন্ডেশন)। এটি একটি দেশীয় স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান।

২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশে সাইবার নিরাপত্তা আন্দোলন জোরদারকরণে সভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম আয়োজনসহ মাসব্যাপী সাইবার সচেতনতা ক্যাম্পেইন ইত্যাদি পরিচালনা করে আসছে। মূলত সাইবার সচেতনতা, প্রশিক্ষণ, গবেষণা, নেতৃত্ব তৈরি ও সার্বিকভাবে সমাজে সুস্থ সাইবার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা- এই ৫টি বিষয়ে এই সংগঠনকাজ করছে।

প্রকৌশলী জুনায়েদ আহমেদ,পরিচালক, সৈকত আইটি এন্ড মিডিয়া পয়েন্ট, নাটোর।

 

(সাইবারবার্তা.কম/আইআই/৫ অক্টোবর ২০২১)

শেয়ার করুন

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
আরও পড়ুন

নতুন প্রকাশ