রবিবার, এপ্রিল ২৮ ২০২৪ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল | ১৮ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তির সঙ্গে দক্ষ মানবসম্পদও গড়তে হবে: রাষ্ট্রপতি

সাইবাবার্তা ডেস্ক: ক্রেতাদের প্রতারণা থেকে রক্ষা করতে ই-কমার্সে খাত কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে গুরুত্ব দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বৃহস্পতিবার ( ১ এপ্রিল) ‘ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো ২০২১’ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি বলেন, “করোনার কারণে অনেক ক্রেতাই ঘরে বসে তাদের পছন্দের প্রয়োজনীয় পণ্যটি পেতে চায়। ফলে অনলাইনে কেনাকাটা বহুগুণে বেড়ে গেছে। ই-কমার্স এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক খাত। ই-কমার্সের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ আগ্রহকে ধরে রাখতে হলে ক্রেতাদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে হবে।”

আবদুল হামিদ বলেন, “কিছুসংখ্যক উদ্যোক্তা ই-কমার্সের নামে ক্রেতাদের সাথে প্রতারণা করছে। অনলাইনে এক ধরনের পণ্য প্রদর্শন করে ডেলিভারি দিচ্ছে নিম্নমানের বা অন্য পণ্য। অনেকসময় অর্ডার নিয়ে পেমেন্ট পাওয়ার পর পণ্য ডেলিভারি না দিয়ে ফেইসবুক পেজ বা ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেয়। ফলে ক্রেতারা প্রতারিত হচ্ছে এবং অনলাইনে কেনাকাটায় আগ্রহ হারাচ্ছে।

“মুষ্টিমেয় কিছু অসাধু লোকের প্রতারণার জন্য যাতে ই-কমার্সের মতো একটি বিপুল সম্ভাবনাময় খাতের প্রসার কোনোভাবেই থেমে না যায়, সেজন্য তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিং করতে হবে।”

মহামারী পরিস্থিতিতে ডিজিটাল সেবা খাতের গুরুত্ব তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, “বৈশ্বিক মহামারীর প্রাদুর্ভাবে যখন স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ হবার উপক্রম, তখন তথ্যপ্রযুক্তিই হয়ে ওঠে জরুরি গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম চালিয়ে যাবার একমাত্র নির্ভরশীল মাধ্যম।

“দেশের শিক্ষা কার্যক্রম, বিচারিক কার্যক্রম, স্বাস্থ্যসেবা, ব্যাংকিং সেবা ইত্যাদি হয়ে পড়ে তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর। চলমান মহামারীর সময়ে তথ্যপ্রযুক্তির স্থানীয় বাজার অকল্পনীয় প্রসার লাভ করেছে। এই মহামারীকালে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করেই দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম সচল রাখা সম্ভব হয়েছে।”

সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, “তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারের ফলে সাইবার ক্রাইমের মাত্রাও বেড়ে যাচ্ছে। অনেকসময় বিভিন্ন ইস্যুতে সামাজিক অস্থিরতাও দেখা দেয়। তাই সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রণে উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবনের পাশাপাশি এ ক্ষেত্রে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে হবে। আমি আশা করি, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলে এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।”

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিখাতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে রাষ্ট্রপতি বলেন, “সরকার আইসিটি খাতে উদ্যোক্তা তৈরির জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। স্টার্টআপ ও উদ্ভাবনের জন্য দেওয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা। স্টার্টআপ ও উদ্ভাবনী কালচারকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণের পাশাপাশি ‘স্টার্টআপ বাংলাদেশ’ নামে একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আমি আশা করি, এ সকল উদ্যোগের ফলে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরির পাশাপাশি বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

“দেশের বিপুল শ্রমশক্তিকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে স্থানীয় ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদন শিল্পকে এগিয়ে নিতে হবে। আইসিটিতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের যথাযথভাবে কাজে লাগাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে হবে।”

তিনি বলেন, “দেশে এখন স্যামসাংয়ের উচ্চপ্রযুক্তিসম্পন্ন স্মার্টফোন, সনির অত্যাধুনিক প্রযুক্তির অ্যান্ড্রয়েড টিভিসহ বেশকিছু অ্যাপ্লায়েন্স তৈরি হচ্ছে। আমাদের দেশের বিনিয়োগকারীগণ ডিজিটাল ডিভাইস তৈরির ক্ষেত্রে বিনিয়োগের যে সাহস দেখিয়েছেন সেজন্য আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের আইসিটি খাতে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্জনে তাদেরকে আরও অনেক সাহসী ভূমিকা রাখতে হবে।”

ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো-২০২১ এর স্লোগান ‘মেইক হিয়ার, সেল এভরিহোয়্যার’। তিনদিনব্যাপী এই মেলা সবার জন্য ‘ভার্চুয়ালি’ উন্মুক্ত থাকবে। আইসিটি বিভাগ, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) যৌথভাবে এই আয়োজন করেছে।

আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের অডিটোরিয়ামে এই আয়োজনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

ডাক, টেলিযোগাযোগ, তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি একেএম রহমতুল্লাহ, হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম, আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রীনা পারভীন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সৌজন্যে: বিডিনিউজ২৪

(সাইবারবার্তা .কম/এমআর/এমএ/২ এপ্রিল,২০২১)

শেয়ার করুন

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
আরও পড়ুন

নতুন প্রকাশ