সোমবার, মে ৬ ২০২৪ | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল | ২৬শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

আমেরিকায়ও অনলাইনে নারীরা হয়রানির শিকার

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হয়রানির শিকার হচ্ছেন আমেরিকার নারীরা। বাংলাদেশি আমেরিকান নারীরাও এই হয়রানির শিকার হচ্ছেন। আর করোনাকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী নারীরা সবচেয়ে বেশি সাইবার অপরাধ বা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রতিবাদ হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এসব ঘটনা চাপা পড়ে যায়। কিন্তু এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এই হয়রানির বিরুদ্ধে বিদেশ বিভুঁইয়ে সবাইকে এক জোট হয়ে প্রতিবাদ জানাতে হবে। প্রতিবাদ জানাতে বিদেশের মাটিতে এক জোট হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। সম্মিলিত প্রতিবাদ প্রচেষ্টাতেই হয়তো একজন উত্ত্যক্তকারী ভয়ে দমে যেতে পারেন।

এ ছাড়া যৌন হয়রানিসহ নারীদের প্রতি যেকোনো হয়রানি রোধে আইন আছে। আমেরিকায়ও আছে নিশ্চয়ই। তাই এসব ব্যাপারে ভয় না পেয়ে আইন-আদালতের দ্বারস্থ হতে হবে। কমিউনিটিকে সম্মিলিতভাবে এ নিয়ে কাজ করে যেতে হবে। কেবল অনলাইনে নয়, অন্য যেসব জায়গায় নারীরা হয়রানির শিকার হয়, সেটাও সামনে আনতে হবে এবং প্রতিরোধে মামলাসহ কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

বিদেশে থাকলেও নারীর নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব সেই দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। ভয় না পেয়ে বিষয়টি তাদের জানাতে হবে। দেশ-বিদেশ কোথাও নারীরা নিরাপদ নন। সবখানে নারীর প্রতি একধরনের হয়রানি, সহিংসতা, নির্যাতন চলছেই। নারী সংসারে, সমাজে, রাষ্ট্রে-বিদেশে সমানভাবে অবদান রাখছেন। তাই নারীদের প্রতি সবার সম্মান বাড়াতে হবে। আর নারীদের ভয়ের মানসিকতা থেকে কয়েক কদম এগিয়ে থাকতে হবে সব সময়। এ ক্ষেত্রে নিজেকে হতে হবে প্রতিবাদী। হয়রানির শিকার হয়ে ঘরে বসে থাকলে চলবে না। তাহলে ওই হয়রানি করা ব্যক্তি নতুন কাউকে হয়রানি করার সাহস পাবে। নিজে প্রতিবাদ করতে হবে, প্রয়োজনে বাংলাদেশি কমিউনিটির এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য নিতে হবে। আদালতে যেতে হবে। সব ক্ষেত্রে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তাঁরা যেন কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হন, সে জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

আমাদের কাছে অনেকেই অভিযোগ করেছেন, নারীর প্রতি হয়রানির বিরুদ্ধে কোনো ক্ষেত্রে প্রতিবাদ হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এসব ঘটনা চাপা পড়ে যায়। তাদের কথা বলা বা শোনার মানুষের অভাবে সমাজে নারীদের নানাবিধ সমস্যা যেন আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। আর এ কারণেই নারীদের মধ্যে বাড়ছে হতাশা, ভাঙছে সংসার। করোনাকালে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে নারীর প্রতি সাইবার অপরাধের ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলছে।

এ রকম হয়রানির শিকার বাংলাদেশি মার্কিন সুলতানা নাসরিন (ছদ্মনাম)। হয়রানির বিরুদ্ধে তিনি বিভিন্ন সময় প্রতিবাদ করেছেন। পরে তিনি নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে ওই অপরাধীর বিরুদ্ধে জিডি করেছিলেন। এ রকম সুলতানা নাসরিনের মতো এক ধাপ এগিয়ে যেতে হবে অপরাধীদের বিরুদ্ধে। নিউইয়র্ক বোর্ড অব ইলেকশনের কমিশনার, স্যাফেস্ট-এর প্রতিষ্ঠাতা মাজেদা উদ্দিন জানিয়েছেন, করোনার কারণে নারীদের অনলাইনে সাইবার হয়রানি বেড়েছে। এ থেকে কীভাবে প্রতিকার পাওয়া যায় সে বিষয়ে কাজ করছি। তবে কারও সঙ্গে অনলাইনে পরিচয় হলে তার সম্পর্কে যাচাই-বাছাই না করে বন্ধুত্ব করবেন না। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ছোট পরিসরে রাখতে হবে। তা না হলে এর ভুক্তভোগী হবে পরবর্তী প্রজন্ম।
-সম্পাদকীয়, প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা

শেয়ার করুন

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
আরও পড়ুন

নতুন প্রকাশ