সাইবারবার্তা ডেস্ক: টেসলা প্রধান ইলন মাস্কের ২০১৮ সালে পোস্ট করা একটি বিতর্কিত টুইট “মুছে ফেলতে হবে” বলে জানিয়ে দিয়েছে মার্কিন সরকারের শ্রম বিভাগ। ওই টুইটকে মার্কিন শ্রম আইনের লঙ্ঘন বলে চিহ্নিত করেছে দেশটির শ্রম আদালত।
২০১৮ সালের মে মাসে ওই টুইটে টেসলা প্রধান হুমকি দেন যে, শ্রমিকরা যদি ইউনিয়ন গঠন করেন তবে তারা টেসলার ‘স্টক অপশন’ থেকে বাদ পড়বেন।
ওই টুইটে মাস্ক বলেন- “আমাদের গাড়ির কারখানায় টেসলা দলকে কেউ শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষে ভোট দানে বাধা দিচ্ছে না। চাইলে তারা আগামীকালই এটা করতে পারে। কিন্তু কোনো প্রাপ্তিহীন ইউনিয়নের চাঁদা দিতে গিয়ে কেন আপনার স্টকের মালিক হওয়ার সুযোগ হারাবেন? এই কারখানায় ইউনাইটেড অটো ওয়ার্কার্সের সময়ের তুলনায় এখনকার নিরাপত্তা রেকর্ড দ্বিগুণ ভালো এবং সবাই স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে।”
বিশ্বের অনেক প্রতিষ্ঠানই তাদের কর্মীদের কাজের পুরস্কার হিসেবে প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দিয়ে থাকে। বিশেষ ওই টুইটের মাধ্যমে ইলন মাস্ক হুমকি দেন যে শ্রমিকরা ইউনিয়নে নাম লেখালে তারা কোম্পানির শেয়ার পাবে না।
মার্কিন শ্রম আইন বলছে, প্রতিষ্ঠান প্রধান এমন হুমকি দিতে পারেন না।
মার্কিন ন্যাশনাল লেবার রিলেশনস বোর্ড (এনআরএলবি) ২০১৯ সালে দেওয়া শ্রম আদালতের সিদ্ধান্তের সূত্র ধরে সাম্প্রতিক নির্দেশনা দিয়েছে। শ্রম আদালত ওই টুইটকে ২০১৭ এবং ২০১৮ সালের ন্যাশনাল লেবার রিলেশনস অ্যাক্ট-এর “গুরুতর লঙ্ঘন” বলে রায় দেয়।
ন্যাশনাল লেবার রিলেশনস বোর্ড টেসলাকে নির্দেশ দিয়েছে যাতে ইলন মাস্ক ওই টুইট মুছে ফেলেন এবং প্রতিষ্ঠানটির সকল অফিস ও কারখানায় ওই টুইট যে নিয়ম বহির্ভূত সেটি উল্লেখ করে একটি নোটিশ ঝুলানো হয়। এতেই থামেনি বোর্ড– নির্দেশনায় আরও রয়েছে– “ইলন মাস্ক যেন ভবিষ্যতে নিয়মকানুন যথাযথভাবে মেনে চলেন, আমরা সেই বিষয়টি নিশ্চিত করবো।” – টেসলার পক্ষ থেকে এই কথাটি যোগ করে দিতে।
ইউনাইটেড অটো ওয়ার্কার্স ২০১৮ সালেই ইলন মাস্কের এই টুইট নিয়ে আদালতে অভিযোগ দায়ের করে। সে সময়ে শ্রমিক সংগঠনটি টেসলার ফ্রেমন্ট কারখানায় তাদের শাখা খুলে শ্রমিকদের সংগঠনটির আওতায় আনার চেষ্টা করছিলো।
টেসলা এবং ইউনাইটেড অটো ওয়ার্কার্স তাৎক্ষণিকভাবে এনআরএলবির সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
টুইট মোছার পাশাপাশি ন্যাশনাল লেবার রিলেশনস বোর্ড টেসলার সাবেক এক কর্মীকে কাজে ফেরানোর নির্দেশ দিয়েছে। সেইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির ২০১৭ সালে করা একটি নিয়ম প্রত্যাহার করারও নির্দেশ দিয়েছে। ওই নিয়মের আওতায় কাজের বিরতিতে কারখানার পার্কিং এলাকায় শ্রমিকদের একত্রিত হওয়া এবং ইউনিয়নের স্টিকার ও লিফলেট বিতরণ নিষিদ্ধ ছিল।
টুইট নিয়ে ইলন মাস্কের ঝামেলা এই প্রথম নয়। এর আগে ২০১৮ সালের অগাস্টে মাস্ক টুইটে জানিয়েছিলেন, তিনি টেসলাকে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের রূপ দিতে প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করেছেন। বাস্তবে ওই পরিমাণ অর্থের ধারেকাছেও সংগ্রহ করেতে পারেননি তিনি।
এ নিয়ে আদালতে অভিযোগ দায়েরের পর মাস্ক এবং টেসলা দুই কোটি ডলার করে জরিমানা দেয় এবং টেসলা আইনজীবিরা মাস্কের টুইট আগেভাগে দেখে দেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হন। পরে সমঝোতাটি সংশোধন করে ঠিক করে দেওয়া হয় -ঠিক কখন কখন টুইটের জন্য পূর্ব-অনুমোদনের প্রয়োজন পড়বে। সৌজন্যেঃ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
(সাইবারবার্তা.কম/আরআই/জেডআই/২৭মার্চ,২০২১)