শনিবার, অক্টোবর ১২ ২০২৪ | ২৭শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল | ৮ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

ওয়েবিনারে বিশেষজ্ঞদের অভিমত ‘সাইবার জগতে হয়রানি প্রতিরোধে নারীদের মুখ খুলতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাইবারবার্তা: ইন্টারনেট সুবিধাসহ প্রযুক্তির নানামাত্রিক ব্যবহার যতোই সহজলভ্য হচ্ছে ততোই সাইবার জগতে নারীদের সহিংসতার ঘটনা বাড়ছে। এসব ঘটনা অনেকেই নানা কারণে প্রকাশ করেন না। এই সুযোগে অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। এজন্য নারীদের মুখ খুলতে হবে। কাছের মানুষ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ জানানো উচিত।

 

সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস (ক্যাম) অক্টোবরের ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। ‘সাইবার জগতে নারীর প্রতি সহিংসতা’ শীর্ষক ওয়েবিনারের আয়োজন করে সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস–বিষয়ক জাতীয় কমিটি-২০২১।

আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান খন্দকার ফারজানা রহমান, স্বাস্থ্যসেবা দেয়া প্রতিষ্ঠান লাইফস্প্রিংয়ের হেড অফ সেক্সুয়াল মেডিসিন ইউনিট ডা. সুষমা রেজা, ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার সুলতানা ইশরাত জাহান। সঞ্চালক ছিলেন সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের (সিসিএ ফাউন্ডেশন) সাধারণ সম্পাদক নুরুন আশরাফী।

 

মুঠোফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেড ও প্রযুক্তি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান সাইবার প্যারাডাইসের পৃষ্ঠপোষকতায় মাসব্যাপী সচেতনতামূলক এ কর্মসূচি চলছে। ২০০৪ সাল থেকে আন্তর্জাতিকভাবে এবং ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস পালন শুরু করে সিসিএ ফাউন্ডেশন। গতকাল শনিবার (২৯ অক্টোবর) রাতে আয়োজিত ওয়েবিনার অনলাইনে সরাসরি সম্প্রচার করে ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউন।

 

খন্দকার ফারজানা রহমান বলেন, বাংলাদেশে খুব সহজে নারীদের হয়রানি করা যায়। এসব নিয়ে ভুক্তভোগী নারীদের মধ্যে সঠিক উপায়ে প্রমাণাদি রাখার প্রবণতা কম। ঘটনার পর প্রত্যেকের উচিত রিপোর্ট করা।

তিনি বলেন, টিকটক বা লাইভ ভিডিওভিত্তিক বিনোদনের জন্য ঠিক আছে। কিন্তু যদি সেটা অপরাধ প্রবণতাকে উস্কে দেয় তাহলে তা এড়িয়ে যেতে হবে। শস্তা জনপ্রিয়তা পাওয়ার জন্য এসব অভ্যাস এখন মানসিক অশান্তির কারণ হিয়ে দাঁড়িয়েছে।

 

ডা. সুষমা রেজা বলেন,  টিকটকের মতো বিষয়গুলোকে মানুষ এখন অন্ধভাবে অনুসরণ করছে, যা মোটেই উচিত নয়। এসব সামাজিক অবক্ষয়ের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী সোচ্চার হলেও প্রযুক্তি ব্যবহারকারীদের নিজেদের সচেতনতা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

ডা. সুষমা বলেন, বন্ধু বেছে নেবার ক্ষেত্রেও নিজেকে এবং পরিবারকে সচেতন হতে হবে। পরিচিত ব্যক্তির থেকে নারীরা সহিংসতার শিকার হয়, যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রকাশ করে না। এই ট্রমা থেকে সারাজীবন রক্ত ঝরে। তাই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার শিকার হলে সবার আগে সবচেয়ে কাছের মানুষ কিংবা পরিবারকে জানাতে হবে। সাহস নিয়ে মানুষগুলোর মুখোশ খুলতে হবে।

 

ইশরাত জাহান বলেন, সাইবার বুলিংয়ের শিকার হলে আপনার কাছের থানায় জিডি করতে হবে আগে। পুলিশের বিশেষ ইউনিট এসব বিষয়ে কাজ করে। তাদের সাহায্য নিতে হবে। অনলাইনে কোনো বার্তা পাঠিয়ে হয়রানি করা হলে সেগুলোর ছবি তুলে নিয়ে অভিযোগ জানাতে হবে পুলিশের কাছে। স্যোসাল মিডিয়া ব্যবহারের ক্ষেত্রে বড় ও কঠিন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা এবং একাধিক ধাপের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

 

(সাইবারবার্তা.কম/আইআই/৩০ অক্টোবর ২০২১)

শেয়ার করুন

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
আরও পড়ুন

নতুন প্রকাশ