বৃহস্পতিবার, জানুয়ারি ১৬ ২০২৫ | ২রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - শীতকাল | ১৫ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

আরেকটি ফেসবুক বানালে যে সমস্যায় পড়বেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

সাইবারবার্তা ডেস্ক: ফেসবুক-টুইটার থেকে বিতাড়িত হয়ে নিজেই নতুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম খোলার ঘোষণা দিয়েছিলেন অভিমানী ডোনাল্ড ট্রাম্প। সে অবশ্য গত জানুয়ারির ঘটনা। এরপর তা নিয়ে আর উচ্চবাচ্য তেমন করেননি। তবে এখন শোনা যাচ্ছে, আর দুই কি তিন মাস। এরপর দেখা যাবে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। সেটা নাকি ফেসবুক-টুইটারের চেয়েও বড় হবে। ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব বলেছেন ট্রাম্পের ২০২০ সালের নির্বাচনী মুখপাত্র জেসন মিলার।

তবে মুখের কথায় তো আর চিড়ে ভেজে না। নতুন একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম চালু করা তেমন কঠিন কিছু হয়তো না। প্রযুক্তিবিদদের সাহায্য নিয়ে সেটি সহজেই করে ফেলতে পারেন ট্রাম্প। বড়জোর কয়েক সপ্তাহর ব্যাপার। তবে সেটি জনপ্রিয় করা, মানুষের কাছে নির্ভরযোগ্য করে তোলা আর ফেসবুক-টুইটারের মতো বিদ্যমান বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পেরে ওঠা সহজ কথা না। আরেকটি ফেসবুক বা টুইটার দাঁড় করাতে রীতিমতো গলদঘর্ম হতে হবে ট্রাম্পকে। চলুন আমরা দেখে নিই নতুন একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম চালু করলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কী কী সমস্যার মুখী হতে পারেন।

বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানো কঠিন হতে পারে

নতুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্পের পাঁড় সমর্থকেরাই কেবল যোগ দেবেন। তাঁর একান্ত রাজনৈতিক সহযোগীরা হয়তো সমর্থন প্রকাশের জন্য আর সংবাদকর্মীরা সংবাদের আশায় ট্রাম্পকে সে মাধ্যমে অনুসরণ করতে পারেন। তবে বিদ্যমান জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় ট্রাম্পের এক পোস্ট যত মানুষের কাছে পৌঁছাত, নতুন মাধ্যমে তা সম্ভব না। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, টুইটারে বিশ্বব্যাপী নয় কোটির বেশি সমর্থক ছিল তাঁর।

যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির বার্কম্যান ক্লেইন সেন্টার ফর ইন্টারনেট অ্যান্ড সোসাইটির সহপরিচালক ইয়োচাই বেঙ্কলার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, নতুন একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা সহজ নয়। তাঁর মতো বড় একজনের জন্য হয়তো কয়েক লাখ মানুষ সেখানে যোগ দেবে। তবে সেটি অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্কের মতো কাজ করবে। তাঁর বার্তা কেবল ভক্তদের কাছেই পৌঁছাবে, দেশব্যাপী মানুষের কাছে নয়।

মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে

নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্পের জন্য ধরাবাঁধা নিয়মের বালাই থাকার কথা নয়। এতে হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিল দাঙ্গার আগে দেওয়া ঘোষণার মতো বক্তব্য পেশ করবেন যখন-তখন। আর যদি তা-ই হয়, তবে আমাজন, মাইক্রোসফট আর গুগলের মতো বড় তিন ক্লাউড কম্পিউটিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নতুন প্ল্যাটফর্মটি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে বলেই মনে হয়। ওয়েবসাইটটি হোস্ট করার মতো প্রতিষ্ঠান পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবা নিতে পারেন তিনি। তাতে কেবল সমালোচনাই বাড়বে।

নিজের পাতা ফাঁদে পা পড়তে পারে

যুক্তরাষ্ট্রে আইনে ‘অনুচ্ছেদ ২৩০’ হিসেবে পরিচিত অংশটি বাতিল করতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প। বাইডেন প্রশাসনও সে অনুচ্ছেদে পরিবর্তন চায়। শেষমেশ পরিবর্তন যদি হয়ই, তবে বুমেরাং হয়ে তা ফিরে আসবে ট্রাম্পের দিকেই।

অনুচ্ছেদ ২৩০-এ বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া কোনো পোস্টের দায় কেবল পোস্টদাতার। এ জন্য ওই মাধ্যমকে কোনোভাবেই দায়ী করা যাবে না। অনুচ্ছেদটিতে পরিবর্তন এলে তখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কনটেন্টের জন্য দায়ী তিনি নিজেই হতে পারেন। অর্থাৎ, আইনি ঝামেলা মোকাবিলা করতে হতে পারে নিয়মিত।

তা ছাড়া বিশেষজ্ঞরা বলেন, ট্রাম্প চাইলে এখনো তাঁর বক্তব্য নানাভাবে অনেক মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারেন। নতুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের চেয়ে সেটাই বরং সহজ হতে পারে।

সূত্র: ফাস্ট কোম্পানি, দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট

(সাইবারবার্তা.কম/আরআই/জেডআই/২৪মার্চ,২০২১)

শেয়ার করুন

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
আরও পড়ুন

নতুন প্রকাশ