মঙ্গলবার, জানুয়ারি ১৪ ২০২৫ | ৩০শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - শীতকাল | ১৩ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

অ্যাপের মাধ্যমে করা যাচ্ছে ধান বিক্রি,লাভবান কৃষকরা

সাইবারবার্তা ডেস্ক: চলতি বোরো মৌসুমে ‘কৃষকের অ্যাপস’ নামে একটি অ্যাপ ব্যবহার করে নিবন্ধিত কৃষকরা ধান বিক্রি করতে শুরু করেছেন। চাঁদপুর জেলায় ধান ও চাল সংগ্রহে সরকারের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এখন পর্যন্ত পার্শ্ববর্তী জেলার তুলনায় এগিয়ে। ধান ও চালের এ ক্রয় পক্রিয়া থাকবে আরো আড়াই মাস।

অন্য বছরের তুলনায় বোরো ধানের ফলন ভাল হওয়ায় কৃষকরাও সরকারের নিকট ধান বিক্রি করতে আগ্রহী। বাজারের চেয়ে দাম বেশি পাওয়ায় লাভবান হচ্ছে কৃষক।

চাঁদপুর জেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নদী বেষ্টিত চাঁদপুরের আট উপজেলায়ই কম বেশি বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। চলতি বোরো মৌসুমে সরকার আভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য সংগ্রহের জন্য জেলায় আট হাজার ৮৬ মেট্টিক টন বোরো ধান ও সাত হাজার ১০১ মেট্টিক টন সিদ্ধ চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়। ধানের মূল্য নির্ধারণ করা হয় ২৭ টাকা এবং সিদ্ধ চালের মূল্য নির্ধারণ হয় ৪০ টাকা। চাঁদপুরে ৯ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত ধান ৩০.৫০% ও সিদ্ধ চাল ৩৭.৬০% সংগ্রহ হয়েছে। আগামী ১৬ আগস্টের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে জেলা খাদ্য বিভাগ।

 

শাহরাস্তি উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মজিবুর রহমান বলেন, উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় এ বছরই প্রথম কৃষকের অ্যাপস ব্যবহার করে পাইলট প্রকল্প হিসেবে কচুয়া, শাহরাস্তি, সদর ও ফরিদগঞ্জ উপজেলার নিবন্ধিত কৃষকরা সরাসরি খাদ্য গুদামে এনে ধান বিক্রি করছেন। বাকিরা মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, হাজীগঞ্জ ও হাইমচর উপজেলায় কৃষি বিভাগ থেকে দেয়া তালিকা অনুযায়ী সরাসরি খাদ্য গুদামে এসে ধান বিক্রি করেন কৃষকরা।

 

হাজীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু ছালেহ বলেন, বিক্রি পক্রিয়ায় কোনো ধরণের মধ্যসত্বভোগী না থাকায় সঠিক মূল্য ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কৃষককে তার টাকা পরিশোধ করা হচ্ছে। পূর্বেই কৃষকদের মাইকিং করে ধান বিক্রি করার জন্য সরাসরি আসার অনুরোধ করা হয়েছে। যার জন্য কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জেগেছে।

 

চাঁদপুর সদরের বিষ্ণুপুর উনিয়নের কৃষক মান্নান গাজী ও মজিবুর রহমান বলেন, তারা ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য সেবা কেন্দ্রে অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করেছেন। এরপর তাদের উপজেলা খাদ্য বিভাগ থেকে ফোন করে ধান বিক্রির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। এর মধ্যে মান্নান গাজী ৬৫ মণ এবং মজিবুর রহমান ৪৫ মণ ধান বিক্রি করেছেন।

 

একই উপজেলার রায়শ্রী উত্তর ইউনিয়নের কৃষক আবু তাহের জানান, তিনি গত কয়েকবছরই খাদ্য গুদামে সরাসরি ধান বিক্রি করেন। এ বছর বাজারমূল্যের চাইতে বেশি এক হাজার ৮০ টাকায় ধান বিক্রি করে তিনি লাভবান হয়েছেন। তিনি চান সরকার যেন এই ধরণের নিয়ম অব্যাহত রাখেন।

 

চাঁদপুর খাদ্য গুদামের ইনচার্জ তামিম হাসান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খাদ্য সংগ্রহের জন্য যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আমরা তা শতভাগ বাস্তবায়নে কাজ করছি। দিন ও রাতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আশা করি, কৃষক ও মিলস্ মালিকরা আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন। এতে তারা সঠিকভাবে ধান ও চাল সরবরাহ করে লাভবান হবেন।

 

চাঁদপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) নিত্যানন্দ কুন্ডু বলেন, চাঁদপুর জেলা ৩ জুন পর্যন্ত সরকারি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ধান ৩০% ও চাল ৩৭% সংগ্রহ করেছে। সরকারের নির্দেশনা রয়েছে জুনের মধ্যে ৭৫% লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে। আশা করা হচ্ছে তা সফল হবে। এছাড়াও জেলার ১৭টি অটো এবং দুইটি হাস্কিং রাইস মিলস্ সিদ্ধ চাল সরবরাহ শুরু করেছে।

 

(সাইবারবার্তা.কম/আইআই/৬ জুন ২০২১)

শেয়ার করুন

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
আরও পড়ুন

নতুন প্রকাশ