নিজস্ব প্রতিবেদক, সাইবারবার্তা: ২০২১ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৩ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকার রাজস্ব আয় করেছে দেশের শীর্ষ মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন। গত বছর একই সময়ের তুলনায় রাজস্ব বেড়েছে ৮.১ শতাংশ। একই সময়ে গ্রাহক প্রতি ইন্টারনেট ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৮.৬ শতাংশ এবং ইন্টারনেট গ্রাহকের ক্ষেত্রে বছরপ্রতি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ শতাংশ। সব মিলিয়ে মোট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৮৫১ কোটি টাকা। এর ফর্লে এই অর্ধ বছরে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১২ টাকা ৮৯ পয়সা।
আর দ্বিতীয় প্রান্তিকে ১৩ লাখ নতুন গ্রাহক নেটওয়ার্কে যুক্ত করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এই সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০.১ শতাংশ বেশি। দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষে মোট গ্রাহক দাড়িয়েছে ৮ কোটি ২০ লাখ যার মধ্যে ইন্টারনেট গ্রাহক ৪ কোটি ৪৭ লাখ। গ্রামীণফোনের মোট গ্রাহকের ৫৩.৩ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে।
গ্রামীণফোন লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, “গ্রাহক অভিজ্ঞতার মানোন্নয়ন ও ডিজিটালাইজেশনের উপর আমাদের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার কারণে আরও বেশি সংখ্যক গ্রাহক গ্রামীণফোনের সেবা বেছে নিয়েছেন; এবং একই কারণে দ্বিতীয় প্রান্তিকে ইন্টারনেট ব্যবহারও বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রথম প্রান্তিকে নিজেদের সকল টাওয়ারে ফোরজি সেবা সম্প্রসারণ করে গ্রামীণফোন। পাশাপাশি, অধিকৃত নতুন তরঙ্গ ব্যবহার ও নেটওয়ার্ক বিস্তারের ব্যাপারেও আমরা আমাদের উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি এবং ধারাবাহিকভাবে নতুন নেটওয়ার্ক সাইট স্থাপন করছি। এ প্রচেষ্টাই আমাদের গ্রাহকদের অভিজ্ঞতার মানোন্নয়নে এবং উচ্চগতির ইন্টারনেটের চাহিদা পূরণের মাধ্যমে বাংলাদেশের ডিজিটালাইজেশনে সহায়তার ব্যাপারে আমাদের অঙ্গীকার পূরণের সুযোগ করে দিয়েছে।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে আমাদের ২৩ লাখ ফোরজি গ্রাহক বেড়েছে যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫৬.৫ শতাংশ বেশি। একই সময়ে ডিজিটাল রিজার্চ বেড়েছে ১৪.৫ শতাংশ। কভিডের মহামারির চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও গ্রামীণফোন ২০২১ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে আবার প্রবৃদ্ধিতে ফিরে এসেছে। ”
ইয়াসির আজমান বলেন, “কোভিড-১৯ এর সাম্প্রতিক ঢেউ বাংলাদেশের জন্য মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে, এর কারণে বৈশ্বিক মহামারি নিয়ে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। এর ফলে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কঠোর লকডাউন কার্যকর করেছে। স্বীকৃত জরুরি সেবাদাতা হিসেবে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের কর্মী, পার্টনার ও গ্রাহকদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাকে প্রাধান্য নিয়ে আমরা নিরলসভাবে আমাদের গ্রাহক, পার্টনার, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং স্থানীয় কমিউনিটির সাথে কাজ করছি।
বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে অঙ্গীকারবদ্ধ গ্রামীণফোন। আমাদের লক্ষ্য ব্র্যাকের সাথে যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে যেসব পরিবার কোভিড-১৯ এর কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের খাদ্য সহায়তা দেয়া।”
গ্রামীণফোন লিমিটেডের সিএফও ইয়েন্স বেকার বলেন, “২০২১ সালের শুরু থেকে ব্যবসায়িক গতির ধারা উন্নতির দিকে থাকায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। গত বছরের তুলনায় আমাদের সাবক্রিপশন ও ট্র্যাফিক রাজস্ব বেড়েছে ৮.৫শতাংশ। গ্রাহক প্রতি ইন্টারনেট ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৮.৬ শতাংশ এবং ইন্টারনেট গ্রাহকের ক্ষেত্রে বছরপ্রতি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ শতাংশ।
দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষে আমাদের মোট রাজস্বের ক্ষেত্রে ৮.১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে এবং ইবিআইটিডিএ (পরিচালন আয়) মার্জিন ৬২শতাংশ নিয়ে আমরা এ প্রান্তিক শেষ করেছি। ২৩.৮ শতাংশ মার্জিন নিয়ে দ্বিতীয় প্রান্তিকে মোট মুনাফা দাড়িয়েছে ৮৫১ কোটি টাকা। আমরা ঘোষণা করতে পেরে আনন্দিত যে, ২০২১ সালের ১৪ জলাই অনুষ্ঠিত পর্ষদ সভায় পরিচালনা পর্ষদ আমাদের সম্মানিত শেয়ারহোল্ডারদের জন্য শেয়ার প্রতি১২.৫ টাকা অভ্যন্তরীণ লভ্যাংশ প্রস্তাব করেছেন।”
২০২১ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে গ্রামীণফোন লিমিটেড নেটওয়ার্ক কাভারেজে উন্নয়নে ৫১৮.৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। গ্রামীণফোনের মোট সাইটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭,৪১৬টি। ২০২১ সালের প্রথম অর্ধবছরে প্রতিষ্ঠানটি কর, ভ্যাট, ডিউটি, ফি, ফোরজি লাইসেন্স এবং তরঙ্গ বরাদ্দ ফি বাবদ ৫৪৫০ কোটি টাকা সরকারি কোষগারে জমা দিয়েছে, যা প্রতিষ্ঠানের মোট রাজস্বের ৭৭.২ শতাংশ।
(সাইবারবার্তা.কম/আইআই/১৫ জুলাই ২০২১)