বুধবার, ফেব্রুয়ারি ৫ ২০২৫ | ২২শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - শীতকাল | ৫ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

টিকটকসহ ক্ষতিকর অ্যাপস নিষিদ্ধে রিট হাইকোর্টের কার্যতালিকায়

সাইবারবার্তা ডেস্ক: যুব সমাজ ও তরুণদের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষায় স্মার্টফোন অ্যাপ বিগো লাইভ, টিকটক, লাইকি মোবাইল অ্যাপস নিষিদ্ধের নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদনটি শুনানির জন্য হাইকোর্টের কার্যতালিকায় (কজলিস্টে) এসেছে। সে হিসেবে এ বিষয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে আদালত চাইলে বিষয়টির ওপরে শুনানি হতে পারে।

 

রোববার (৬ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল ইসলাম মোল্লার দ্বৈত বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হতে পারে। জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. জে.আর খান রবিন।

এর আগে, গত ৩০ ডিসেম্বর যুব সমাজ ও তরুণদের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষার জন্য বিগো লাইভ, টিকটক, লাইকি মোবাইল অ্যাপস নিষিদ্ধের নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়। রিটে এসব অ্যাপস বন্ধে বা নিষিদ্ধে সংশ্লিষ্টদের ব্যর্থতাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং একই সঙ্গে কেন উক্ত অ্যাপস বন্ধের নির্দেশনা দেয়া হবে না মর্মেও প্রার্থনা করা হয়।

 

রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব, তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, আইজি পুলিশকে বিবাদী করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জে আর খান (রবিন) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জনস্বার্থে রিটটি করেন।

 

রিটের বিষয়ে আইনজীবী রবিন বলেন, ‘এসব অ্যাপ তরুণ প্রজন্মকে বিপথগামী করছে। নষ্ট হচ্ছে নৈতিকতা, সামাজিক মূল্যবোধ ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ। কিশোর গ্যাংয়ে জড়িয়ে অপরাধমূলক কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন তারা, হয়ে উঠছেন সহিংস। তরুণ সমাজ এসব অ্যাপের মাধ্যমে সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জন করতে চান এবং নিজেকে জনপ্রিয় ভাবতে শুরু করেন।’

রিটে বলা হয়েছে, বিগো-লাইভ অ্যাপের মাধ্যমে তরুণ ও যুবকদের টার্গেট করে লাইভে এসে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি ও কুরুচিপূর্ণ প্রস্তাব দিয়ে এবং যৌনতার ফাঁদে ফেলে কৌশলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কাড়ি কাড়ি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়।

 

এতে বলা হয়, প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেক তরুণ। এ অ্যাপটি মূলত একটি লাইভ স্ট্রিমিং প্লাটফর্ম, যেখানে একজন ব্যবহারকারী তার অনুসারীদের সঙ্গে লাইভ মুহূর্ত শেয়ার করেন। এই অ্যাপের ক্ষতিকর দিক বিবেচনা করে আমাদের প্রতিবেশী দেশ তা নিষিদ্ধ করেছে।

 

এতে আরও বলা হয়, টিকটক অ্যাপের মাধ্যমে অনেক কিশোর-তরুণ উদ্ভট রঙে চুল রাঙিয়ে এবং ভিনদেশি অপসংস্কৃতি অনুসরণ করে ভিডিও তৈরি করছেন, যাতে সহিংস ও কুরুচিপূর্ণ কনটেন্ট থাকে। স্বল্পবসনা তরুণীরা টিকটকের অশ্লীল ভিডিওতে নাচ, গান ও অভিনয়ের পাশাপাশি নিজেদের ধূমপান ও সিসা গ্রহণ করার ভিত্তিও আপলোড করেছেন।

 

‘উদ্বেগজনক বিষয় হলো, এসব ভিডিওতে কোনো শিক্ষণীয় বার্তা নেই। উল্টো এসব ভিডিওর মাধ্যমে তরুণ পজন্মের কাছে ভুল বার্তা চলে যাচ্ছে। বিব্রতকর, অনৈতিক ও অশ্লীল ভিডিও যা পর্নোগ্রাফিকে উৎসাহিত করায় ইতোমধ্যে ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়ায় এর ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’

 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই অ্যাপগুলোর মধ্যে এক ধরনের শো-অফ বিষয় থাকে। এই শর্ট ভিডিও ক্রিয়েশন এবং শেয়ারিং প্লাটফর্মে গিয়ে তরুণ প্রজন্ম অশ্লীল ভিডিও ছড়াচ্ছেন। এসব কাজে সম্পৃক্ত হয়ে একদিকে যেমন তরুণ সমাজ নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে তাদের পড়ালেখাও চরম হুমকির মুখে পড়ছে।

 

এর আগে, এ বিষয়ে ১৫ দিনের মধ্যে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে আইনজীবী রবিন গত ৮ অক্টোবর জনস্বার্থে একটি নোটিশ পাঠান। কিন্তু যথাযথ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় রিট দায়ের করেন তিনি।

 

(সাইবারবার্তা.কম/আইআই/৬ জুন ২০২১)

শেয়ার করুন

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
আরও পড়ুন

নতুন প্রকাশ