সাইবারবার্তা ডেস্ক: স্মার্টফোনে ভার্চ্যুয়াল সহকারী করটানার সেবা বন্ধ করছে মাইক্রোসফট। স্মার্টফোনে আর শোনা যাবে না করটানার কণ্ঠস্বর। ‘হেই করটানা’ বলে ডাকলেও আর সাড়া দেবে না। মুঠোফোনের জন্য করটানার সেবা বন্ধের ঘোষণা এসেছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের কাছ থেকেই। অথচ অ্যাপলের সিরি আর গুগলের অ্যাসিস্ট্যান্টের মতো ঘাগু দুই ভার্চ্যুয়াল সহকারীর সঙ্গে টক্কর দেওয়ার জন্যই করটানা তৈরি করেছিল উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি।
বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্মার্টফোন থেকে অবসর নিলেও উইন্ডোজ ১০, আউটলুক ও টিমস নামের মাইক্রোসফটের তৈরি সফটওয়্যারগুলোতে থাকবে করটানা। তা হোক, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে এরই মধ্যে আরআইপি করটানা হ্যাশট্যাগ (#RIPCortana) চালু হয়ে গেছে। সবাই যে ‘খুব ভালো লোক ছিল’ বলে হাহুতাশ করছে, ব্যাপারটা তেমনও নয়। অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ভার্চ্যুয়াল সহকারীর বাজারে কতটা নগণ্য ছিল করটানা।
স্মার্টফোনের জন্য মাইক্রোসফটের অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ ফোনসের ভার্চ্যুয়াল সহকারী হিসেবে ২০১৪ সালে করটানা তৈরি করা হয়। মাইক্রোসফটের তৈরি ‘হ্যালো’ সিরিজের গেমগুলোতে ‘করটানা’ নামের নারীচরিত্র ছিল। সে চরিত্রের মূল কাজ গেমারকে নির্দেশনা দেওয়া। স্মার্টফোনে করটানার অনুপ্রেরণা সেখান থেকেই।
তার তিন বছর পর স্মার্টফোনের অপারেটিং সিস্টেম তৈরি বন্ধ করে দেয় মাইক্রোসফট। তবে আইফোন আর অ্যাড্রয়েডচালিত স্মার্টফোনগুলোতে ব্যবহারের সুযোগ ছিল। কিন্তু সিরি কিংবা গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট রেখে কে আর নতুন করে নামিয়ে করটানা ব্যবহার করবে! শেষমেশ প্রকল্পটি বন্ধই করে দিতে হলো।
বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিএসএস ইনসাইটসের প্রধান বিশ্লেষক বেন উড বিবিসিকে বলেন, বাজারে আমাজনের অ্যালেক্সা আর গুগলের অ্যাসিস্ট্যান্টের যেমন আধিপত্য, তাতে প্রতিদ্বন্দ্বীদের জন্য খুব বেশি জায়গা এমনিতেও নেই। এমনকি অ্যাপলের মতো বড় প্রতিষ্ঠান বিশাল বিনিয়োগ নিয়েও সিরিকে টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। সেদিক থেকে মাইক্রোসফটের সিদ্ধান্তকে সময়োপযোগী বলেই মানছেন তিনি।
সিরিতে যুক্ত হলো পুরুষকণ্ঠ
এদিকে অ্যাপলের ভার্চ্যুয়াল সহকারী সিরির মূল সংস্করণে পরিবর্তন এনেছে অ্যাপল। সিরি এখন আর কেবল নারীকণ্ঠে কথা বলবে না। চাইলে বদলে পুরুষকণ্ঠও ঠিক করে দেওয়া যাবে। মূল নারীকণ্ঠ মুছে নতুন দুটি কণ্ঠ থেকে বেঁছে নেওয়ার সুবিধা দিয়েছে অ্যাপল।
ভার্চ্যুয়াল সহকারীর জন্য কেবল নারীকণ্ঠের ব্যবহার অনেক দিন ধরেই সমালোচিত হয়ে আসছে। ২০১৯ সালে প্রকাশিত ইউনেসকোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্টে কেবল নারীকণ্ঠ যুক্ত করা হলে তা নারী অবমাননার বার্তা দেয়। সিরিতে নতুন সংযোজনের কারণ সেটিই। অবশ্য বেশ কিছু দেশ ও ভাষায় এরই মধ্যে সিরির মূল কণ্ঠ পুরুষ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এবার করা হলো সব ব্যবহারকারীর জন্যই। সৌজন্যে: প্রথম আলো
(সাইবারবার্তা.কম/এনটি/এমএ/৩ এপ্রিল ২০২১)