সাইবারবার্তা ডেস্ক:প্রকাশভঙ্গি এবং যোগাযোগপদ্ধতিতে লক্ষণীয় পরিবর্তন ঘটলেও কমেনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলোর আবেদন। গত কয়েক বছরে সংক্ষিপ্ত-ভিডিও প্ল্যাটফর্মগুলো অভাবনীয় মাইলফলক অর্জন করেছে এবং এর কল্যাণে প্রচুরসংখ্যক মানুষ প্রাণবন্ত, বিনোদনপূর্ণ ও সৃষ্টিশীল সব ডিজিটাল কন্টেন্টের দিকে ঝুঁকেছেন। জনপ্রিয় সংক্ষিপ্ত-ভিডিও তৈরির প্ল্যাটফর্ম লাইকি অনেক উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং প্রতিভাবান তরুণকে এনে দিয়ে দিয়েছে খ্যাতি। এ ধরনের প্ল্যাটফর্ম থেকে এখন জন্ম নিচ্ছে অনেক তারকা ও ইনফ্লুয়েন্সার, যারা তাদের ব্যতিক্রমী সৃষ্টির মধ্য দিয়ে অন্যদের চিন্তা ও মননে প্রভাব ফেলছে।
বছরের অন্যতম সেরা শর্ট ভিডিও কনটেন্ট নির্মাতা হিসেবে সেফকিপার চ্যানেল আই ডিজিটাল মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২০–এর বিজেতা, এ সময়ের ‘ইয়ুথ-আইকন’ নুসান তাসিম, লাইকির মাধ্যমে তারকাখ্যাতি পেয়েছে। নুসান তাসিমের মতে, তার সাফল্য অর্জনের পেছনে রয়েছে কঠোর পরিশ্রম, উদ্যম ও পেশাদারি মনোভাব। ছোটবেলা থেকেই নুসান অভিনেতা সালমান শাহর বিশাল ভক্ত। শৈশবের প্রিয় নায়কের প্রাণোচ্ছলতা এবং অন্যান্য বিষয় নুসান তাসিমকে মন্ত্রমুগ্ধ করেছে এবং তাকে ভাবিয়েছে, সে যদি একদিন তারকা হতে পারে, তাহলে কেমন হবে!
কেউ যদি সত্যিকার অর্থেই প্রতিভাবান হয়, তাহলে তা সর্বসম্মুখে আসা সময়ের ব্যাপার মাত্র। নুসান তাসিমের তারকা হওয়ার অদম্য ইচ্ছা লাইকিতে পরিচিতি লাভের মধ্য দিয়ে তার পথচলা। আরও অনেকের মতো নুসান তাসিমও সাড়াজাগানো সংক্ষিপ্ত-ভিডিও প্ল্যাটফর্মে তার সৃজনশীল প্রতিভা তুলে ধরল এবং খুব কম সময়ের মধ্যে তার কনটেন্ট তৈরির অসাধারণ ক্ষমতা লাইকি ব্যবহারকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করল। এরপর নুসানের অন্যদের পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতে আর বেশি সময় লাগেনি। স্বল্প সময়ে সে তৈরি করে ফেলেছে বিপুলসংখ্যক ফ্যান ও ফলোয়ার।
এ নিয়ে নুসান তাসিম জানায়, ‘আমার ফলোয়ারদের কাছ থেকে পাওয়া নিঃশর্ত ভালোবাসা এবং সম্প্রতি অর্জিত স্বীকৃতিটি আমাকে বেশ অনুপ্রাণিত করেছে।’ তার মতে, ‘যা শুধু সময় কাটানোর বিষয় হিসেবে শুরু হয়েছিল, তা শিগগিরই ভালো লাগায় পরিণত হয়। আমি খেয়াল করলাম যে আমি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ব্যবহারকারীকে প্রভাবিত করতে পারছি, বিশেষ করে যাঁদের বয়স ১৮-২৫ বছর। তাঁদের জন্য এখন আমাকে খুব দায়িত্বের সঙ্গে কনটেন্ট তৈরি করতে হয়।’
নুসান তাসিম বিনোদনমূলক এবং সামাজিক সচেতনতাবিষয়ক কনটেন্ট তৈরিতে বিশেষ দক্ষ। শালীনতা বজায় রেখে কনটেন্ট তৈরির জন্য সে নিজেকে দায়বদ্ধ মনে করেন। কারণ, এখন অনেক তরুণেই উদাহরণ হিসেবে দেখছে। নুসান বলে, ‘সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বর্তমানের থাকা ট্রেন্ড এবং সামাজিক খবরাখবর সম্পর্কে আমি নিয়মিত খোঁজখবর রাখি। আমার গবেষণার ওপর ভিত্তি করে, আমি কিছু ভালো কনটেন্ট স্ক্রিপ্ট তৈরি করেছি, যা আশা করি আমার দর্শকদের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করবে। আমার ফলোয়ার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি যে সৃজনশীল এবং বিনোদনমূলক কনটেন্ট তৈরি করি, তা নিয়ে আরও বেশি দায়িত্বশীল হওয়ার ব্যাপারে আমি সচেতন এবং যত্নশীল হয়ে উঠছি, কারণ তাদের জন্য আমি একজন ভালো রোল মডেল হতে চাই।’ নুসান কেবল দায়িত্বশীল কনটেন্ট বানানোর ব্যাপারেই সচেতন নয়, ব্যবহারকারীদের দেখার অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখে সে গুণগত মানসম্পন্ন কনটেন্ট তৈরির ব্যাপারেও বিশেষ মনোযোগী। মানসম্পন্ন ভিডিও নিশ্চিত করার লক্ষ্যে লাইকি থেকে যে আয় হয়, তা দিয়ে নুসান নিয়মিত নতুন সরঞ্জাম কিনে থাকে।
মানুষের চিন্তা ও কাজকে প্রভাবিত করার সুযোগকে নুসান মূল্যবান মনে করে। ‘সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারের সময় আমরা সবাই নিশ্চিন্ত থাকতে চাই। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমরা এ সময় কিছু শিখতে পারি না।’ বলল নুসান। আর এ জন্যই সে তরুণ দর্শকদের জন্য ফলপ্রসূ হবে এমন ইতিবাচক কিছু তার ভিডিওতে তুলে ধরে।
লাইকির কঠোর কনটেন্ট মডারেশন এবং নিয়ন্ত্রণ গাইডলাইনের কারণে নুসান লাইকিকে অন্যান্য প্ল্যাটফর্মের ওপর প্রাধান্য দিয়ে থাকে। সে বলে, ‘আপনি যখন এমন একটি প্ল্যাটফর্মে সময় কাটাচ্ছেন, যেখানে ক্ষতিকর কনটেন্টের জন্য কোনো ফিল্টার নেই, তখন খুব সহজেই আপনি বিভ্রান্ত হতে পারেন এবং নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলতে পারেন। এদিক থেকে আমি লাইকিকে বেশ উপযুক্ত বলে মনে করি। লাইকি কনটেন্ট নির্মাতাদের আপলোড করা কনটেন্ট কঠোরভাবে মনিটর করে এবং তাদের কমিউনিটি গাইডলাইনের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ কনটেন্টগুলো মুছে দেয়। এর পাশাপাশি লাইকি কনটেন্ট নির্মাতাদের ভবিষ্যতে এমন কোনো আপলোড থেকে বিরত থাকার জন্য সতর্ক করে। আর এ কারণেই আমি একজন লাইকার হিসেবে গর্বিত।
বর্তমানে নুসান তাসিম একাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। তার লক্ষ্য ভবিষ্যতে অভিনেতা হিসেবে ক্যারিয়ার গড়া। কনটেন্ট নির্মাণে আগ্রহী ব্যক্তিদের জন্য নুসানের পরামর্শ হচ্ছে, ‘ইতিবাচক থাকুন। সমাজের উপকারে আসে এমন কিছু তৈরি করুন। কেবল ভালোবাসার মাধ্যমেই ভালোবাসা অর্জন করা যায়।
সৌজন্যে:প্রথম আলো
(সাইবারবার্তা.কম/এনটি/আইআই ২২ ই এপ্রিল ২০২১)