নিজস্ব প্রতিবেদক, সাইবারবার্তা: বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তির নাম মেধাবী তরুণ জনগোষ্ঠী, তারা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। তাদের ওপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠবে জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল সাম্য সমাজ, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা, বলেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, গত ১৩ বছরের ডিজিটাল রূপান্তরের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে অনুকরণীয় হয়েছে। প্রযুক্তিতে ৩২৪ বছরের পশ্চাদপদতা অতিক্রম করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সক্ষমতা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ এক বিস্ময়ের নাম বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী আজ কক্সবাজার জেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনলাইনে যুক্ত থেকে রুরাল ই-কমার্স স্ট্যান্ডিং কমিটি অভ্ ই-ক্যাব, মার্কেটিং এন্ড সোস্যাল কমিট অভ্ ই-ক্যাব, একশপ এবং কক্সবাজার ইয়ুথ এন্টারপ্রেনার্স ক্লাবের যৌথ উদ্যোগে গ্রামীণ উদ্যোক্তা উন্নয়ন, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা শীর্ষক দুদিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মেধা ও সৃজনশীলতাকে ডিজিটাল যুগের প্রধান উপাদান হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ডিজিটাল দক্ষতা অর্জন ছাড়া আগামী দিনের পৃথিবীতে টিকে থাকা অসম্ভব। শিক্ষিত জনগোষ্ঠীতো বটেই একজন কৃষক, দিনমজুর বা মুদি দোকানীর জন্যও এই দক্ষতা অর্জন করা অপরিহার্য। তিনি বলেন, ডিজিটাল দক্ষতা মানে কম্পিউটার প্রকৌশলী কিংবা বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার নেই কিন্তু প্রত্যেককেই অন্তত ডিজিটাল যন্ত্র ব্যবহার জানতে হবে। নিজেদের তৈরি করার জন্য প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, নতুন প্রজন্ম ডিজিটাল বাংলাদেশের বড় সৈনিক ।
তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমরা যখন তরুণ ছিলাম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গবন্ধুর ডাকে যুদ্ধ করেছি, তোমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে যুদ্ধ চালিয়ে যাও, তোমরা বিজয়ী হবে, তোমাদের ওপর ভিত্তি করেই প্রতিষ্ঠা লাভ করবে ডিজিটাল সাম্য সমাজ।’ তিনি বলেন, সরকার প্রযুক্তির লেটেস্ট ভার্সন ফাইভ-জি চালু করতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, কোভিডকালে শিক্ষার্থীদের অনলাইন পাঠ গ্রহণ নিশ্চিত করতে আমরা দেশের প্রায় ৯৮ ভাগ এলাকায় মোবাইল সংযোগ থ্রি-জি থেকে ফোর-জিতে উন্নীত করেছি। ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রপুরুষ মোস্তাফা জব্বার বলেন, ইন্টারনেট সহজলভ্য করার পাশাপাশি সরকার ডিজিটাল ডিভাইস সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী মূল্য নিশ্চিত করতে দেশে স্মার্ট ফোন কারখানা গড়ে তুলতে বিনিয়োগকারীদের প্রণোদনাসহ বিভিন্নভাবে উৎসাহিত করে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশে ১৪টি মোবাইল কারখানা গড়ে উঠেছে। এইসব কারখানা থেকে উৎপাদিত মোবাইল ফোন দেশের চাহিদার প্রায় শতকরা ৬৩ ভাগ পূরণ করছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। এসব যন্ত্র বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে বলে মন্ত্রী জানান। ২০০৮ সালে যেখানে আট লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিলো সেটি ১১ কোটিতে উন্নীত হয়েছে। ২০০৮ সালে ৮ জিবিপিএস ব্যান্ডউইদথ এর ব্যবহার এখন ৩ হাজার জিবিপিএস এ উন্নীত হয়েছে।
কক্সবাজার চেম্বার অভ্ কমার্স-এর সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো: মামুনুর রশীদ, রুরাল ই-কমার্স স্ট্যান্ডিং কমিটি অভ্ ই-ক্যাবের সহ-সভাপতি জাহিদুজ্জামান ফারুক, কক্সবাজার ইয়থ ইন্টারপ্রেনার্স ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা লিটন দেবনাথ প্রমুখ বক্তৃতা করেন। এটুআই এর ই – কমার্স প্রধান রেজওয়ানুল হক জামি অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক ইন্টারনেটে ক্ষতিকর সাইট বন্ধসহ ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নে ডিজিটাল সংযুক্তি সম্প্রসারণে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর ভূমিকাকে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা বলে উল্লেখ করেন।
(সাইবারবার্তা.কম/আইআই/২০ নভেম্বর ২০২১)