নিজস্ব প্রতিবেদক, সাইবারবার্তা: কিশোরী ও যুব নারীদের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দক্ষ ও যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলা এবং ভবিষ্যত কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) ইন্টারন্যাশনাল গার্লস ইন আইসিটি ডে উপলক্ষ্যে একটি অনলাইন আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ-এর বাস্তবায়নাধীন ও ইউএনডিপি এর সহায়তায় পরিচালিত এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) প্রোগ্রাম, গ্রামীণফোন এবং প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ যৌথভাবে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর অর্লা অ্যালিসিয়া মারফি এবং গ্রামীণফোনের চিফ হিউম্যান রিসোর্স অফিসার সৈয়দ তানভীর হোসেন যুক্ত ছিলেন।
মেয়েদের প্রযুক্তিগত ক্যারিয়ারের সুযোগগুলোর প্রচার ও প্রযুক্তিতে মেয়েদের অনুপ্রাণিত করার জন্য আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন (আইটিইউ)-এর নেতৃত্বে মূল অংশীদার এবং সহযোগীদের সঙ্গে নিয়ে সারাবিশ্বের ১৭০টি দেশে ‘গার্লস ইন আইসিটি ডে-২০২১’ পালিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশেও আইসিটি খাতে নারীদের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করতে, আইসিটি খাতে নারীদের এগিয়ে চলায় সংকট ও সম্ভাবনাগুলো চিহ্নিত করতে দিবসটি পালন করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘ক্যারিয়ারের সুযোগ তৈরি এবং নিরাপদ অনলাইন বিশ্ব বিনির্মাণে আইসিটি সেক্টরে কিশোরী ও যুব নারীদের ক্ষমতায়ন ও অন্তর্ভুক্তকরণ।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন, সরকারি-বেসরকারি পর্যায় এবং একাডেমিয়া একত্রিত হয়ে কাজ করতে পারলেই গার্লস ইন আইসিটি ডে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে যখন ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প ঘোষণা দেন তখন আইসিটিতে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল খুবই কম। তখন পুরো আইসিটি শিল্পটাই ছিল মাত্র ২৬ মিলিয়ন ডলারের। সেই প্রেক্ষাপটে ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় আইসিটি পলিসির ঘোষণা দেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে যেসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হয়েছে এবং হচ্ছে তার পুরোটাই ওই পলিসিতে টাইমফ্রেমসহ নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। সেখানেও পার্টনারশিপের বিষয়টি চমৎকারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানান আইসিটি প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, তৃণমূল পর্যায়ের নারীদেরকে তথ্যপ্রযুক্তির আওতায় নিয়ে আসতে যেমন কাজ করেছি তেমনি মূলধারার উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থায়ও বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত বিষয়ের উপর গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে বিজ্ঞানের পাশাপাশি প্রোগ্রামিং ও কোডিং শিক্ষাকে সমানভাবে গুরুত্ব দিয়ে শিখাতে হবে।
অর্লা অ্যালিসিয়া মারফি বলেন, বর্তমান সমাজের প্রতিটি পর্যায়ে আইসিটির বিশাল প্রভাব রয়েছে। আইসিটি সেক্টরে নারীদের এগিয়ে আসায় অনুপ্রাণিত করতে ইন্টারনেটে নারীদের হয়রানি কমাতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। এছাড়া নারীদের তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রশিক্ষণ বিষয়ে আরো জোর দিতে হবে।
সৈয়দ তানভীর হোসেন বলেন, বিশ্বজুড়ে শিক্ষায় একটা লিঙ্গগত বৈষম্য রয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তিতে নারীদের প্রশিক্ষিত করে তোলা শুধু আজকের জন্য দরকার তা নয় ভবিষ্যতের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে একে বিবেচনা করতে হবে। আজকে আমরা যে পদক্ষেপগুলো নেব সেগুলোই আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। গ্রামীণফোনে আমরা যে কাজটি করছি তা হলো একটা কালচার তৈরিতে সমন্নিতভাবে কাজ করছি যাতে নারীরা এখানে কাজ করতে নিরাপদ মনে করে ও নারী-বান্ধব পলিসি তৈরি করছি। এছাড়া আমরা আমাদের নারী কর্মীদের দক্ষতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। যাতে তারা দ্রুত পরিবর্তিত নতুন নতুন ইনোভেশনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারে।
এছাড়া আলোচনায় মেয়েদের ডিজিটাল অন্তর্ভূক্তিকে আরও ত্বরান্বিত করার সুযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে তাদের যথাযথ অংশগ্রহণ ও পরিবেশ তৈরির পাশাপাশি দক্ষতা উন্নয়ন ও শিক্ষার্জন শেষে কর্মস্থলে যোগদানের অনুপ্রাণিত করতে নীতি, আইসিটি অবকাঠামো, সক্ষমতা বিকাশের উদ্যোগ গ্রহণের উপর গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডক্টর লাফিফা জামালের সঞ্চালনায় অনলাইন আলোচনায় অন্যান্যদের মধ্যে যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের (ব্যাকো) সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ, স্টার্টআপ বাংলাদেশের সিইও টিনা এফ জাবীন, ব্র্যাকের সিনিয়র ডিরেক্টর কে এ এম মোর্শেদ, কিশোর আলো প্রতিনিধি সাফা জারিন শুকন্যা, যুব প্রতিনিধি তুসাব্বের মুনতাহা, আসাদুজ্জামান আসাদ ও গণমাধ্যমকর্মীরা। -বিজ্ঞপ্তি
(সাইবারবার্তা/এমএ/২২এপ্রিল২০২১)