:: সাইবারবার্তা ডেস্ক :: ক্রমেই বাড়ছে গেমস লাইভ স্ট্রিমিংয়ের জনপ্রিয়তা। ইউটিউব, টুইচ বা ফেসবুক গেমিংয়ের মতো প্লাটফর্মে এখন কোটি কোটি মানুষ অন্যদের গেম খেলা উপভোগ করছে লাইভ দেখে। সাধারণ গেমপ্রেমী থেকে শুরু করে পেশাদার ই-স্পোর্টস খেলোয়াড়রাও এ ধারা অনুসরণ করছে। ফলে বিশ্বব্যাপী একটি বড় বাজার তৈরি করেছে গেমস লাইভ স্ট্রিমিং।
জার্মানভিত্তিক অনলাইন প্লাটফর্ম স্ট্যাটিস্টা বলছে, বিশ্বজুড়ে গেমস লাইভ স্ট্রিমিং বাজার দ্রুত বাড়ছে। বিশ্লেষকদের ধারণা, ২০২৫ সালের মধ্যে এ খাত থেকে বিশ্বব্যাপী আয় দাঁড়াবে প্রায় দেড় হাজার কোটি ডলারের বেশি। আগামী চার বছরের মধ্যে লাইভে গেম স্ট্রিমিং দেখা ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৮০ কোটি ছাড়াবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
গেমসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন দর্শক শুধু গেম দেখেই আনন্দ পায় না বরং সরাসরি প্রতিক্রিয়া ও প্রিয় স্ট্রিমারের সঙ্গে আলাপচারিতাও করতে চায়। যা একসময় ছিল কিছু মানুষের শখ, তাই এখন হয়ে উঠেছে বিশ্বব্যাপী এক নতুন ধারা, অনেকের জন্য পেশাও।
স্ট্যাটিস্টা বলছে, চলতি বছর বিশ্বব্যাপী গেমস লাইভ স্ট্রিমিং বাজারে সবচেয়ে বেশি আয় করবে চীন। দেশটি এ খাত থেকে আয় করবে প্রায় ৩০০ কোটি ডলার। বিশ্বজুড়ে প্রতিযোগিতামূলক গেমিং ও ইনফ্লুয়েন্সার সংস্কৃতির জনপ্রিয়তার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারটির প্রবৃদ্ধি ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে।
গেম লাইভ স্ট্রিমিংয়ের সংজ্ঞা দিতে দিয়ে সংস্থাটি বলছে, ভিডিও গেম ও এর সঙ্গে মন্তব্য বা প্রতিক্রিয়া লাইভ সম্প্রচার করা, যা অনলাইন দর্শকের কাছে সরাসরি পৌঁছবে। অনুদান, সাবস্ক্রিপশন ও বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেও স্ট্রিমাররা অর্থ উপার্জন করতে পারছে।
ই-স্পোর্টস গেমিং যেমন ফুটবল, বাস্কেটবল, শুটিং বা স্ট্র্যাটেজি গেমস; আবার ব্যাটেল রয়াল গেমস যেমন ফোর্টনাইট, পাবজি, কল অব ডিউটি কিংবা মাইনক্র্যাফট, রেড ডেড রিডেম্পশন ২ ও গড অব ওয়ারের মতো অ্যাডভেঞ্চার এবং ওপেন-ওয়ার্ল্ড গেমগুলো লাইভ স্ট্রিমিংয়ে বেশি জনপ্রিয়। এর মাধ্যমে এখন বিশ্বব্যাপী টুর্নামেন্ট ও ইভেন্ট দেখা যায় ঘরে বসেই। কারণ এখানে ই-স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে শুরু করে ছোটখাটো কমিউনিটি গেমিং কনটেস্টসহ সবই সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে। লাইভ স্ট্রিমিং গেম শুধু গেম খেলার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, এটি এখন একটি পুরো বিনোদন শিল্পে রূপ নিয়েছে।
কর্মী ছাঁটাই ও স্টুডিও বন্ধ হওয়াসহ নানা কারণে ২০২৪ সালে কঠিন সময় পার করেছে ভিডিও গেম ইন্ডাস্ট্রি। গত দুই বছর আশানুরূপ ছিল না বাজারের আয়। তবে এ প্রবণতা ভেঙে চলতি বছর খাতটি শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি দেখবে বলে আশাবাদী প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা। মেটাপ্লে ও ভিডিও গেম গবেষণা গ্রুপ ডিএফসি ইন্টেলিজেন্সের দুটি আলাদা প্রতিবেদন বলছে, ২০২৫ সালে আবারো ঘুরে দাঁড়াবে গেমিং শিল্প। নতুন ভিডিও গেম ও কনসোলের কারণে রেকর্ড আয় করবে খাতটি। এরসঙ্গে বাড়বে লাইভ স্ট্রিমিংয়ের চাহিদা, সম্প্রসারণ হবে বাজার।
বিশ্বজুড়ে দ্রুতগতির ফাইভজি ইন্টারনেট ব্যবহারের হার বাড়লে লাইভ স্ট্রিমিং আরো দ্রুত হবে, ল্যাগ কমবে ও দর্শকের জন্য উন্নত অভিজ্ঞতা নিশ্চিত হবে।