:: প্রকৌশলী মো. মুশফিকুর রহমান ::
বর্তমান বিশ্বে আমাদের শিশুদের বহির্বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য ইন্টারনেট এবং ডিজিটাল ডিভাইসগুলোর ব্যবহার একরকম অপরিহার্য। এসব সুবিধা তাদেরকে তথ্যের বিস্তৃত ভাণ্ডারে প্রবেশের সুযোগ করে দেয়। পাশাপাশি তাদের পরিবার, আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুদের সাথে সামাজিকভাবে সংযুক্ত রাখে। তবে, তিক্ত সত্য হলো ইন্টারনেট ব্যবহার করা যেমন একটি আশীর্বাদ, এর নানা বিপজ্জনক বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। তাই প্রতিটি অভিভাবকের দায়িত্ব তাদের শিশুদের এসব ডিজিটাল ডিভাইস এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের নিরাপত্তা এবং নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা।
‘সাইবার সিকিউরিটি’ এবং ‘প্যারেন্টাল কন্ট্রোল’ দুটি বিষয়, যা আধুনিক বিশ্বে অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে পরিচয় করা হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তি ও ডিজিটাল উপকরণ এখন প্রতিদিনের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ হিসেবে পরিচিত। তবে এই প্রযুক্তি ও উপকরণ ব্যবহারের সময় অবশ্যই কিছু সিকিউরিটি এবং নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সমস্যার সমাধান করা প্রয়োজন।
শিশুরা অনলাইনে কাজ করতে সক্ষম হলে তাদের প্রতিটি সময়ে পরিবারের একজন বুদ্ধিমান সদস্যের নির্দেশনা ও নিয়ন্ত্রণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাবা-মা নিজেদের প্রতি সচেতন হতে হবে এবং তাদের সন্তানের কাছে সাইবার নিরাপত্তা এবং ইন্টারনেট ব্যবহার সম্পর্কে জ্ঞান বিস্তার করতে হবে।
আপনার শিশুদের সাথে অনলাইন গোপনীয়তা নিয়ে আলোচনা করার এটিই উত্তম সময়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চার শিশুর মধ্যে তিনজনের একটি স্মার্টফোন ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। ইউকেতে, লাইব্রেরি অফ কংগ্রেস অনুসারে ৯ থেকে ১২ বছর বয়সী ৪৩ শতাংশের একটি সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল রয়েছে। ১৩ বছর বয়সের সীমা থাকা সত্ত্বেও তিনজনের মধ্যে একজন ফেসবুকে রয়েছেন। ফেসবুকের এক চতুর্থাংশ শিশু তাদের প্রোফাইলে গোপনীয়তা বিধিনিষেধ স্পর্শ করে না এবং তাদের মধ্যে এক পঞ্চমাংশ তাদের ঠিকানা এবং/অথবা ফোন নম্বর সর্বজনীনভাবে প্রদর্শন করে। ফেসবুক দাবি করে যে ফেসবুকে বয়সের সীমা থাকা মূল্যহীন যখন অ্যাকাউন্ট তৈরি করার জন্য শিশুরা তাদের বয়স সম্পর্কে মিথ্যা বলে।
এটি হচ্ছে শুধু ফেসবুকের তথ্য যা কি না বর্তমানে কিছুটা সেকেলের বিনোদন হিসেবে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে Snapchat, Tumblr, Vine, Instagram, এবং Kik সব কিশোর এবং প্রাক-কিশোরীদের মধ্যে জনপ্রিয়। সামনে কী হবে কে জানে?
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং গেমগুলো শিশুদের তথ্য সুরক্ষার (প্রাইভেসি) ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় হুমকি সৃষ্টি করে। কারণ তারা নিবন্ধনের সময় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে তথ্যের জন্য অনুরোধ করে। প্রোফাইলের তথ্য সামাজিক নেটওয়ার্ক দ্বারা লক্ষ্যযুক্ত বিজ্ঞাপন পরিবেশন করতে এবং সামগ্রীর সুপারিশ করতে ব্যবহার করা হয়। সেই তথ্য স্ক্যামার এবং শিকারীরা শিশুদের টার্গেট করতে ব্যবহার করতে পারে। এটি প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রেও ঘটে। কিন্তু শিশুদের বিষয়টি প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় অনেক বেশি স্পর্শকাতর।
লেখক: প্রকৌশলী মো. মুশফিকুর রহমান, ফিনটেক, ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন অ্যান্ড সাইবার সিকিউরিটি প্র্যাকটিশনার
–
আগামী পর্ব ২-এ থাকছে: ‘ইন্টারনেটে শিশুদের জন্য হুমকি এবং বিপজ্জনক কর্মকাণ্ড’
(সাইবারবার্তা.কম/৩০এপ্রিল২০২৩/এমআর/এমকে)