সাইবারবার্তা ডেস্ক: প্রস্তাবিত ডিজিটাল আইনের খসড়া তৈরি করে বিপাকে পড়েছে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক ই ইনসাফ (পিটিআই)। গণমাধ্যমকর্মী ও সাংবাদিকরা এ আইনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে মুক্ত বাকস্বাধীনতার জন্য আন্দোলনের ডাক দেওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তিকর অবস্থানে রয়েছে দেশটির সরকার।
দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইমরান খান সরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কন্টেন্টের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের চিন্তা করছে। তবে মূলধারার সাংবাদিকরা এ ধরনের বিধিনিষেধ আরোপের অনুমোদন দেওয়ার পক্ষে নয়; তারা বলছেন- ইতিমধ্যেই ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া মাত্রাতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে।
ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষক জ্যান আচাকজাই দ্য নিউজে লিখেছেন- তিনি ইমরান খানের প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলেন। সরকারের এ ধরনের নিয়ন্ত্রণ আরোপের কোন অধিকার রয়েছে কী এবং বাকস্বাধীনতার মতো সাংবিধানিক সুরক্ষা সংরক্ষণে আমাদের কতদূর যেতে হবে? বিকাশমান সাইবারস্পেসের সঙ্গে নতুন নতুন যেসব চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হচ্ছে সে বিষয়ে কি আমরা সচেতন?
পাকিস্তানকে অ্যানালগ সার্বভৌমত্ব থেকে ডিজিটাল সার্বভৌমত্বের দিকে যেতে হবে; যেখানে অরাজক সামগ্রি, সফটওয়্যার উন্নয়ন এবং কোম্পানির শক্তি নিয়ন্ত্রণ ও দিকনির্দেশনার বিষয় রয়েছে। দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনালের খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তান যে সমস্যার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে তা হচ্ছে দেশটি এখনো ডিজিটাল হুমকির চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে কৌশলগত একাত্মতা ঘোষণা করতে পারে নি।
ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষক আচাকযাই পরামর্শ দিয়েছেন, আমাদের গণমাধ্যম থেকে বিচারবিভাগ এবং নীতিনির্ধারকদের বোঝতে হবে আগের যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রত্নতাত্ত্বিক যুগের আইন ও নীতিমালা আকঁড়ে ধরে থাকার পরিবর্তে ডিজিটাল প্লাটফর্ম ও কন্টেন্ট এবং বাক স্বাধীনতার ওপর ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। বাক স্বাধীনতার বিষয়টি সবসময়ই খোলামেলা থাকে না এবং ইতিমধ্যে তা পশ্চিমা সমাজে সীমাবদ্ধ আকারে রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয় সম্প্রতি ঝড় তোলা মুক্ত বক্তব্য ও নৈরাজ্যিক বিষয়বস্তুর বিতর্কগুলো বোঝতে হবে। কারণ এর মাধ্যমেই বোঝা যাবে একটি রাজ্য কতদূর নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে এবং ভার্চুয়াল বিশ্বের বাস্তবিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাক স্বাধীনতার ওপর কতদূর সীমাবদ্ধতা আরোপ করা যাবে।
(সাইবারবার্তা.কম/আইআই/১৯ জুন ২০২১)