শুক্রবার, মার্চ ২৯ ২০২৪ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ - বসন্তকাল | ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সাইবার অপরাধের মধ্যে অনলাইনে হ্যাকিংয়ের ঘটনা সবচেয়ে বেশি:সিসিএ ফাউন্ডেশন

প্রতিবেদনটির বিস্তারিত তুলে ধরেন সিসিএ ফাউন্ডেশনের রিসার্চ সেলের আহ্বায়ক এবং ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক মনিরা নাজমী জাহান। গবেষণায় ২০১৯-২০ সালে ১৬৮ জনকে ১৮টি প্রশ্ন করা হয়।

 

সিসিএ ফাউন্ডেশনের গবেষণায় উঠে এসেছে, সাইবার অপরাধের ধরনের মধ্যে অনলাইনে হ্যাকিংয়ের ঘটনা সবচেয়ে বেশি, ২৮ দশমিক ৩১ শতাংশ। ২০১৮ সালে যা ছিল ১৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এ ছাড়া অনলাইনে পণ্য কিনে প্রতারিত হওয়ার ঘটনা বেড়েছে। সিসিএর আগের গবেষণায় এমন অপরাধ ছিল ৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ, এবার তা হয়েছে ১১ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। এটিএম কার্ডের তথ্য হ্যাকড নতুন অপরাধ হিসেবে যুক্ত হয়েছে। অনলাইনে যৌন হয়রানিমূলক বিষয়বস্তু ব্যবহার করে হয়রানির মাত্রা বেড়েছে। অপরাধের মাত্রাটি আগের ৬ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে এবার হয়েছে ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে অপপ্রচার কমেছে বলে গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

 

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, সাইবার অপরাধের ভুক্তভোগীদের ৮৬ দশমিক ৯০ শতাংশের বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। নারী ভুক্তভোগী ৫৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ এবং পুরুষ ৪৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ। ঢাকা বিভাগে ভুক্তভোগী সবচেয়ে বেশি।

 

গবেষণায় উঠে এসেছে ৬৪ দশমিক ২৯ শতাংশ মানুষ তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক আইন সম্পর্কে জানে। কিন্তু ৭৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ অভিযোগ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে যায়নি। এ ছাড়া ৭২ দশমিক ২২ শতাংশ ভুক্তভোগী অভিযোগ করে প্রত্যাশা অনুযায়ী ফল পাননি বলে জানিয়েছেন।

 

সিসিএ ফাউন্ডেশন সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সাইবার স্কোয়াড গঠন, ই-কমার্স নীতিমালা ও রাজনৈতিক জনশক্তিকে সচেতনতামূলক কাজে নিয়োজিত করাসহ ৯ দফা সুপারিশ তুলে ধরে গবেষণা প্রতিবেদনে।

 

ওয়েবিনারে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার সুস্থ সাইবার প্রজন্ম গড়ে তুলতে অভিভাবকদের দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তৃণমূল থেকে অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে পুলিশের সক্ষমতা বাড়লেও সাইবার অপরাধের বিস্তার এখন গ্রামে পৌঁছে গেছে। প্রতিটি থানায় অপরাধ শনাক্তে প্রযুক্তির ব্যবহারও বাড়াতে চেষ্টা করা হচ্ছে।

 

সাইবার অপরাধের শিকার হয়ে মানুষ পুলিশের কাছে কেন যেতে চায় না এবং গেলেও কেন প্রতিকার পাচ্ছে না, তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপারসন খন্দকার ফারজানা রহমান।

 

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ফরেনসিক) মো. মোস্তফা কামাল রাশেদ বলেন, সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রণে ২০১৬ সাল থেকে পুলিশের প্রতিটি বিভাগ কাজ করছে। শিশুদের মধ্যে সাইবার অপরাধপ্রবণতা বাড়ছে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পাশাপাশি অনলাইনে কেনাকাটা এবং গেমিং অ্যাপসের মাধ্যমে সাইবার অপরাধ বেড়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

 

সিসিএ ফাউন্ডেশনের সভাপতি কাজী মুস্তাফিজের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে আরও অংশ নেন প্রথম আলোর যুব কর্মসূচি বিভাগের প্রধান মুনির হাসান, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী আনিছ, বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরামের মহাসচিব মোহাম্মদ আবদুল হক ও শিশুদের সাইবার সুরক্ষাবিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা প্রটেক্ট আস কিডসের বাংলাদেশ প্রতিনিধি শারমিন নাহার।

 

(সাইবারবার্তা.কম/আইআই/১৯ জুন ২০২১)

শেয়ার করুন

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
আরও পড়ুন

নতুন প্রকাশ