সাইবারবার্তা ডেস্ক: দেশে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) অনুমতি ছাড়াই বিনোদনমূলক কাজে গ্রিন জোনে ১০০ ফুটের কম উচ্চতায় সর্বোচ্চ পাঁচ কেজি ওজনের ড্রোন ওড়ানো যাবে। এর বেশি ওজন ও উচ্চতার ক্ষেত্রে অনুমতি নিতে হবে।
মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ‘অনূর্ধ্ব পাঁচ কেজির (Payload-সহ) অথবা ১০০ ফুটের কম উচ্চতার উড্ডয়ন সক্ষম ড্রোন বিনোদন হিসেবে গ্রিন জোনে অনুমতি ব্যতিত উড্ডয়ন করা যাবে’।
ইতোমধ্যে ‘ড্রোন নিবন্ধন ও উড্ডয়ন নীতিমালা, ২০২০’ প্রণয়ন করা হয়েছে। নীতিমালার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে বেবিচক সম্প্রতি একটি ভার্চুয়াল কর্মশালার আয়োজন করে।
এতে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান জানান, দেশের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থেই ড্রোন ব্যবহার অপরিহার্য এবং সুরক্ষা, নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা নিশ্চিত করে এর ব্যবহার সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি যুগোপযোগী নীতিমালা অত্যন্ত জরুরি। এই নীতিমালা, বাংলাদেশে ড্রোন পরিচালনা, অনুমোদন, নিবন্ধীকরণ, আমদানি ও অন্যান্য ড্রোন সংক্রান্ত বিষয়কে আরও সহজতর করবে এবং বাংলাদেশের জনগণ এর সুফল পাবেন।
এ নীতিমালার আলোকে ড্রোনের আমদানি, তৈরি এবং সংযোজন, নিবন্ধন, শ্রেণি বিভাগ, উড্ডয়ন এলাকা, ড্রোন উড্ডয়নের শর্তাবলী, উড্ডয়নের অনুমতি প্রাপ্তি, চালকের প্রত্যায়নসহ অননুমোদিত ড্রোন পরিচালনার শাস্তির বিষয়ে আলোকপাত করেন বেবিচকের পরিচালক (ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড, রেগুলেশন্স এন্ড ইন্টারন্যাশনাল এ্যাফেয়ার্স) গ্রুপ ক্যাপ্টেন ইমরানুর রহমান।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ড্রোনের জন্য বেবিচকের কাছ থেকে নিবন্ধন ও পরিচিতি নম্বর নিতে পারে। নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শিগগিরই বেবিচকের ওয়েবসাইটে (caab.gov.bd) দেওয়া হবে।
ড্রোন উড্ডয়নের এলাকাকে ‘গ্রিন’, ‘ইয়েলো’ এবং ‘রেড’- এই তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। বিভিন্ন সংরক্ষিত এলাকা, সামরিক এলাকা এবং জনসমাগম ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাকে ইয়েলো জোনে রাখা হয়েছে। রেড জোনে রাখা হয়েছে নিষিদ্ধ এলাকা, বিপজ্জনক এলাকা, বিমানবন্দর এলাকা, কেপিআই এইসব জায়গাকে।
এই দুই জোনের অন্তর্ভুক্ত নয় ১০০ ফুট উচ্চতাসম্পন্ন গ্রিন জোনে অনুমতি ছাড়া ড্রোন ওড়ানো যাবে। তবে ড্রোন যদি ১০০ ফুটের বেশি উড্ডয়ন করাতে হয় সেক্ষেত্রে বেবিচক থেকে অনুমতি নিতে হবে।
ব্যবহারের জন্য অনুমতি দিতে বেবিচক ড্রোনকে চারটি শ্রেণি করেছে।
‘ক’ শ্রেণি হচ্ছে গ্রুপ, পার্সোনাল ফটোগ্রাফি, খেলনা বা সৌখিনতাবশ চিত্তবিনোদনের জন্য ব্যবহৃত ড্রোন; শিক্ষা ও গবেষণার কাজে অবাণিজ্যিক কাজে সরকারি, বেসরকারি সংস্থা বা কোনো ব্যক্তির ব্যবহৃত ড্রোন ‘খ’ শ্রেণি; জরিপ, স্থিরচিত্র, চলচ্চিত্র, পণ্য পরিবহণের মতো বাণিজ্যিক ও পেশাদার কাজের জন্য ‘গ’ শ্রেণি এবং রাষ্ট্রীয় ও সামরিক প্রয়োজনে ব্যবহৃত ড্রোন হবে ‘ঘ’ শ্রেণির।
উড্ডয়নে শর্তাবলী:
# ঘ ও ক শ্রেণি ছাড়া সব ড্রোন নিবন্ধন করতে হবে;
# ক, খ, গ শ্রেণির ড্রোন বিশেষ অনুমতি ছাড়া রাতে ওডানো যাবে না।
# বিশেষ অনুমতি ছাড়া ভিভিআইপির সভা-সমাবেশের তিনদিন আগে থেকে দুই কিলোমিটারের মধ্যে ‘ঘ’ শ্রেণি ছাড়া ড্রোন ওড়ানো নিষিদ্ধ থাকবে।
# সম্ভাব্য জটিলতা এড়াতে ‘গ্রিন জোন’ ছাড়া অন্য যেকোনো জোনে ড্রোন ওড়ানোর আগে স্থানীয় থানায় লিখিতভাবে জানাতে হবে।
# খোলা স্থানে, সভা/সমাবেশ ও জাতীয় আন্তর্জাতিক ইভেন্ট চলাকালে এ স্থানের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে ড্রোন ওড়াতে ‘ঘ’ শেণি ছাড়া সব ড্রোনের উড্ডয়ন অনুমতি ছাড়া নিষিদ্ধ থাকবে।
# ক’ শ্রেণি ব্যতীত অন্য যেকোনো ড্রোন চালকের বয়স ১৮ বছর ও শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি বা সমমানের পাস হতে হবে।
সৌজন্যেঃ সময় নিউজ
(সাইবারবার্তা.কম/আরআই/জেডআই/২৫মার্চ,২০২১)