Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the wordpress-seo domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/cyberbar42/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the soledad domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/cyberbar42/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114
স্যোশাল মিডিয়ায় আধিপত্য বিস্তারে ‘অ্যাওয়ার্ডের ফাঁদে’ কিশোর-তরুণরা - CyberBarta.com
  রবিবার, ডিসেম্বর ২২ ২০২৪ | ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - শীতকাল | ১৯শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

স্যোশাল মিডিয়ায় আধিপত্য বিস্তারে ‘অ্যাওয়ার্ডের ফাঁদে’ কিশোর-তরুণরা

নিজস্ব প্রতিবেদক,সাইবারবার্তা: তবে এ স্বীকৃতি কোনো অর্জন কিংবা সাফল্যের নয়! বরং হাজার খানেক টাকার বিনিময়েরই মিলছে ভারতের একটি সংস্থা থেকে নাম সর্বস্ব এ পদক। ফেসবুকে নিজেদের আধিপত্য ও প্রভাব বিস্তর করার উদ্দেশে কিশোর ও তরুণরা সেই পাঁতা ফাঁদে পা দিয়ে লুফে নিচ্ছেন এসব ভুয়া স্বীকৃতি।

 

রাজিব (ছদ্মনাম) ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন যে, দেশে তিনি একাই ভারতের এই পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। এতে তিনি আনন্দিত, উচ্চাকাঙ্ক্ষিত ও গর্বিতও বটে। সেই সূত্রে জাতীয় দৈনিকের এক সাংবাদিককে বলেন, ‘দেশের সুনাম বয়ে আনার অগ্রযাত্রায় যেন তার পুরস্কারে নির্বাচিত হওয়ার খবর করে দেন’!, তিনি একজন সমাজ সেবক ও স্বেচ্ছাসেবী। যেই কথা সেই কাজ সাংবাদিক প্রস্তুত তার খবর করে দিতে। এরই মধ্যে দুঃসংবাদ আসে, দেশের আরও এক তরুণের দাবি তিনিও পেয়েছেন মানবিক এই পুরস্কার।

 

‘ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ড’ সংস্থা ‘ইন্ডিয়া এক্সিলেন্স এ্যাওয়ার্ড’ দিয়ে থাকে। এই পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হওয়া জিহাদ (ছদ্মনাম) এর আগ্রহের শেষ নেই, তার দাবি তিনি একাই নির্বাচিত হয়েছেন মানবিক এই পুরস্কারের জন্য। গত বছর আবেদন করে এ বছর পেয়েছেন পুরস্কার। মুঠোফোনে তিনি বলেন, এই পুরস্কার আনতে আমার সাড়ে তিন হাজার টাকা খরচ হয়েছে, এটা বাণিজ্যিক পদক নয়, আমার মানবিক কাজের স্বীকৃতি। আপনাদের যাচাইয়ের প্রয়োজন হলে ভারতে পুরস্কার দেয়া কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেন।

 

রাকিব (ছদ্মনাম) এ মাসেই আবেদন করেন ভারতের পুরস্কারের জন্য, আবেদনের সপ্তাহ না পেরোতে ইমেইল আসে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন। তার এই অর্জন কুরিয়ারের মাধ্যমে চলে যাবে বাংলাদেশে। টাকা নিতে হলে ব্যাংক একাউন্টে পাঠাতে হবে সাত হাজার টাকা। অনুসন্ধান করে জানা যায়, ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ড নামের এই বেসরকারি সংস্থা ‘ইন্ডিয়া এক্সিলেন্স এ্যাওর্য়াড’ এর জন্য সাত হাজার টাকা নিয়ে থাকেন, টাকা পরিশোধ করলে পুরস্কার চলে আসে কুরিয়ারের মাধ্যমে। পুরস্কার হিসেবে থাকে ক্রেস্ট, সনদ, মেডেল, চাবির রিংসহ অত্যাধুনিক আকর্ষণীয় কিছু জিনিস।

 

রাকিব জানান, যে কেউই আবেদন করতে পারেন এই পুরস্কারের জন্য, আমিও করি। আমাকে তারা আশ্বাস দেন এটা শুধু বাংলাদেশ থেকে আমি একাই পাবো। কিন্তু পরবর্তিতে দেখা যায় আরও বেশ কয়েকজন তরুণ এটা পাচ্ছেন। তিনি দাবি করেন, মূলত টাকা দিলেই মিলে এই পুরস্কার, সেজন্য আমি নেয়নি।  

 

জাতীয় দৈনিকের ফিচার পাতা খুলতেই চোখে পরে চমকপ্রদ শিরোনাম ‘ভারত থেকে পুরস্কার পাচ্ছেন এই তরুণ’। কৌতূহল থেকেই জানতে ইচ্ছে হয় কে এই তরুণ? দেশে কী কাজ করেন তিনি?। পত্রিকার পাতায় এই তরুণের পুরস্কার প্রাপ্তির কথা লেখা থাকলেও নেই তার কাজের সূত্র। এই তরুণের দাবি তিনি বাংলাদেশে হয়ে বিশ্বের ১৫টি দেশের সংগঠনের সাথে কাজ করেন, পড়াশোনা করেন ভারতে।

 

বাংলাদেশে তার কোনো কার্যক্রম চালু নেই, তবুও তিনি বাংলাদেশের হয়ে এ বছর নির্বাচিত হয়েছেন ভারতের শিক্ষা ও গবেষণা সংস্থার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিমূলক পুরস্কার আই.এস.আই-ই ইন্ডিয়া এক্সিলেন্স এ্যাওয়ার্ড-২০২১ এ। অনুসন্ধানে জানা যায়, তিনি যেই পুরস্কার পাচ্ছেন বলে দেশের জাতীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করে প্রচারণা চালিয়েছেন সেই পুরস্কারের জন্য সারা বছর আবেদন খোলা থাকে, যে কেউ চাইলে আবেদন করতে পারেন, নিতে পারেন ক্রেস্ট সনদসহ অন্যান্য সম্মাননা।

 

এবছর মাইন্ড স্প্ল্যাশ বাংলাদেশি এক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী এই তরুণ ২০৩০ সালের বিশ্বের শীর্ষ তরুণ ও যুবনেতা, ২০৩০ সালে নিউইয়র্কে একটি ক্যাম্পাইন নেতৃত্ব দিবেন তিনি।

 

গণমাধ্যমে চমকপ্রদ শিরোনাম হওয়া এই তরুণের সাথে যোগাযোগ করা হলে মুঠোফোনে তিনি বলেন, আমি আবেদন করার কিছুদিন পর পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হওয়ার ইমেইল পাই। এরপর যোগাযোগ করি বিভিন্ন সাংবাদিক ও ফিচার লেখকদের সাথে, আমি তাদের সাথে কথা বলি দেশের জন্য একটা প্রাপ্তি আছে কিছু করা যায় কীনা!। এদিকে জাতীয় দৈনিকে এক ফিচার লেখক জানান, আমাকে সবকিছু ইমেইল করেছিল এই ছেলে, আমি শুধু লিখে পত্রিকার ফিচার ইমেইলে লেখাটি পাঠিয়েছি!।    

 

কামাল হোসেন নামের এক স্বেচ্ছাসেবী তরুণ জানিয়েছেন, এশিয়ান এ্যাওয়ার্ড নামে এক পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হয়েছিলাম। কিন্তু টাকা দাবি করেন তারা। টাকা দেয়নি তাই পুরস্কারও পাইনি। পারভেজ হাসান নামের এক স্বেচ্ছাসেবক বলেন দেশের বেশিরভাগ পুরস্কার  এসব পদ্ধতেই আসে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও এমনি।

 

কাওসার আলম নামে আরেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠক বলেন ১০ বছর ধরে পাগলের মতো কাজ করে যাচ্ছি পদক তো দূরের কথা বিশেষ কোনো ব্যক্তিরা ধন্যবাদও দেয়নি। যারা মানুষের জন্য কাজ করে না তারাই পদক আর প্রচারণার পেছনে দৌড়ায়। যারা সত্যিকার অর্থে  মানুষের কল্যাণে কাজ করে তারা পদক আর প্রচারণার পেছনে ছুটে না!।

 

(সাইবারবার্তা.কম/আইআই/২৯ জুন ২০২১)

শেয়ার করুন

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
আরও পড়ুন

নতুন প্রকাশ