সাইবারবার্তা ডেস্ক: করোনা মহামারীতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই চাকরি হারানোর ঘটনা ঘটেছে। তবে সাইবার নিরাপত্তা খাতে বিশ্বে ৩১ লাখেরও বেশি পদ খালি রয়েছে। এগুলোর অধিকাংশই এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে। খবর আইএএনএস।
পেশাদার কর্মসংস্থান সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান মাইকেল পেজ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, করোনা মহামারীর কারণে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সাইবার অপরাধের মাত্রা ৬০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা খুবই উদ্বেগজনক। ‘দ্য হিউম্যানস অব সাইবার সিকিউরিটি’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত এশিয়ায় প্রায় দুই কোটির কাছাকাছি র্যানসমওয়্যার এবং ফিশিং অ্যাটাক করা হয়েছে, যার অনেকগুলোই করোনা বিষয়ক ছিল।
ব্যবসার বিস্তৃতির সঙ্গে সঙ্গে সাইবার সিকিউরিটিও একটি বড় বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অধিকাংশ ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে সাইবার সিকিউরিটির চর্চা নেই। এই কারণে এসব ক্ষেত্রে সাইবার হামলার প্রবণতাও বেশি থাকে। প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে সাইবার সিকিউরিটি খাতে, অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট সিকিউরিটি, ক্লাউড সিকিউরিটি রিস্ক ম্যানেজমেন্ট, থ্রেট ইন্টেলিজেন্স, ডাটা প্রাইভেসি ও সিকিউরিটি বিষয়ে ৪৩ শতাংশ ঘাটতি রয়েছে।
মাইকেল পেজ ইন্ডিয়ার পরিচালক ভার্সা বারোয়াহ বলেন, সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ার, সাইবার সিকিউরিটি অ্যানালিস্ট এবং সাইবার সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ারদের চহিদা বর্তমানে বেড়েই চলছে। তিনি বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে ভারতে সাইবার সিকিউরিটি খাতে ১৫ লাখের বেশি পদ খালি থাকবে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ২০১৯ সালে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সাইবার সিকিউরিটির বাজার মূল্য ছিল তিন হাজার ৪৫ কোটি ডলার। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২০ থেকে ২৫ সাল পর্যন্ত এ খাতে সম্মিলিত বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হার থাকবে ১৮ দশমিক ৩ শতাংশ।
২০২০ সালের সাইবার সিকিউরিটির হুমকিগুলো
ফিশিং ই-মেইলের পরিবর্তন: ফিশিং ই-মেইল সম্পর্কে বর্তমানে কম-বেশি সবাই সচেতন। তাই হ্যাকাররা আগের পদ্ধতিতে ফিশিং ই-মেইল দিয়ে তথ্য হাতিয়ে নেয়ার সুযোগ পাচ্ছিল না। তাই তারা মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ফিশিং মেসেজ ছড়িয়ে দেয়া শুরু করে।
সাইবার ফিজিক্যাল অ্যাটাক: অবকাঠামোগত ক্ষেত্রে আধুনিকীকরণের জন্য আমরা কম্পিউটার ব্যবহার করলেও এর সঙ্গে ভয়াবহ ক্ষতির আশঙ্কাও থাকে। যেমন- যেসব দেশের ওয়াটার সাপ্লাই, ইলেকট্রিক গ্রিড, পরিবহন ব্যবস্থা স্বয়ংক্রিয়, সেসব ক্ষেত্রেও হ্যাকিংয়ের আশঙ্কা রয়েছে। যার ফলে সাধারণ মানুষ প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
স্মার্ট মেডিকেল ডিভাইস ও ইলেকট্রনিক মেডিকেল রেকর্ডস: স্বাস্থ্যসেবায় প্রযুক্তির ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে ব্যক্তিগত তথ্য চুরির হার। কারনেগি মেলন ইউনিভার্সিটির সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের তথ্যানুযায়ী, একটি ক্লিনিক বা হাসপাতালে যত বেশি ডিভাইস সংযুক্ত থাকে, তত তথ্য চুরির আশঙ্কা থাকে। সেই সঙ্গে একজন রোগীর শরীরের সঙ্গে সংযুক্ত কোনো ডিভাইসকে দূর থেকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে দুর্ঘটনা ঘটানো সম্ভব।
(সাইবারবার্তা.কম/এমএ/১৬এপ্রিল২০২১)