শিশুদের জন্য অ্যাকাউন্ট তৈরি করা এখন আরো সহজ করবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাপল। এতে শিশুদের জন্য চাইল্ড অ্যাকাউন্ট তৈরি করা আরো সহজ হবে বলে দাবি প্রতিষ্ঠানটির। ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য অ্যাকাউন্টটি বাধ্যতামূলক হবে এবং অ্যাপলের সব শিশু সুরক্ষাবিষয়ক টুল এখানে পাওয়া যাবে।
অ্যাপল বলছে, একটি নতুন সেটআপ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট তৈরির ধাপগুলো সহজ করা হবে। যদি কোনো অভিভাবক পরে চাইল্ড অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চান, তবু ডিভাইসে শিশুদের উপযোগী ডিফল্ট সেটিংস চালু থাকবে। সেটআপ সম্পূর্ণ হলে শিশুরা অভিভাবকদের নির্বাচিত কনটেন্ট এবং সীমিত অ্যাপ ব্যবহার করে অ্যাপ স্টোর এবং অন্যান্য পরিষেবা ব্যবহার করতে পারবে। যদি চাইল্ড অ্যাকাউন্টের বয়স ভুলভাবে সেট করা হয়, তবে অভিভাবকরা সেটিও সংশোধন করতে পারবেন।
শিশুর বয়স জানতে পারবে অ্যাপ ডেভেলপার: একই সঙ্গে অ্যাপ ডেভেলপারদের জন্য শিশুদের বয়স জানা আরো সহজ করছে অ্যাপল। আগে শিশুরা সরাসরি অ্যাপে গিয়ে তাদের বয়স লিখতে পারত, ফলে ভুল তথ্য দিয়ে অ্যাপের সব ফিচার আনলক করা যেত। কিন্তু এখন ডেভেলপাররা একটি ‘ডিক্লেয়ারড রেঞ্জ এপিআই’ প্রযুক্তি ব্যবহার করে শিশুর বয়সের নির্ভরযোগ্য তথ্য পাবেন, যা বাবা-মা সেটআপের সময় দেবেন।
যখন কোনো অ্যাপ তথ্য চাইবে, তখন স্ক্রিনে একটি পপআপ আসবে। যেমন কোনো অ্যাপ ডিভাইসের ক্যামেরা ব্যবহার করতে চাইলে আসে। তবে ডেভেলপাররা শিশুর প্রকৃত জন্ম তারিখ জানতে পারবেন না, বরং কেবল একটি বয়স পরিসীমা দেখতে পাবেন। ফলে অ্যাপের কনটেন্ট আরো শিশুবান্ধব ও নিরাপদ হবে।
অ্যাপ রেটিং সিস্টেমে নতুন পরিবর্তন
অ্যাপল অ্যাপের বয়স রেটিং সিস্টেমেও পরিবর্তন আসছে। বর্তমানে চারটি অপশন রয়েছে—৪, ৯, ১২ ও ১৭ প্লাস। কিন্তু অ্যাপল সেই রেটিংগুলো আপডেট করে ৪, ৯, ১৩, ১৬ ও ১৮ প্লাস করবে। অভিভাবকদের সেট করা বয়সসীমার বাইরে কোনো অ্যাপ শিশুরা ডাউনলোড করতে পারবে না।
শিশুদের সুরক্ষায় আরো কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন
একজন অভিভাবক হিসেবে, যাদের সন্তান আইফোন ও আইপ্যাড ব্যবহার করতে ভালোবাসে, এই পরিবর্তনগুলো তাদের অনেক স্বস্তি দিয়েছে। অ্যাপল বাবা-মায়েদের জন্য আরো সহজ উপায়ে শিশুদের প্রযুক্তি ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের সুযোগ দিচ্ছে, যাতে তারা নিরাপদ থাকে।
তবে প্রযুক্তিগত সুরক্ষার পাশাপাশি বাবা-মায়েদের উচিত তাদের সন্তানদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করা। অনলাইনের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিশুরা যেন ডিজিটাল দুনিয়ার বিপদ সম্পর্কে সচেতন হয়, সেটি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো সম্প্রতি নিজেদের প্লাটফর্মে শিশুদের নিরাপত্তার প্রতি আরো মনোযোগ বাড়িয়েছে। কারণ সাইবার আক্রমণ, ক্ষতিকর কনটেন্ট, সাইবারবুলিং ও শোষণের মতো বিষয় নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। এছাড়া আইনি চাপ ও সুষ্ঠু ডিজিটাল পরিবেশ নিশ্চিতে জনসাধারণের বাড়তি দাবি রয়েছে। কেননা গবেষণা বলছে, এখন অনেক কম বয়সে শিশুরা ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে প্রযুক্তির খুব কাছে চলে আসে। যদি কোম্পানিগুলো শিশুদের নিরাপত্তাকে অবহেলা করে তবে তা তাদের খ্যাতি এবং আইনগত সমস্যা তৈরি করতে পারে। —মেকইউজঅব