নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস:
তথ্যপ্রযুক্তির বিস্ময়কর বিকাশের এই যুগে প্রযুক্তির আশীর্বাদের পাশাপাশি আছে বড় ধরনের ঝুঁকিও। ভার্চুয়াল জগতের সেই ঝুঁকির অন্যতম শিকার আমাদের শিশুরা। ২০২১ সালে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের এক গবেষণায় দেখা গেছে, শতকরা ৩০ শতাংশ শিশু অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের হয়রানির শিকার হয় এবং শতকরা ৮ ভাগ শিশু শিকার হয় যৌন হয়রানির।
উদ্বেগজনক এই বিষয়টি মাথায় রেখে শিশু ও তাদের অভিভাবকদের জন্য নিরাপদ ইন্টারনেট ও প্রাকশৈশব বিকাশের লক্ষ্যে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে শিশুদের প্রিয় অনুষ্ঠান সিসিমপুর-এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশ।
৩১ জানুয়ারি (সোমবার) এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘সেফ ইন্টারনেট ফর আর্লি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্ট’ নামের নতুন এই প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক শিশুদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই উদ্যোগ নেওয়ায় সিসিমপুরকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে সিসিমপুরকে সাথে নিয়ে কাজ করবে সরকারের ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইন্টারনেট সোসাইটি ফাউন্ডেশন-এর গ্রান্ট স্পেশালিস্ট গুইলহার্ম গঞ্জালেস রোকা ই সুজা, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইন্সটিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ড. বিএম মাইনুল হোসেন, তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উদ্যোক্তা সাবিলা ইনুন ও সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম। এছাড়াও অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, আইসিটি এক্সপার্ট. কনটেন্ট ডেভেলপার, আর্লি চাইল্ডহুড স্পেশালিস্ট এবং শিক্ষা বিশষজ্ঞরা অংশ নেন।
ইন্টারনেট সোসাইটি ফাউন্ডেশন-এর আর্থিক সহযোগিতায় দুইবছর মেয়াদি এই প্রকল্পের মাধ্যমে ভার্চুয়াল জগতে শিশুদের নিরাপত্তা এবং কী কী ধরনের প্ল্যাটফর্মে তারা শিক্ষাগ্রহণ করতে পারে, সে বিষয়ে গবেষণা করা হবে। পাশাপাশি নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে অভিভাবকদের জন্য তৈরি করা হবে গাইডলাইন।
এছাড়া সায়েন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও ম্যাথ (স্টেম) কে উপজীব্য করে শিশুদের জন্য একটি মোবাইল গেমও তৈরি করা হবে। তৈরি করা হবে বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল কনটেন্ট ও ৫টি গল্পের বই। যে বইগুলো বিতরণ করা হবে দেশের বিভিন্ন স্কুলে।
একইসঙ্গে, দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে সিসিমপুরের প্রিয় বন্ধু টুকটুকি, হালুম, শিকু, ইকরিরা নিরাপদ ইন্টারনেট বিষয়ক প্রচারণায় অংশ নেবে।
সিসেমি ওয়ার্কশপ
“সিসেমি ওয়ার্কশপ” একটি অলাভজনক শিক্ষামূলক সংগঠন যার পেছনে রয়েছে “সিসেমি স্ট্রিট” নামের অনুষ্ঠান যা টেলিভিশনকে শক্তিশালী শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে ১৯৬৯ সাল থেকে কাজ করে যাচ্ছে। সিসেমি ওয়ার্কশপ এমন একটি উদ্ভাবনী মাধ্যম যা শিশুদেরকে অনেক বেশি সম্পন্ন, সবল ও সদয় হয়ে উঠতে কাজ করে যাচ্ছে। সংস্থাটি ১৫০টিরও বেশি দেশে শিশুদের জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ও জনসেবামূলক কর্মসূচি বা প্রকল্প চালু রেখেছে। এই সকল উদ্যোগ বা প্রকল্প বিভিন্ন অঞ্চল বা জনগোষ্ঠীর চাহিদার সাথে সঙ্গতি রেখে গবেষণার মাধ্যমে তৈরি করা হয়।
সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশ
সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশ (এসডবিøউবি), সিসেমি ওয়ার্কশপ-এর একটি শাখা অফিস, যা সিসিমপুর নামে টেলিভিশন অনুষ্ঠান তৈরি করে থাকে। এটি বিশ্ব-বিখ্যাত টেলিভিশন প্রোগ্রাম সিসেমি স্ট্রিট-এর বাংলাদেশি সংস্করণ। বাংলাদেশি শিশুদের শিক্ষাগ্রহণকে আনন্দদায়ক ও উপভোগ্য করার লক্ষ্যে ২০০৫ সাল থেকে টেলিভিশন অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারিত হচ্ছে।
(সাইবারবার্তা.কম/৩১জানুয়ারি২০২২/কেএম)