:: সাইবারবার্তা ডেস্ক :: কর্মী ছাঁটাই ও স্টুডিও বন্ধ হওয়ার মধ্য দিয়ে ২০২৪ সালে কঠিন সময় কাটানোর পর ভিডিও গেম ইন্ডাস্ট্রি চলতি বছর শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি দেখবে বলে আশাবাদী প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা। মেটাপ্লে ও ভিডিও গেম গবেষণা গ্রুপ ডিএফসি ইন্টেলিজেন্সের দুটি আলাদা প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালে আবারো ঘুরে দাঁড়াবে গেমিং শিল্প। নতুন ভিডিও গেম ও কনসোলের কারণে রেকর্ড আয় করবে খাতটি।

মেটাপ্লের প্রতিবেদনে একটি ইতিবাচক দৃশ্যপট তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে জরিপে অংশ নেয়া ৭৭ শতাংশ ডেভেলপাররা ধারণা করছেন, ২০২৫ সালে গেমিং দুনিয়ায় একটি ‘রেনেসাঁ’ ঘটবে। তাদের মতে, চলতি দশকের মাঝে এসে শিল্পটি আবারো নতুন করে সফলতা দেখবে। আশাবাদী এমন মনোভাবের পেছনে রয়েছে লাইভঅপস (গেমের চলমান আপডেট), ক্রস-প্লাটফর্ম ডেভেলপমেন্ট (বিভিন্ন প্লাটফর্মে গেম খেলা) ও গেম উন্নত করতে নতুন ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার। অধিকাংশ ডেভেলপাররা বলছেন, এ বছর নতুন অনেক গেম প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে বহুল প্রতিক্ষীত গ্র্যান্ড থেফট অটো সিরিজের পরবর্তী সংস্করণ জিটিএ সিক্স। এছাড়া বছরজুড়ে আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় কর্মী ছাঁটাইও কমে আসবে এ খাতে।

প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, গেম শিল্পের পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে লাইভঅপস। এর মাধ্যমে নতুন গেমের সফলতার ওপর নির্ভর না করে, স্টুডিওগুলো পুরনো গেমগুলোকে দীর্ঘ সময় ধরে জনপ্রিয় রাখতে আপডেট ও উন্নতিতে বেশি সময় দিচ্ছে। ফলে অনেক গেম মুক্তির পরও দীর্ঘ সময় চলতে থাকে ও জনপ্রিয়তা ধরে রাখে। এ কাজের জন্য স্টুডিওগুলো ছোট ও দক্ষ টিম, উন্নত প্রযুক্তি ও আরো সূক্ষ্ম কৌশল ব্যবহার করছে।

ডিএফসি ইন্টেলিজেন্সের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত দুই বছরের মন্দার পর গেমিং খাত এবার শক্তিশালী বৃদ্ধি প্রত্যাশা করছে। এ সফলতার পেছনে অন্যতম ভূমিকা থাকবে গেমিং হার্ডওয়্যার, বিশেষ করে নতুন কনসোলগুলোয় ক্রেতাদের বাড়তি আগ্রহ। এছাড়া এআই টুলস ডেভেলপারদের ছোট টিমের মাধ্যমে বড় ও জটিল গেম তৈরি করতে সাহায্য করছে। ফলে গেম ডেভেলপমেন্ট আরো কার্যকরী হয়ে উঠেছে বলে জানান তারা।

ডিএফসি ইন্টেলিজেন্সের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও ডেভিড কোল বলছেন, ‘গত তিন দশকে ভিডিও গেম শিল্প ২০ গুণের বেশি বেড়েছে। তবে দুই বছর ধরে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার বিক্রির মন্দার পর বেশ অনেকটা পিছিয়ে পড়ে খাতটি। চলতি বছর থেকে শুরু করে দশকের শেষ পর্যন্ত স্থিতিশীল হারে বৃদ্ধি পাবে ভিডিও গেমের বাজার।’

প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, আগামী কয়েক বছরে গেমিং হার্ডওয়্যারে বড় পরিবর্তন আসছে। নতুন কনসোল আসবে, পিসি গেম ক্রস-প্লাটফর্মে আরো জনপ্রিয় হবে। তবে অন্যান্য বিনোদন শিল্পের মতোই এখানে প্রতিযোগিতাও বেড়ে যাবে। ফলে সব গেম বা কোম্পানি সফল হবে না।

তাদের মতে, গত কয়েক বছরের ভুল থেকে অনেক কিছু শিখেছেন শিল্পসংশ্লিষ্টরা। যদিও সামনের পথ সহজ নয়, তবে এ শিক্ষাকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে ২০২৫ সাল গেমিং খাতের জন্য একটি সম্ভাবনাময় বছর হতে চলেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

একাধিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছর যেসব বড় গেম উন্মোচন হতে পারে, এর মধ্যে রয়েছে অ্যাসাসিনস ক্রিড শ্যাডোজ, গ্র্যান্ড থেফট অটো সিক্স, দ্য আউটার ওয়ার্ল্ডস টু, পোকেমন লিজেন্ডস ও আরো অনেক। নিনতেন্দোর সুইচ কনসোলের দ্বিতীয় সংস্করটি বাজারে আনার ঘোষণাও সামগ্রিকভাবে গেমিং খাতের প্রবৃদ্ধির স্বম্ভাবনা বাড়িয়েছে। -গেমসবিট।

(সাইবারবার্তা.কম/২৭জানুয়ারি২০২৫/০৮০৮)