ছয় মাসের প্রশিক্ষণে কোরিয়ার উদ্দেশ্যে শনিবার (৬ মার্চ) যাত্রা করছে আইডিয়াথনের বিজয়ী সেরা ৫ স্টার্টআপ। কোরিয়া প্রোডাক্টিভিটি সেন্টার (কেপিসি) এবং কোরিয়া ইনোভেশন প্রমোশন অ্যাসোসিয়েশন (কাইপা) তাদেরকে প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
জি-সেন– ২০২০-এর বিজয়ী ৫টি ব্যাচ হলো —
১. কৃষিয়ান– কৃষি ভিত্তিক ইনোভেশন।
২. চার ছক্কা লিমিটেড– অগমেন্টেড রিয়েলিটি (এআর) বেইজড এডুকেশন।
৩. এএনটিটি রোবোটিক্স লিমিটেড– রোবোটিক্স প্রোগ্রামিং বেইজড এডুকেশন।
৪. রক্ষী লিমিটেড– বিল্ডিং সিকুরিটি
৫. ছবির বাক্স– ছবি বেচা-কেনার মার্কেট প্লেস।
গ্লোবাল স্টার্টআপ টু এন্ট্রাপ্রেনিউর নেটওয়ার্ক (জি-সেন) – ২০২০ একটি গ্লোবাল প্রোগ্রাম যা কোরিয়ার মিনিস্ট্রি অফ জাস্টিস-এর অনুমতি ক্রমে কোরিয়া প্রোডাক্টিভিটি সেন্টার (KPC) এবং কোরিয়া ইনোভেশন প্রমোশন অ্যাসোসিয়েশন (KIPA) কোরিয়াতে বাংলাদেশ থেকে বিজয়ী ৫টি ব্যাচের ১০ জন কো-ফাউন্ডারকে ৬ মাসব্যাপী বাংলাদেশ মার্কেটকে সামনে রেখে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করবে।
এছাড়াও আন্তর্জাতিক পেটেন্ট, ডিজাইন, কপিরাইট, ট্রেডমার্ক অধিকার প্রাপ্তিতে তাদের সহায়তা করা হবে। বাংলাদেশের তরুণ স্টার্টআপরা যাতে করে দেশে এসে সরাসরি ব্যবসা শুরু করতে পারে তার জন্য তাদের প্রথম প্রোডাক্টের ওয়ার্কিং প্রোটোটাইপ তৈরিতেও কোরিয়া সর্বপ্রকার সহায়তা দিবে।
কিন্তু এই জি-সেন– ২০২০ যাদের হাত ধরে বাংলাদেশে এসেছে সেই তরুণ স্টার্টআপ এবং প্রকৌশলী দম্পতি শফিউল তপন ও তানিয়া চৌধুরী, বাংলাদেশে এর শুরুটা এত সহজ ছিলো না বলে জানান।
এই তরুণ স্টার্টআপ দম্পতির কোরিয়া যাত্রা শুরু ২০১৭ সালে – স্টার্টআপ গ্র্যান্ড চ্যালেঞ্জ (ইনটু কোরিয়া) K-Startup Grand Challenge (In2Korea) প্রোগ্রামের মাধ্যমে। তারা বিশ্বের উন্নত দেশের স্টার্টআপদের সঙ্গে কম্পিটিশনের মাধ্যমে সিলেক্ট হয়ে ২০১৭ সালে কোরিয়ায় যান এবং Ministry of Science and ICT, Korea ও The National IT Industry Promotion Agency (NIPA), Korea এর সাহায্যে বাংলাদেশ থেকে প্রথম কোন আন্তর্জাতিক স্টার্টআপ হিসাবে ৯ মাসব্যাপী প্রোগ্রাম সফলভাবে শেষ করে কোরিয়াতে তাদের কোম্পানি তালহাট্রেনিং এলএলসি (TalhaTraining LLC) প্রতিষ্ঠা করে।
K-Startup Startup Grand Challenge (In2Korea) প্রোগ্রামে শফিউল তপন এবং তানিয়া চৌধুরী তালহাট্রেনিং এলএলসি (TalhaTraining LLC), কোরিয়া প্রোডাক্টিভি সেন্টার (KPC)-এর আন্তর্জাতিক ইনোভেশন পার্টনার হিসাবে কোরিয়াতে কাজ করছে, যার এশিয়ার প্রধান হচ্ছেন তালহাট্রেনিং এলএলসি-এর এমডি এবং সিইও শফিউল তপন। একই সাথে তানিয়া চৌধুরী কাজ করছেন আন্তর্জাতিক ইনোভেশন কনসালটেন্ট হিসাবে, জি-সেন, কোরিয়া প্রোডাক্টিভিটি সেন্টারে।
এই দম্পতি যখন জি-সেন প্রোজেক্টে কাজ শুরু করে তখন তারা চিন্তা করেন, অন্যান্য দেশের সাথে যখন কাজ করছি তখন বাংলাদেশ কেন নয়, বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোক্তারা তো আরও অনেক সমস্যার সমাধান করে সামনে এগোয়। এই চিন্তাধারা থেকেই তারা, মিনিস্ট্রি অফ জাস্টিস কোরিয়া-এর সম্মতিক্রমে, কোরিয়া প্রোডাক্টিভিটি সেন্টার (KPC) এবং কোরিয়া ইনোভেশন প্রোমোশন অ্যাসোসিয়েশন (KIPA) এবং আইসিটি মিনিস্ট্রি, বাংলাদেশ-এর মধ্য MoU সাক্ষর করায় ২০১৯ সালের ২৭শে নভেম্বর এবং চুক্তি সাক্ষর করায় ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর। বাংলাদেশ ফিস এক্সপার্ট লিমিটেড (Fish Expert Limited) G-SEN-এর সিলেকশন পার্টনার হিসাবে কাজ করছে।
তারই ফলসরূপ দীর্ঘ ২ বছরের চেষ্টায় আজ, তাদেরই হাত ধরে গ্লোবাল স্টার্টআপটু এন্ট্রাপ্রেনিউর নেটওয়ার্ক (জি-সেন) – ২০২০ এর প্রথম ব্যাচের ৫টি বিজয়ী দল কোরিয়ায় যাত্রা শুরু করছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘আমাদের সবার শুভকামনা এবং দোয়া থাকল এই তরুণ ৫টি বিজয়ী স্টার্টআপ দলের জন্য। একই সাথে শফিউল এবং তানিয়া দম্পতির জন্য, যারা বিদেশ গিয়েও দেশের কথা সবার আগে চিন্তা করে। এই তরুণরাই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং দেশের পতাকাকে বিশ্বের সামনে উজ্জ্বল করে তুলে ধরবে।’
(সাইবারবার্তা/কম/৬মার্চ২০২১)