Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the wordpress-seo domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/cyberbar42/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the soledad domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/cyberbar42/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114
গাছটিতে ফোন রাখলে আসে নেটওয়ার্ক! - CyberBarta.com
  শনিবার, ডিসেম্বর ২১ ২০২৪ | ৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - শীতকাল | ১৮ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

গাছটিতে ফোন রাখলে আসে নেটওয়ার্ক!

আশফাক জুনেদ: ইমরান আহমদ নামের এক সিএনজি অটোরিকশা চালক একটা গাছের সঙ্গে ফোন রেখে পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। তার পাশে আরও দুই-তিনজন। কৌতুহলী হয়ে এভাবে গাছের সঙ্গে ফোন আটকে দাঁড়ানোর কারণ জানতে চাইলে ইমরান জানান এক আশ্চর্যজনক তথ্য।

 

আশপাশের কোথায় মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক নেই। কিন্তু এই গাছে ফোন রাখলে নাকি নেটওয়ার্ক আসে এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে যাত্রীদের ফোন কল আসে। এই কারণে স্থানীয় অটো চালকেরা সবাই এই গাছে ফোন লাগিয়ে রাখেন। এতে ফোনে নেটওয়ার্ক থাকে। অনেকে এই গাছকে বলেন ‘গরিবের নেটওয়ার্ক টাওয়ার’।

 

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার পাল্লাতল চা বাগান স্ট্যান্ডে এই গাছটির অবস্থান। দুর্গম এলাকা হওয়ায় এই এলাকায় কোনো মোবাইল ফোনের টাওয়ার নেই। এর ফলে নেটওয়ার্ক নিয়ে চরম বিড়ম্বনায় পড়েন এই এলাকার মানুষেরা। ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রান্তিক এই এলাকা এখনও ডিজিটালের ছোঁয়ার বাইরে।

 

রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হলেও এই এলাকায় এখনও পৌঁছেনি মোবাইল নেটওয়ার্ক। নেটওয়ার্ক না থাকার কারণে এই এলাকার হাজারো মানুষেরা চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। সরকার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা থেকে বাদ পড়ছে কয়েক হাজার মানুষ। সরজমিনে ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্যচিত্র উঠে আসে।

 

বড়লেখার সীমান্তঘেষা উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়ন। ৬৪ দশমিক ৭৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ইউনিয়নের অবস্থান। ইউনিয়নের পূর্ব ও দক্ষিণ এলাকাজুড়ে রয়েছে পাল্লাতল চা বাগান, পান পুঞ্জি, বেরেংগা পুঞ্জি, আয়সাবাগ চা বাগান, কুমারশাইল চা বাগান, কুমারশাইল পান পুঞ্জি, অহিদাবাদ চা বাগান ও ফতেহবাগ চা বাগান।

 

এসব এলাকার চারদিকে উচু-নিচু পাহাড় আর পাহাড়। পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময় এলাকা। রাস্তাঘাট কার্পেটিং করা হয়েছে। উন্নয়নমূলক অন্যান্য কাজ এখনো চলমান রয়েছে। কিন্তু এখনো এসব এলাকায় কোনো মোবাইল ফোন কোম্পানি টাওয়ার বসাতে আসেনি।

 

রুবেল মিয়া নামের এক কম্পিউটার অপারেটর বলেন, সরকার আমাদের জন্য অনেক কিছু করছে। দেশ ডিজিটাল হচ্ছে। কিন্তু আমরা এখনও পিছিয়ে আছি। আমাদের পাল্লাতলে নেটওয়ার্কের একটা বিশাল সমস্যা। এখানে নেট মিলে না। আমরা প্রয়োজনীয় কিছু ইউটিউবে খুঁজতে পারি না। কাউকে ফোন দিতে পারি না। নেটওয়ার্ক খুঁজতে পাহাড়ের উপর উঠতে হয়।

 

চা শ্রমিক নেতা রীনা বলেন, আমাদের এখানে নেটওয়ার্কের সমস্যা। কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারি না। নেটের জন্য এখানে হাহাকার। আমরা এর সমাধান চাই।

 

সরেজমিনে এসব এলাকা ঘুরে দেখা যায় চা বাগান অধ্যুষিত এসব এলাকায় নির্দিষ্ট কিছু স্থান ছাড়া কোথাও নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। কোথায় কখন নেটওয়ার্ক থাকে কেউ বলতে পারে না। জরুরি প্রয়োজনে কোথায় ফোন করতে হলে চরম দুর্ভোগে পড়েন স্থানীয়রা। আন্দাজের উপর কেউ গাছের সঙ্গে, কেউ বাঁশের উপর কিংবা পাহাড়ের উপর ফোন রেখে নেটওয়ার্ক খুঁজেন। ভাগ্যগুণে এসব জায়গায় নেটওয়ার্ক থাকে আবার অনেক সময় থাকে না।

 

২০১৯ সালে ফোন অপারেটর কোম্পানি রবি পাল্লাতল চা বাগান এলাকায় তাদের টাওয়ার স্থাপনের জন্য এগিয়ে আসে। এজন্য তারা মাটি পরীক্ষাও করে। কিন্তু টাওয়ার স্থাপনের জন্য নির্ধারিত জায়গার মালিকানা জটিলতায় শেষ পর্যন্ত টাওয়ার স্থাপনের কাজ স্থগিত করে দেয়া হয়। টাওয়ার নির্মাণের খবরে এলাকার মানুষ আশান্বিত হলেও শেষ পর্যন্ত টাওয়ার নির্মাণ কাজ স্থগিত হওয়ায় তারা হতাশ হন।

স্থানীয়রা জানান, জরুরি প্রয়োজনে কারো সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য এখানে নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। নেটওয়ার্ক খুঁজার জন্য পাহাড়ের উপর উঠতে হয়। এছাড়া ভালো নেটওয়ার্ক না থাকার কারণে ছাত্রছাত্রীরা অনলাইনে ক্লাস করতে পারে না। বিশেষ করে পড়ালেখার দিক দিয়ে খাসিয়া আদিবাসী ও চা জনগোষ্ঠী অনেক পিছিয়ে আছে। বর্তমান এই করোনার প্রাদুর্ভাবে তারা বই বা পড়াশুনার কথা ভুলেই গেছে। বর্তমান এই ডিজিটাল যুগে এসেও এসব প্রত্যন্ত অঞ্চল নেটওয়ার্কের বাইরে এটা কল্পনা করা যায় না।

 

বাংলাদেশ আদিবাসী যুব ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি তামলিমন বারে বলেন, আমরা এমনিতেই অবহেলিত। দেশ ডিজিটাল হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তির এই সময়ে মানুষ ঘরে বসে ইন্টারনেটের সাহায্যে সব সুবিধা পাচ্ছে। কিন্তু ডিজিটাল দেশে আমাদের পাল্লাতল চা বাগান, পানপুঞ্জিতে নেটওয়ার্ক পৌঁছেনি। বর্তমানে করোনা মহামারীর কারণে স্কুল-কলেজ বন্ধ। সবাই ঘরে বসে অনলাইনে ক্লাস করছে। কিন্তু আমাদের পাল্লাতলের শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাস করা থেকে বঞ্চিত থাকছে। অনলাইনের মাধ্যমে মুহূর্তেই যখন সারা দুনিয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে এমন সময় পাল্লাতলের মানুষ অনেক খবর পাচ্ছেই না। তার কারণ নেটওয়ার্ক। এখনো এখানে কেউ টাওয়ার বসাতে আসেনি। আমরা টাওয়ার বসানোর জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করবো।

 

বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামীম আল ইমরান বলেন, বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে পাল্লাতল চা বাগান এলাকা নেটওয়ার্কের বাইরে আছে। পাল্লাতল চা বাগান এলাকার মানুষের মোবাইল নেটওয়ার্কের দুর্ভোগ নিরসনে কোনো মোবাইল কোম্পানি টাওয়ার স্থাপনে এগিয়ে এলে তারা উপকৃত হবেন।

 

এ বিষয়ে গ্রামীণফোনের সুপারভাইজার শিমুল আহমদ বলেন, কোনো এলাকায় নেটওয়ার্কের সমস্যা থাকলে বা টাওয়ার স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা থাকলে আমাদের অফিস বরাবর লিখিত আবেদন করতে হবে। সেক্ষেত্রে টাওয়ার স্থাপনের বিষয়টি অফিস বিবেচনা করতে পারে। সৌজন্যে: ঢাকাটাইমস।

 

(সাইবারবার্তা.কম/এমএ/১৪এপ্রিল২০২১)

শেয়ার করুন

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
আরও পড়ুন

নতুন প্রকাশ