:: নিজস্ব প্রতিবেদক, সাইবারবার্তা.কম :: পাঁচ দফা দাবি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থী এবং ঢাবি শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। বলেছেন, বর্তমানে দেশ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এ অবস্থায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকা একান্তভাবে জরুরি। কোনোভাবেই তৃতীয় পক্ষ যাতে সুযোগ নিতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
রবিবার রাতে এক বিবৃতিতে ড. নিয়াজ এসব বলেন। তিনি সবাইকে ধৈর্য ধারণ এবং সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
উপাচার্য বলেন, আজ ২৭ জানুয়ারি (সোমবার) অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের অধ্যক্ষগণের সঙ্গে জরুরি সভা হবে। সভায় শিক্ষার্থীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হবে। যেসব বিষয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন, সেগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এ সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয় সরকার কর্তৃক গঠিত কমিটির নজরে এনে তা সমাধানের ব্যাপারে সহযোগিতা কামনা করা হবে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেন উপাচার্য।
যে কারণে আন্দোলন: পাঁচ দফা দাবি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা করতে গেলে রোববার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ সাত কলেজের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীকে অপমান করেন বলে অভিযোগ তোলেন তারা। এ ঘটনায় তার ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়ে রোববার সন্ধ্যা থেকে সায়েন্স ল্যাব মোড় অবরোধ এবং সেখান থেকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের দিকে মিছিল নিয়ে যান শিক্ষার্থীরা।
নীলক্ষেত মোড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে কয়েক শ শিক্ষার্থী বেরিয়ে এসে তাদের ধাওয়া দেন। এতে নীলক্ষেত মোড় থেকে কিছুটা সরে যান সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। পরে তারা আবার একজোট হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেন। পাল্টাপাল্টি এ ধাওয়া চলে রাত পৌনে দুইটা পর্যন্ত। এতে দুই পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। দুই পক্ষকে নিবৃত্ত করতে মাঝে অবস্থান নেয় পুলিশ। এ সময় সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশকে সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করতে দেখা যায়। পরে পুলিশকে সহায়তা করতে চার প্লাটুন বিজিবিও মোতায়েন করা হয়।
একপর্যায়ে নীলক্ষেত ও নিউমার্কেট এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নিউমার্কেট এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নেন। পরে রাত পৌনে ৩টার দিকে অবস্থান ছেড়ে নিজেদের ক্যাম্পাসে ফিরে যান।
নতুন কর্মসূচি: রাত ৩টার দিকে সাত কলেজের পক্ষ থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কর্মসূচির অংশ হিসেবে সাত কলেজের সামনের সড়কে সোমবার সকাল নয়টা থেকে অবস্থান নেবেন এসব কলেজের শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনেরও ঘোষণা দেন তারা।
(সাইবারবার্তা.কম/২৭জানুয়ারি২০২৫/০৫১৪)