:: সাইবার বার্তা ডেস্ক :: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির ব্যাপক প্রভাব পড়েছে চাকরির বাজারেও। গত বছর ৩০ শতাংশ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের জায়গায় এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে, যা চলতি বছর ৩৮ শতাংশে উন্নীত হতে পারে। ২০২৪ সালের আগস্টে রিজিউম টেমপ্লেটস পরিচালিত গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় প্রযুক্তি, বিমান ও খুচরা শিল্পে বড় ধরনের ছাঁটাই চলেছে। বড় বড় কোম্পানি যেমন অ্যামাজন, বোয়িং ও স্পিরিট এয়ারলাইনস কর্মী কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা এ বছর আরো বাড়বে বলে ধারণা করছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা।
বছরের শুরুতেই ফেসবুকের প্যারেন্ট কোম্পানি মেটা কাজে পিছিয়ে থাকা কর্মীদের মধ্যে ৫ শতাংশ ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। গত সপ্তাহে প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর (সিইও) পক্ষ থেকে পাঠানো এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রাম মিলে মেটায় বর্তমানে কাজ করছেন ৭২ হাজার জনবল। তাদের একটি অংশকে কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে ছাঁটাই করা হবে বলে জানানো হয় চিঠিতে। এছাড়া জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সফটওয়্যার নির্মাতা মাইক্রোসফট জানায়, তারাও তাদের দক্ষতার ভিত্তিতে অল্প কিছু জনবল ছাঁটাই করবে।
ভবিষ্যতে কোম্পানির প্রবৃদ্ধি ও বিশেষ করে প্রযুক্তির অগ্রগতির কারণে দুটি কোম্পানি তাদের কর্মী কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে। তবে জনবল কমানোর বিষয়টি দুই বছর আগে প্রযুক্তি খাতে হওয়া বড় ধরনের ছাঁটাইয়ের সঙ্গে তুলনা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
২০২৩ সালে বেশ কয়েকটি টেক কোম্পানি ব্যাপকভাবে কর্মী ছাঁটাই শুরু করে। এ প্রবণতা শুরু হয় ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে। ওই সময় মেটা ও অ্যামাজন জনবল কমানোর ঘোষণা দেয়। মেটা প্রথমে ১১ হাজার কর্মীকে ছাঁটাই করে, যা ছিল তাদের বৈশ্বিক কর্মীদের ১৩ শতাংশ। এরপর ২০২৩ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) আরো ১০ হাজার কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়। বিশ্বের বৃহত্তম ই-কমার্স কোম্পানি অ্যামাজনও একই সময় ছাঁটাইয়ের কাজ শুরু করে ও মার্চে নয় হাজার কর্মীকে চাকরিচ্যুত করে।
কোম্পানিগুলো কর্মী ছাঁটাই করার বিভিন্ন কারণ উল্লেখ করলেও প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের মতে, এর একটি মুখ্য কারণ এআইয়ের বিকাশ। প্রযুক্তিটির ওপর মনোযোগ বাড়াতে ২০২৪ সালে গুগল ও মেটার মতো বড় জায়ান্টগুলো নিজেদের কর্মীবাহিনীকে নতুন করে সাজাতে শুরু করে। রিজিউমটেমপ্লেটসের প্রধান ক্যারিয়ার স্ট্র্যাটেজিস্ট জুলিয়া টুথেকার বলছেন, ‘এআই প্রযুক্তি দ্রুত উন্নত হচ্ছে এবং এর একটি প্রধান সুবিধা হলো দক্ষতা। অনেক এআই টুল এমন কাজ করতে সক্ষম, যেখানে মানুষের সাহায্যের প্রয়োজন হয় না বা কম হয়। প্রযুক্তিটি কোম্পানিগুলোকে বিভিন্ন পদ একত্রিত করতে বা নির্দিষ্ট কাজের জন্য কর্মীদের সংখ্যা কমাতে সাহায্য করছে।’
তবে কিছু বিশেষজ্ঞ বলছেন, এআই নতুন চাকরির সুযোগও তৈরি করতে পারে। এমন চাকরি, যেখানে মানবীয় যোগাযোগ, সৃজনশীলতা, বিশ্লেষণাত্মক চিন্তাভাবনা, কৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ, আবেগী বুদ্ধিমত্তা ও উচ্চতর প্রযুক্তিগত দক্ষতার প্রয়োজন। -দি ইকোনোমিক টাইমস, বণিকবার্তা।
(সাইবারবার্তা.কম/২০জানুয়ারি২০২৫/১৬৫৩)