নিজস্ব প্রতিবেদক, সাইবারবার্তা: নতুন ‘ক্লাউড পিসি’ উইন্ডোজ ৩৬৫-এর ঘোষণা দিয়েছে মাইক্রোসফট। শীর্ষস্থানীয় সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটির নতুন এই পণ্যের বিশেষত্ব হচ্ছে, যে কোনো স্থান থেকে একটা পুরোদস্তুর উইন্ডোজ ডিভাইস স্ট্রিম করার সুবিধা পাবেন ব্যবহারকারী।
অনেকটা গেইম স্ট্রিমিংয়ের আদলে কাজ করবে উইন্ডোজ ৩৬৫। মূল কম্পিউটিংয়ের কাজ হবে রিমোট ডেটা সেন্টারে, সেখান থেকে ডেটা স্ট্রিম করা হবে ব্যবহারকারীর ডিভাইসে। অর্থ্যাৎ, অ্যাপল ম্যাক, ট্যাবলেট বা অন্য যে কোনো ডিভাইস থেকে একটা পুরোদস্তুর উইন্ডোজ ডেস্কটপ পিসি স্ট্রিম করা যাবে।
তবে আপাতত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যবহারের জন্য বাজারজাত করা হবে উইন্ডোজ ৩৬৫। মহামারী দুর্যোগের মোকাবেলা করতে, কখনো অফিসে স্বশরীরে উপস্থিত থেকে, কখনো বা নিজের বাসায় বসে কাজ করার এক মিশ্র প্রক্রিয়া বেছে নিতে হয়েছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষদের। এই পরিস্থিতিতে মাইক্রোসফট নিজেদের নতুন ‘ক্লাউড পিসি’-কে “হাইব্রিড উইন্ডোজ ফর এ হাইব্রিড ওয়ার্ল্ড” আখ্যা দিয়ে বাজারজাত করছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
প্রত্যেক ব্যবহারকারীর নিজস্ব অ্যাপ আর সেই অ্যাপের সেটিং, যে কোনো ডিভাইস থেকে তাৎক্ষণিক বুট হবে বলে জানিয়েছে মাইক্রোসফট। এ প্রসঙ্গে আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় প্রতিষ্ঠানটির দাবি, “ডিভাইস যেটাই হোক না কেন, উইন্ডোজ ব্যবহারের অভিজ্ঞতা থাকবে একই”।
“আপনি অফিসে বসে যে কাজটি করবেন, একই কাজ হোটেল রুমে বসে ল্যাপটপে বা গাড়িতে কোথাও যাওয়ার পথে নিজের ট্যাবলেট থেকেই করা যাবে”।
অগাস্ট মাস থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানভিত্তিক ক্রেতাদের কাছে পণ্যটি বিক্রি শুরু হবে বলে জানিয়েছে মাইক্রোসফট। শুরুতে উইন্ডোজ ১০ অপারেটিং সিস্টেম স্ট্রিম করবে ‘উইন্ডোজ ৩৬৫ ক্লাউড পিসি’। তবে শিগগিরই এটি আপডেট করে উইন্ডোজ ১১ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হবে।
উইন্ডোজ ৩৬৫ ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীদের জন্য বাজারজাত করা হবে কি না, সেই বিষয়ে এখনো কিছু জানায়নি মাইক্রোসফট। লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, প্রতিষ্ঠানটি মূল সেবাগুলোর জন্য সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিক ব্যবসায় কাঠামোর দিকে ঝুকছে প্রায় এক দশক ধরে। মাইক্রোসফট অফিস ২০১৩ দিয়ে সাবস্ক্রিশন লাইসেন্স বাজারজাত করা শুরু করেছিলো। বর্তমানে এই সেবাটির ‘সিঙ্গল ইউজ ডেস্কটপ ভার্সন’-এর তুলনায় সাবস্ক্রিপশন লাইসেন্স থেকেই আয় বেশি মাইক্রোসফটের। গেইমিং ক্ষেত্রেও সাফল্য পেয়েছে মাইক্রোসফটের সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিক ব্যবসা কাঠামো।
তবে বিবিসি জানিয়েছে, এমন সাবস্ক্রিশন ভিত্তিক ব্যবসা কাঠামোর নেতিবাচক দিক একটাই- একবারে পণ্যের দাম পরিশোধ করার বদলে সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিক সেবা নিলে দিন শেষে ক্রেতার খরচ তুলনামূলক বেশিই হয়ে যায়।
সাম্প্রতিক সময়ে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ পণ্যের দাম কমিয়েছে লক্ষণীয় হারে। একটা সময়ে উইন্ডোজের একটি ডিস্ক কেনা ছিলো বেশ ব্যয়বহুল একটা ব্যাপার। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উইন্ডোজের এক সংস্করণ থেকে ফ্রি-তে পরের সংস্করণে আপগ্রেডের সুযোগ করে দিয়েছে মাইক্রোসফট। উইন্ডোজ ১১-এর ক্ষেত্রেও একই সুবিধা পাবেন উইন্ডোজ ১০-এর ব্যবহারকারীরা। অন্যদিকে, ওয়ানড্রাইভ ক্লাউড স্টোরেজ আর অফিস ৩৬৫-এর সাবস্ক্রিপশন থেকে আয়ের চাকা সচল রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি।
(সাইবারবার্তা.কম/আইআই/১৭ জুলাই ২০২১)