সাইবারবার্তা ডেস্ক: আত্মনির্ভরশীল ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যেই সফটওয়্যারে সক্ষমতা অর্জিত হয়েছে। এবার হার্ডওয়্যার তৈরিতেও আত্মনির্ভরশীল হওয়ার জন্য এবার বাজেটে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’এ বিশেষ ছাড় দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি আরো জানিয়েছেন, বাংলাদেশ যেন আগামী দুই-চার বছরের মধ্যে আইসিটি এক্সপোর্ট হাব বা গেটওয়ে হতে পারে এজন্য প্রধানমন্ত্রী রপ্তানির ওপর ১০ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দিয়েছেন। যার ফলশ্রুতিতে ইতোমধ্যেই দেশে নকিয়া তাদের কারখানা স্থাপনের কাজ প্রায় শেষ করছে। এ কারণে ২০২৪ সাল পর্যন্ত যে কর অবকাশ ছাড় দেয়া হয়েছে তার মেয়াদ ২০৩০ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধির পরিকল্পনার করা হচ্ছে।
শুক্রবার রাতে বাজেট পরবর্তী পরিস্থিতিতে তারুণ্যের কর্মসংস্থান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে আইসিটি খাতের ভূমিকা শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
পলক বলেন,স্টার্টআপকে আমরা একেবারে উপ-শহর পর্যন্ত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক এবং গ্রাম পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার পর্যন্ত বাংলাদেশই পৃথিবীতে এমন একটি দেশ যেখানে একটি সরকারি ভেঞ্চর কোম্পানি রয়েছে।
স্টার্টআপকে আমরা একেবারে উপ-শহর পর্যন্ত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক এবং গ্রাম পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার পর্যন্ত নিয়ে যেতে এই কোম্পানিটি কাজ শুরু করেছে। ইতোমধ্যেই এই কোম্পানির মাধ্যমে সরকার শত বর্ষে শত আশা কর্মসূচির মাধ্যমে ৫০টি স্টার্টআপকে ১০০ কোটি টাকার ইক্যুইটি শেয়ার দিয়ে শুরু করেছি।
এছাড়াও উপজেলা পর্যায়ে ৪৯২টি সার্ভিস ইমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার তৈরি করা হচ্ছে। শহার-গ্রাম ছাড়িয়ে চর-দ্বীপ ও পাহাড়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট নিয়ে গিয়ে সেখানকার অধিবাসীদের প্রযুক্তি দক্ষ করে তোলার প্রচেষ্টা চলছে বলে জানান জুনাইদ আহমে পলক।
দেশে পিরামিড ভিত্তিক উদ্ভাবনী অবকাঠামো তৈরির মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে বিশ্বের বুকে একটি উদ্ভাবনী মূলক উন্নত অর্থনীতির বাংলাদেশ গঠনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি আরো জানান, ২০৪১ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শিগগির পূর্বাচলে একটি ভিশন ২০২১ টাওয়ার স্থাপন করা হবে। সেখানে রিসার্চ, ইনোভেশন, বিজনেস অ্যান্ড ডিজিটাল একাডেমি প্রতিষ্ঠা করা হবে। এর মাধ্যমে শিক্ষক, রাজনীতিক এবং সরকারি কর্মকর্তাদের ৪র্থ শিল্পবিপ্লবের ডিজিটাল দুনিয়ায় নেতৃত্ব দেয়ার দক্ষতা অর্জনের প্রয়াস চালানো হবে।
‘আইসিটি অর্থনীতির অক্সিজেন’ উল্লেখ করে পলক বলেন, ‘মাননীয় উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী আইসিটি বিভাগ কখনো অ্যাডভাইজরি, কখনো সাজেস্টিভ অথবা কোথাও ইমপ্লিমেন্টের রোল প্লে করবে। অর্থাৎ আইসিটি বিকেম দি অক্সিজন অব হোল ইকোনোমি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কিষি, বাণিজ্য, বিনোদন এমনকি বিচারিক ব্যবস্থায়ও আমরা আইসিটির সর্বোচ্চ ব্যবহার করছি।
তিনি আরো বলেন, বাজেটে আইসিটি বিভাগকে ১৭২১ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও আমাদের কাজ আরো ৫০টি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে। এই যেমন সাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রায় ১৫শ’ কোটি টাকার প্রকল্প আমরা গ্রহণ করতে যাচ্ছি। যেখানে স্বাস্থ্য হবে স্পন্সর মিনিস্ট্রি। কিন্তু পুরো কাজটি করতে হবে আইসিটি মিনিস্ট্রিকে।
বক্তব্যে ইতোমধ্যেই ইন্টার অপারেবল ডিজিটাল প্লাটফর্ম তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। এ বছরেই উদ্বোধন করা হবে। এর মাধ্যমে ক্রেডিট স্কোরিং, রেটিংসহ পুরো ফিন্যান্সিয়াল ইকো সিস্টেমে ট্র্যান্সপারেন্সি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলেও জানান পলক।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটি সভাপতি অধ্যাপক হোসেন মনসুর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সদস্য সচিব এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর।
এসময় তিনি অ্যাডভান্সড আইটিতে মাঠ পর্যায়ের সরকারী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের আহ্বান জানান। প্রযুক্তিবিদ সুফি ফারুক ইবনে আবু বকরের সঞ্চালনায় বুয়েটের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল জব্বার খান,বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. মুনাজ আহমেদ নূর,কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক মাহফুজুল ইসলাম আলোচনায় অংশ নেন।
(সাইবারবার্তা.কম/আইআই/৫ জুন ২০২১)