নিজস্ব প্রতিবেদক, সাইবারবার্তা: বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) আপাতত নতুন করে কোনো ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) লাইসেন্স দেবে না। এ জন্য প্রত্যাশী কোনো প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্সের জন্য আবেদন না করার অনুরোধ জানিয়েছে তারা। সংস্থাটি জানিয়েছে, নতুন নীতিমালা না হওয়া পর্যন্ত বিটিআরসি আইএসপি লাইসেন্স দেবে না।
রোববার বিটিআরসির এক নির্দেশনায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আইএসপিপ্রত্যাশী প্রতিষ্ঠানগুলোকে লাইসেন্সপ্রাপ্তির লক্ষ্যে কমিশন বরাবর আবেদন করা থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে।
সংস্থাটির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র সোমবার বলেন, নতুন করে আমরা আর আবেদন নিচ্ছি না। একটা নীতিমালা তৈরি হবে। কোথায়, কী সংখ্যা আছে এগুলো দেখা হবে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, এ বছরও বিটিআরসি দেড় শর বেশি প্রতিষ্ঠানকে নতুন করে আইএসপি লাইসেন্স দিয়েছিল। সে সময় প্রয়োজনীয়তা যাচাই না করেই লাইসেন্স দেওয়া নিয়ে আপত্তি উঠেছিল।
বিটিআরসি চারটি ক্যাটাগরিতে লাইসেন্স দিয়ে থাকে—নেশনওয়াইড, বিভাগভিত্তিক, জেলাভিত্তিক ও থানাভিত্তিক। তবে নেশনওয়াইড লাইসেন্স দেওয়া বেশ কিছুদিন ধরেই বন্ধ আছে। সংস্থাটির ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, দেশে বিভিন্ন ক্যাটাগরির লাইসেন্সধারী আইএসপি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১ হাজার ৮০৯টি। তবে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) বলছে, বিটিআরসির এই তথ্য হালনাগাদ নয়। লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান প্রায় ২ হাজার ৭০০ হবে। তবে অবৈধ মিলিয়ে সংখ্যাটি ছয় হাজারের কাছাকাছি।
বিটিআরসির হিসাবে, দেশে ১ কোটি ১১ লাখের বেশি আইএসপি ও পিএসটিএন সংযোগ রয়েছে। অন্যদিকে মুঠোফোন ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ১২ কোটি ৬০ লাখের মতো গ্রাহক। একজন মানুষ সর্বশেষ ৯০ দিনের মধ্যে একবার ইন্টারনেট ব্যবহার করলেই তাকে গ্রাহক হিসেবে ধরা হয়।
আইএসপি লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে এলাকাভিত্তিক চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তার বিষয়গুলো যেন বিবেচনা করা হয়, সে বিষয়ে ছয় মাস আগেই বিটিআরসিকে অনুরোধ জানিয়েছিল আইএসপিএবি। সংগঠনটির সভাপতি ইমদাদুল হক বিটিআরসি নতুন করে লাইসেন্স না দেওয়ার এখন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটিকে স্বাগত জানান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিটিআরসির আইএসপি লাইসেন্স দেওয়ার ওপর একটি গাইডলাইন রয়েছে। একটি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স পেতে হলে কী কী যোগ্যতা লাগবে সে বিষয়ে বলা আছে সেখানে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি যে এলাকায় সেবা দেবে, সেখানে চাহিদা আছে কি না আর কতগুলো প্রতিষ্ঠান সেখানে দিচ্ছে, অর্থাৎ প্রয়োজন আছে কি না, সেসব উল্লেখ নেই গাইডলাইনে।
ইমদাদুল হক বলেন, দেশে প্রচুর আইএসপি প্রতিষ্ঠান আছে। এক জায়গায় অনেক প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেওয়ার চেয়ে চাহিদা ও এলাকাভিত্তিক জনসংখ্যা বিবেচনা করা উচিত। যাতে গ্রাহক মানসম্মত সেবা পান।
(সাইবারবার্তা.কম/আইআই/৬ সেপ্টেম্বর ২০২২)