সাইবারবার্তা ডেস্ক: সুস্থ সাইবার প্রজন্ম গড়ে তুলতে অভিভাবকদের দায়িত্ব নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। এজন্য তৃণমূল থেকে পরিবার থেকে সচেতনতা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।
শুক্রবার সিসিএ ফাউন্ডেশনের ৬ষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বাংলাদেশে সাইবার অপরাধ প্রবণতা-২০২১’ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিজিটাল নিরাপত্ত বিষয়ে সকলকেই সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষকদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে সিসিএ ফাউন্ডেশনের মতো সংগঠনগুলোকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান মন্ত্রী।
এখনো অভিভাকদের এক শতাংশও ডিজিটাল ডিভাইসের প্যারেন্টাল কন্ট্রোল ব্যবহার করে না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমরা যতবেশি ডিজিটাল হবো ততবেশি ডিজিটাল অপরাধ বাড়বে। তাই সবাইকে এখনই এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল অপরাধের ধরন এত দ্রুত বদলে যায় যে, আইন পরিবর্তন করতে হবে। ২০১৮ সালে আইন করে ২০২১ সালে এসে দেখছি যে, সেই আইনে এমন কিছুই যুক্ত হয়নি যা এখন আছে। যেমন ২০১৮ এর সেই আইনে আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে সংজ্ঞায়িত করিনি। এখন এই মাধ্যমে কোনো অপরাধ হলে তাদের কাছে কোনো সাহায্য চাইলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আশানুরূপ উত্তর পাই না। আমাদের এখানে যেটা জঙ্গিবাদ তারা সেটিকে তাদের কমিউনিটি গাইডলাইনের আওতায় বাকস্বাধীনতা বলছে।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, গত কয়েক বছরে কেন্দ্রীয় ভাবে পুলিশের সক্ষমতা বেড়েছে। তাদের দক্ষতা বাড়লেও এই অপরাধের বিস্তার এখন গ্রামে পৌঁছে গেছে। তাই প্রতিটি থানায় অপরাধ সনাক্তে প্রযুক্তির ব্যবহারও বাড়াতে চেষ্টা করা হচ্ছে। এরইমধ্যে সাইবার অপরাধ দমনে দেশের প্রতিটি থানায় একটি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা ইউনিটের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে দাবি জানানো হয়েছে।
পাশাপাশি এসব অপরাধের বিচারকাজের জন্য বিচারপ্রক্রিয়ার সাথে জড়িত সব পক্ষ যেমন বিচারক ও আইনজীবীদের বিশেষ প্রশিক্ষণের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী।
সংগঠনের সভাপতি কাজী মুস্তাফিজের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নিয়ে ডিজিটাল সংস্কৃতিতে নীতিবোধ জাগ্রত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রথম আলোর যুব কর্মসূচি বিভাগের প্রধান মুনির হাসান। প্রান্তিক পর্যায়ে শিশুদের ডিজিটাল আসক্তি কাটাতে ভালোর জাগরণ গড়ে তুলতে আহ্বান জানান শিশুদের সাইবার সুরক্ষা বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা প্রটেক্ট আস কিডসের বাংলাদেশ প্রতিনিধি শারমিন নাহার লিনা।
একইভাবে ডিজিটাল দুনিয়ায় সুস্থ্য সংস্কৃতি গড়ে তুলতে পারিবারিক শিক্ষার পাশাপাশি রাষ্ট্রী প্রচার বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরামের মহাসচিব এম এ হক অনু। তিনি জানান, এসওপি তৈরির কাজ শেষ হলেই ই-কমার্সে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আসবে।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী আনিছ বলেন, দমনমূলক প্রক্রিয়ার পাশাপাশি সচেতনতা মডেল তৈরি করা দরকার।
সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রণে ২০১৬ সাল থেকে পুলিশের প্রত্যেকটি বিভাগ কাজ করছে বলে জানান পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ফরেনসিক) মো. মোস্তফা কামাল রাশেদ। তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাশাপাশি অনলাইন ক্রয় এবং গেমিং অ্যাপের মাধ্যমে সাইবার ক্রাইম বেড়েছে।
(সাইবারবার্তা.কম/আইআই/১৯ জুন ২০২১)