শুক্রবার, জানুয়ারি ৩১ ২০২৫ | ১৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - শীতকাল | ৩০শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি

অনলাইনে বিনিয়োগ করে লাভের প্রলোভন, ১৩ লাখ টাকা নিয়ে সিআইডির হাতে দুজন ধরা

:: নিজস্ব প্রতিবেদক, সাইবারবার্তা.কম :: 

মোবাইল ফোনে অ্যাপসের মাধ্যমে বিনিয়োগ ও অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে ১৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি)। বুধবার রাজধানীর ডেমরা থানাধীন মাতুয়াইল মোঘলনগর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার পাপ্পু কুমার সেন (২৮) ও ভোলার মো. কাওসার (২৭)।  বৃহস্পতিবার সিআইডির একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। 

সিআইডির ভাষ্য, গ্রেপ্তার দুজনের কাছ থেকে অপরাধকাজে ব্যবহৃত এক হাজার ১৫০টি সিম কার্ড, একটি হার্ডডিস্ক ও মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য আলামত জব্দ করা হয়েছে। 

বাদীর বরাত দিয়ে সিআইডি বলছে, ভুক্তভোগী ব্যক্তি নিজ নামে ফেসবুক আইডি ব্যবহারকালে আন্তর্জাতিক স্টক মার্কেটের একটি বিজ্ঞাপন দেখতে পেয়ে সেটির ওয়েবলিংকে ঢোকেন। এরপর অজ্ঞাত একটি হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার থেকে বাদীর ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে কিছু মেসেজ পাঠায় এবং কাজ দেয়। বাদীর হোয়াটসঅ্যাপে একটি একাউন্ট খোলার নির্দেশনা আসে। সেই অনুযায়ী তাদের অ্যাপসের লিংকে ঢুকে নাম, এনআইডি, মোবাইল নাম্বার দিয়ে একাউন্ট করেন ভুক্তভোগী। ওই অ্যাপসে তার একটি ডিজিটাল ওয়ালেট তৈরি হয়। 

আসামিরা বাদীকে তাদের দুটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ এ যুক্ত করে নেয়। ওই  হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বাদীর পরিচিত অনেকেই যুক্ত ছিল এবং সেখানে ট্রেডিং বিষয়ে কথাবার্তা হতো।  

সেই গ্রুপগুলোতে বিভিন্ন নামে বিভিন্ন মোবাইল ফোন নাম্বার দেখা যায়। আসামিদের কথায় বিশ্বাস করে মামলার বাদী বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্টে সর্বমোট ১৩ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮৬ টাকা বিনিয়োগ করে। উক্ত এ্যাপস এ আসামীদের কথামতো ট্রেড করার পর ডিজিটাল ওয়ালেটে তার টাকা বাড়তে থাকে এবং একপর্যায়ে লাভসহ প্রায় ৬৪ লাখ পাঁচ হাজার ২৮৭টি টাকা প্রদর্শিত হয়। 

আসামিরা বাদীর নিজ নামীয় সিটি ব্যাংক, কারওয়ান বাজার ব্রাঞ্চের মাধ্যমে পাঁচ হাজার টাকা ডিপোজিট করে। আসামিদের কাছে বাদী তার বিনিয়োগকৃত টাকা ফেরৎ চাইলে তারা টাকা ফেরৎ না দিয়ে আরো টাকা বিনিয়োগ করতে বলে। এক পর্যায়ে তিনি  প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে ধানমন্ডি থানার মামলা করেন।  

প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে বিভিন্ন জায়গা থেকে কোন রকম ছবি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং এনআইডি কার্ড ছাড়াই সামান্য কিছু বেশী টাকা দিয়ে অবৈধভাবে মোবাইল সিমকার্ড সমূহ সংগ্রহ করে। সেই সিমকার্ডগুলো তারা বিভিন্ন টেলিগ্রাম, হোয়াটসএ্যাপ গ্রুপসহ অন্যান্য মাধ্যমে দেশি-বিদেশি ক্লায়েন্টদের নিকট শুধুমাত্র মোবাইল নাম্বারগুলো উচ্চ মূল্যে বিক্রি করে থাকে। 

দেশি-বিদেশি আসামিরা উক্ত অবৈধ মোবাইল নাম্বার দিয়ে টেলিগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলে উক্ত গ্রুপে বিভিন্ন ব্যক্তিদের যুক্ত করে তাদেরকে অধিক মুনাফা দেয়ার লোভ দেখিয়ে বিনিয়োগ করার জন্য অফার দিতে থাকে। ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা অধিক মুনাফা লাভের আশায় আসামীদের দেয়া ফাঁদে পড়ে এবং তাদের তৈরী অ্যাপসে নিজেদের নাম, মোবাইল নাম্বার, এনআইডি কার্ডের তথ্য দিয়ে একাউন্ট খুলে সেখানে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে। 

আসামিরা ভুক্তভোগীদের কোনো মুনাফা না দিয়ে কৌশলে কোটি কোটি টাকা প্রতারণা করে বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়ে অবৈধভাবে দেশের বাইরে পাচার করে দিচ্ছে। 

(সাইবারবার্তা.কম/২৩জানুয়ারি২০২৫/১৩২৩)

শেয়ার করুন

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
আরও পড়ুন

নতুন প্রকাশ