:: সাইবার বার্তা ডেস্ক ::
খণ্ডকালীন চাকরি খোঁজার জন্য প্রথমবারের মতো দেশীয় প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়েছে। ‘ইনস্টা জব’ নামে এই প্ল্যাটফর্ম চালু করেছেন দেশের তরুণ উদ্যোক্তা উম্মে কুলসুম পুতুল। সঙ্গে আছেন আফিয়া খাতুন জেবা। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সময় ও দক্ষতা অনুযায়ী নিজের মতো কাজ খুঁজে নেওয়া যাবে। শুধু তা-ই নয়, নিজের প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিগত কাজে লোক প্রয়োজন হলে সেটিও পাওয়া যাবে এই অ্যাপের মাধ্যমে।
শিক্ষার্থীদের জন্য এটি বেশ কাজে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ বিষয়ে উম্মে কুলসুম পুতুল বলেছেন, ‘শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি আয়ের সুযোগ পাবেন। ভবিষ্যতে তাঁরা অর্থনৈতিক দিক থেকে স্বাবলম্বী হতে পারবেন।’ এই প্ল্যাটফর্ম দুটি অ্যাপ দিয়ে ব্যবহার করা যায়। যারা পার্টটাইম কাজ করতে চান, তাদের জন্য ‘ইনস্টা জব’; আর যারা কর্মী খুঁজতে চান, তাদের জন্য আছে ‘ইনস্টা হায়ার’। এই দুটি অ্যাপের মাধ্যমে কর্মী এবং কর্মদাতা সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন।
শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন সুযোগ ইনস্টা জবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা প্রাথমিকভাবে প্রতি ঘণ্টায় ১৬৯ টাকা আয় করতে পারবেন। পরবর্তী সময়ে তাদের প্রোফাইলের ওপর ভিত্তি করে পারিশ্রমিক বাড়ানো হবে। নিয়মিত এই অ্যাপের মাধ্যমে কাজ করলে একজন শিক্ষার্থী প্রাথমিকভাবে মাসে ১৫ হাজার টাকা আয় করার সুযোগ পাবেন। এটি তাঁদের আয়ের পথ খুলে দেওয়ার পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রের স্বাধীনতাও দেবে।
ব্যবসায়ীদের জন্য সুবিধা ব্যবসায়ীদের অনেক সময় অতিরিক্ত কর্মীর প্রয়োজন হয়; বিশেষ করে সপ্তাহান্তে বা বিশেষ দিনের জন্য এই চাহিদা বেড়ে যায়। ইনস্টা হায়ার প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা মাত্র ২ ঘণ্টার জন্য কর্মী নিয়োগ করতে পারবেন, যা তাঁদের খরচ কমাবে। মাসে ১৬ ঘণ্টায় এই প্ল্যাটফর্মে খরচ হবে মাত্র ২ হাজার ৭০২ টাকা। এটি একজন ব্যবসায়ীর জন্য ভালো সুযোগ।
ইনস্টা জবের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বর্তমানে একটি ছোট দল নিয়ে কাজ করছে ইনস্টা জব। কিন্তু তাদের লক্ষ্য, এটিকে দেশের অন্যতম বড় এবং জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে তোলা। উম্মে কুলসুম পুতুল ও আফিয়া খাতুন জেবার পরিকল্পনা, তাঁরা আগামী তিন বছরের মধ্যে কমপক্ষে ৩০ হাজার সক্রিয় কর্মী নিয়ে প্ল্যাটফর্মটি চালু রাখতে চান।
যেভাবে শুরু ইনস্টা জবের যাত্রা ইনস্টা জবের চেয়ারম্যান ও ফাউন্ডার উম্মে কুলসুম পুতুল। এই প্ল্যাটফর্মের যাত্রা নিয়ে তিনি জানান নিজের গল্প। একদিন নিজের সন্তানসহ একটি অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন। গাড়ি থেকে নামার সময় তাঁর হাতে থাকা ফিডারের কর্কটি পড়ে যায়। একজন পথচারী এসে সেটি তুলে দেন পুতুলের হাতে। তিনি ভাবতে শুরু করলেন, যদি এমন কেউ থাকে, যাকে কল করলে সাহায্য পাওয়া যায়! মূলত এখান থেকে ইনস্টা জবের পরিকল্পনা শুরু। এরপর তিনি নিজেই শুরু করে দিলেন ইনস্টা জবের পথচলা। এ যাত্রায় পুতুলের সঙ্গে ছিলেন বোন এবং কাছের কয়েকজন বন্ধু। সেই গ্রুপে ছিলেন আটজন মেয়ে। কেউ তাকে অর্থ দিয়ে সহায়তা করেছেন, কেউ সময় দিয়ে আবার কেউ সাহস দিয়ে পাশে থেকেছেন। পরবর্তী সময়ে তার সঙ্গে যোগ দেন কো-ফাউন্ডার আফিয়া খাতুন জেবা।
তরুণদের অনেকে চান, পার্টটাইম চাকরি করে নিজের খরচ বা পরিবারকে সহযোগিতা করতে। কিন্তু দক্ষতা ও অঞ্চলভেদে পার্টটাইম চাকরির সুযোগ সব সময় সবাই পান না। ইনস্টা জব সেই সুযোগ তৈরির সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে। এটি পুরো দেশের তরুণদের পড়াশোনার পাশাপাশি অর্থ উপার্জনের পথ খুলে দেবে। এতে একজন তরুণ তাঁর আর্থিক প্রয়োজনীয়তা মেটানোর পাশাপাশি কর্মদক্ষ হয়ে উঠবেন।
(সাইবারবার্তা.কম/০৭জানুয়ারি’২৫/১৭২৪)