মঙ্গলবার, আগস্ট ৫ ২০২৫ | ২১শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - বর্ষাকাল | ১০ই সফর, ১৪৪৭ হিজরি

সুপ্রিমকোর্টে গরুর মাংস রান্নার প্রতিবাদ নিয়ে তুমুল সমালোচনা 

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাইবারবার্তা: সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির ক্যান্টিনে গরুর মাংস রান্না করায় প্রতিবাদ জানিয়েছে আইনজীবী ঐক্য পরিষদ সুপ্রিমকোর্ট শাখা এবং বিজয়া পূর্ণমিলনী ও বাণী অর্চনা পরিষদ। তারা গত রোববার (৩০ মে) এ সংক্রান্ত একটি আবেদন সমিতিতে জমা দিয়েছেন। সেখানে গরুর মাংস ‘রান্না ও পরিবেশন’ বন্ধ করতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ( বার এসোসিয়েশন) বর্তমান কমিটিকে আহ্বান জানানো হয়েছে।

 

বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে এই ধরনের আবেদন করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে। সমালোচকরা বলছেন, বাংলাদেশে  সব ধর্মের মানুষের জন্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশ বিরাজ করছে। এই শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে অস্থিতিশীল করতে এসব করা হচ্ছে। সুপ্রিমকোর্ট নির্দিষ্ট কোনো সম্প্রদায়ের জন্য নয়, সব ধর্মের মানুষের জন্য আদালত এলাকা উন্মুক্ত। সেখানে কেন এ ধরনের সংস্কৃতি থাকবে।

 

গরুর মাংস রান্না বন্ধের আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন- আইনজীবী ঐক্য পরিষদ সুপ্রিমকোর্ট শাখার সভাপতি বিভাস চন্দ্র বিশ্বাস, সম্পাদক অনুপ কুমার সাহা, আইনজীবী সমিতির বিজয়া পুনমির্লনী ও বাণী অর্চনা পরিষদের আহ্বায়ক জয়া ভট্টচার্য ও সদস্য সচিব মিন্টু চন্দ্র দাস। আবেদনে বলা হয়, ‘আমরা নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানতে পারলাম যে, গত ২৯ ও ৩০ মে রাতে সুপ্রিমকোর্ট বার ক্যান্টিনে গো মাংস রান্না করা হয়, রাতে তা খাবারের জন্য পরিবেশন করা হয়। ’

 

তারা বলেন, ‘সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি ঐতিহ্যগতভাবেই এর সৃষ্টিলগ্ন হতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে কখনই গো মাংস রান্না ও পরিবেশন করা হয় নাই। হঠাৎ করে এই ধরনের তৎপরতায় আমরা বিস্মিত ও হতবাক। আমরা সংশ্লিষ্টদের এহেন তৎপরতার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

 

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ জামাল ফেসবুকে গরুর মাংস বন্ধের আবেদনের কপি পোস্ট করে লিখেছেন, “সুপ্রিম কোর্টে সব ধর্মের লোকই আছে। বার ক্যান্টিনে সব ধর্মের লোকই সকালে নাস্তা ও দুপুরে লাঞ্চ করে। ক্যান্টিনে বিভিন্ন আইটেম রান্না হবে এটাই স্বাভাবিক। যার যে আইটেম পছন্দ হবে সেটাই খাবে। সুপ্রিম কোর্ট বার ক্যান্টিনে গরুর মাংস রান্নার প্রতিবাদ দেখে অবাক হলাম!!”

 

শেখ জামা‌লের পোস্টে মন্তব‌্য প‌ড়ে‌ছে শতা‌ধিক।  শঙ্কর মৈত্র নামে একজন লিখেছেন, “আমিও অবাক! যার যা পছন্দ সেটা খাবে। এতো গোঁড়ামি একবিংশ শতাব্দীতে!”

 

এফ এম বায়েজিদ লিখেছেন, “পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া বাঁধিয়ে, সাম্প্রদায়িক ইস্যু দাঁড় করাতে চাচ্ছে। লক্ষণ শুভ নয়।”

 

জুনাইদ আলী সাকি লিখেছেন, “শুকর, সাপ, ব্যাঙ, কচ্ছপ, বাদুড়, আরও যা যা সারা বিশ্বের মানুষ খায় সবই রান্না করুক। এভাবে বিখ্যাত হয়ে উঠতে পারে সুপ্রিম কোর্টের ক্যান্টিন। সারা পৃথিবী থেকে মানুষ আসবে, রান্না করা বিভিন্ন প্রানীর মজাদার মাংস খেতে! পৃথিবীর বুকে উদার ধর্ম নিরপেক্ষতা প্রমান হবে।

তয়, কাস্টমারদের পছন্দের খাবার গরু মাংস বন্ধ করতে হবে কেন? গরু মাংসের চাহিদা আছে বলেই তো রান্না করেছে। শুকর, কচ্ছপ, সাপ, ব্যাঙ, বাদুড়ের মাংসের বিক্রি করে লাভ করতে পারলে, সেটা শুরু করুক।”

 

আইনজীবী ও সাংবাদিক প্রশান্ত কর্মকার লিখেছেন, “আমিও অবাক। ওটা (গরুর মাংস) কেন রান্না হয় না।”

 

সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব‌্যরিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল এই প্রতি‌বেদক‌কে ব‌লেন, “এ‌টি আমা‌দের সমিতির অভ‌্যন্ত‌রীণ বিষয়। আমরা নি‌জেরা সমাধান করবো। এ নি‌য়ে মন্তব‌্য কর‌তে চাই না। এটি সংবাদ মাধ্যমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয়ও না যে এটি নিয়ে প্রতিবেদন করতে হবে।”

 

(সাইবারবার্তা.কম/এমএ/২ জুন ২০২১)

শেয়ার করুন

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
আরও পড়ুন