:: সাইবার বার্তা ডেস্ক :: সরাসরি থানায় যাওয়া ছাড়াও মামলা করা যাবে অনলাইনে। নাগরিকদের ঝামেলা কমাতে সংশ্লিষ্টদের এমন নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নিরাপত্তা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির পর্যালোচনায় বসেন উপদেষ্টা। সেখানে তিনি এ নির্দেশনা দিয়েছেন। এছাড়া দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে জানিয়ে এ থেকে সতর্ক থাকতে সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি, পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম, বিজিবি, র্যাব, ডিএমপি, কোস্ট গার্ড ও বিশেষ শাখার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
৯৯৯-এর মতো পুলিশেরও একটি কল নাম্বার রাখার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এই নম্বরের মাধ্যমে দেশের যেকোনো স্থান থেকে অভিযোগকারী এফআইআর করতে পারেন।’ তিনি বলেন, ‘এটি মামলা করার ক্ষেত্রে ঝামেলা কমাবে।’
‘পুলিশের বিশেষ কল সেন্টার এজন্য স্থাপন করা উচিত, যাতে অনলাইনে মামলা দাখিলসংক্রান্ত যেকোনো প্রশ্নের উত্তর সেখান থেকে পাওয়া যায়।’ তিনি বলেন, ‘যারা অনলাইনে মামলা করতে সমস্যায় পড়বেন, তারা সহজে এই কল সেন্টার থেকে সহায়তা নিতে পারবেন।’ বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
এছাড়া পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য একটি কমান্ড সেন্টার গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে সর্বোচ্চ আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে, যাতে তারা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে। আমাদের অবশ্যই একটি কমান্ড সেন্টার বা কমান্ড সদর দপ্তর স্থাপন করতে হবে, যা পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর মধ্যে সমন্বয় করবে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির মতো আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। এ বছর দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাউকে বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা সৃষ্টির সুযোগ দেয়া যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য বিশাল অংকের অর্থ ব্যয় করছে এবং মিথ্যা ও অপতথ্য ছড়াচ্ছে।’ দেশবাসীকে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সবাইকে এ অপপ্রচারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।’
প্রধান উপদেষ্টা নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধানদের মানবাধিকার সুরক্ষার নির্দেশ দেন এবং ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর যেকোনো আক্রমণ প্রতিহত করতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান। এছাড়া পুলিশকে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘এমনভাবে অভিযান পরিচালনা করতে হবে, যাতে পবিত্র রমজান মাসে খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখা যায়।’
তিনি জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড ও নৃশংসতার ঘটনায় হওয়া মামলাগুলোর বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন এবং কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হন, তা নিশ্চিত করতে বলেন।
(সাইবারবার্তা.কম/০৪ফেব্রুয়ারি২০২৫/১৩৪৯)