শনিবার, জানুয়ারি ১৮ ২০২৫ | ৪ঠা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - শীতকাল | ১৭ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

ফেসবুকে নারী সেজে ২ বছর ধরে প্রতারণা

সাইবারবার্তা ডেস্ক: ফেসবুকে ভুয়া একাউন্ট খুলে মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে ফোনে নারীকণ্ঠে মো. আইয়ুব খান (২৮) নামে এক এনজিওকর্মীর সঙ্গে কথা বলে তাকে ডেকে নেয়া হয়। পরে তাকে জিম্মি করা হয় এবং টাকা আদায় করে পিটিয়ে আহত করা হয়।

 

ঘটনাটি ঘটেছে ফেনীর সোনাগাজী-কাশ্মীর বাজার সড়কের পৌরসভার চর গনেশ এলাকায়। এ ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে আটক করে মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে। এই প্রতারক চক্র গত দুই বছর থেকে এ ধরনের প্রতারণা করে যাচ্ছে। অনেকে লোকলজ্জার ভয়ে প্রকাশ না করে নীরবে সয়ে গেছে। ঘটনার পর কাউকে জানালে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়।

 

ভুক্তভোগী আইয়ুব খান জানান, জিম্মি করে তার কাছ থেকে ১২ হাজার ৪০০ টাকা, একটি মুঠোফোনসহ তার সঙ্গে থাকা গুরুত্বপূর্ণ কিছু জিনিস ছিনিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্রের সদস্যরা। পরে তাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে ফেলে চলে যায় তারা। বর্তমানে তিনি ফেনী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

 

আইয়ুব খান সাজেদা ফাউন্ডেশন নামের একটি এনজিওর চট্টগ্রামের ভুজপুর শাখার অফিস সহকারী। তার বাড়ি ভুজপুর থানার জজখোলা মহানগর এলাকায়। এ ঘটনায় ওই এনজিও কর্মী বাদী হয়ে ইমাম হোসেন, মশিউর রহমান, ফখরুল ইসলাম, আবু বক্কর ছিদ্দিকসহ অজ্ঞতানামা কয়েকজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। এরপর তথ্য সংগ্রহ করে ইমাম, মশিউর ও ফখরুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা সোনাগাজীর স্থানীয় ছাত্রলীগ কর্মী বলে জানায় এলাকাবাসী।

 

এ বিষয়ে সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুল মোতালেব চৌধুরী বলেন, গ্রেপ্তার তিনজন ছাত্রলীগের কর্মী। তবে তাদের কোনো পদ-পদবি নেই। সোনাগাজী মডেল থানার পুলিশ জানায়, আসামিরা ফেসবুকে নারীর ছবি ব্যবহার করে বিভিন্নজনকে বন্ধু হওয়ার আমন্ত্রণ জানায়। এরপর তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে মুঠোফোন নম্বর নেন। মুঠোফোনে নারীকণ্ঠে কথা বলে সোনাগাজীতে ডেকে এনে জিম্মি করে টাকা, মুঠোফোন ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে মারধর করে ছেড়ে দেন।

 

আইয়ুবের সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটে। ফোনে কল পেয়ে আইয়ুব আসামিদের বলা জায়গায় গেলে ইমাম, মশিউর, ফখরুল, ছিদ্দিকসহ পাঁচ থেকে ছয়জন তাকে আটক করে বেদম মারপিট করেন। তার কাছ থেকে নগদ টাকা, মুঠোফোনসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেন।

 

আজকের সময় পাঠক ফোরাম সোনাগাজী শাখার সভাপতি শহীদুল ইসলাম বলেন, পারিবারিক জবাবদিহি না থাকায় উঠতি বয়সের তরুণরা সংঘবদ্ধ হয়ে এসব অপকর্ম করে যাচ্ছে। বিভিন্ন বিদেশি চলচ্চিত্র, নাটক দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে খারাপ কাজে জড়িয়ে পড়ছে। এলাকায় গড়ে উঠছে কিশোর গ্যাং নামে নতুন আতঙ্ক। এখনই নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে তরুণরা আরো উশৃঙ্খল হবে।

 

সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা একইভাবে আরও কয়েকজনের কাছ থেকে টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন।

 

(সাইবারবার্তা.কম/আইআই/২ জুন ২০২১)

শেয়ার করুন

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
আরও পড়ুন

নতুন প্রকাশ