সাইবারবার্তা ডেস্ক: মার্কিন জ্বালানী তেল সরবরাহ সেবা কলোনিয়াল পাইপলাইনে সাইবার আক্রমণ হয়েছে, গোটা সেবা অফলাইনে। দ্রুত সমাধান করা না গেলে গোটা মার্কিন পূর্ব উপকূল তেল সঙ্কটে পড়বে- এর সবই পুরোনো খবর। এবার নতুন সব চমকপ্রদ খবর মিলছে আক্রমণকারী হ্যাকার সংগঠনটি সম্পর্কে।কলোনিয়াল পাইপলাইন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ অবকাঠামো। দেশটির পূর্বাঞ্চলে সরবরাহ করা মোট জ্বালানী তেলের শতকরা ৪৫ ভাগই এই প্রতিষ্ঠানের পাইপলাইনের ওপর নির্ভরশীল। এর মধ্যে রয়েছে অকটেন, গাড়ির পেট্রল (যুক্তরাষ্ট্রে পরিচিত গ্যাসোলিন বা গ্যাস নামে) এবং জেট ফিউয়েল। এই সব ধরনের তেলের সরবরাহ সেবাই এখনও বন্ধ রয়েছে।এই পাইপলাইন টেক্সাস থেকে তেল নিয়ে নিউ জার্সি পর্যন্ত সরবরাহ করে এবং এর বিস্তৃতি প্রায় নয় হাজার কিলোমিটার। তেলের বাজার বিষয়ে স্বাধীন বিশ্লেষক গৌরভ শার্মা বিবিসিকে বলেন, “সরবরাহ বন্ধ থাকায় তেলের মজুদ এখন জমছে টেক্সাসের রিফাইনারিগুলোয়।”
“মঙ্গলবারের মধ্যে যদি এর সুরাহা না হয়, বড় ধরনের বিপদ অপেক্ষা করছে তাদের জন্য। প্রথম যে এলাকা বিপদে পড়বে তার মধ্যে রয়েছে আটলান্টা এবং টেনেসি। এরপর ধারাবাহিক প্রভাব গিয়ে পড়বে নিউ ইয়র্ক পর্যন্ত।”মোটামুটিভাবে এই হচ্ছে এই সাইবার হামলায় তেলের বিপদ। প্রতিবেদনে বিবিসি অন্য একটি বিষয়ের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, সেটি সাইবার নিরাপত্তার।হ্যাকারদের কর্পোরেট সংস্কৃতি এখন পর্যন্ত অনুমান, এই সাইবার আক্রমণের পেছনে রয়েছে ‘ডার্কসাইড’ নামে একটি হ্যাকার দল। একাধিক সূত্র বলছে, ডার্কসাইড বৃহস্পতিবার প্রথম কলোনিয়াল পাইপলাইনের আইটি নেটওয়ার্কে প্রবেশ করে এবং প্রায় একশ’ গিগাবাইট ডেটা এনক্রিপ্ট করে। সেই ডেটা তারা কিছু সাইট এবং সার্ভারে রেখেছে যা যে কোনো সময় ফাঁস করে দেওয়া সম্ভব।
বিবিসির গবেষণায় এই হ্যাকার দলটি সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছে। এদের একটি ওয়েবসাইট আছে যেটির নাগাল সাধারণ লোকজন পাবেন না। ডার্ক ওয়েবে থাকা ওই সাইট একেবারে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের আদলে চালাচ্ছে ডার্কসাইড। কেবল সংগঠনটি যে কর্পোরেট স্টাইলে চালাচ্ছে ডার্কসাইড তা-ই নয়, পুরোদস্তুর হ্যাকিং ইকোসিস্টেম বা বাস্তুতন্ত্র তৈরির বিষয়টিও উড়িয়ে দিচ্ছেন না সাইবার নিরাপত্তায় অভিজ্ঞ লোকজন।
শর্ত থাকে যে, সফল হ্যাকিংয়ের পর অর্জিত মুক্তিপণের একটি অংশ ডার্কসাইডকে দিতে হবে।গত মার্চ মাসেই ডার্কসাইড তাদের এনক্রিপশন টুল আপডেট করেছে। এখন আগের চেয়ে অনেক দ্রুত ডেটা এনক্রিপ্ট করা সম্ভব। এ বিষয়ে তারা এমনকি প্রেস রিলিজ পাঠিয়েছিল পত্রিকাগুলোয়, প্রতিবেদকদের আহ্বান জানিয়েছিল তাদের নতুন কৌশল পরখ করে দেখার জন্য।এখানেই থেমে থাকেনি ডার্কসাইড। নিজেদের ওয়েবসাইটে তাদের একটি ‘এথিকস পেইজ’ও আছে, যেখানে পরিষ্কার বলা আছে কোন কোন ধরনের প্রতিষ্ঠানে তারা আক্রমণ করে না।এই সময়েই কেন হলো এই হামলা