নিজস্ব প্রতিবেদক, সাইবারবার্তা: ডিজিটাল বাণিজ্যের নামে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন ই-কমার্স সাইট নিরাপদ ডট কমের সিইও শাহরিয়ার খান। আদাবর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রতারণার শিকার জনৈক ইশতিয়াক আহমেদে দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।
মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার। তিনি জানিয়েছেন, গ্রেফতারের সময় তার ব্যবহৃত ৫টি কম্পিউটার, ২ টি ল্যাপটপ, ২ টি হার্ড ডিস্ক, বিভিন্ন ব্যাংকের ১৩ টি চেক বই, ১৩টি ডেভিড/ক্রেডিড কার্ড, ২৩ টি সীম কার্ড, সার্ভারের তথ্য ও অন্যান্য কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতার বিষয়ে হাফিজ আক্তার জানিয়েছেন থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি সাইবার ক্রাইম বিভাগ এই মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তে যথাযথ তথ্যের ভিত্তিতে ১১ জুলাই, ২০২১ (রবিবার) রাজধানির শান্তিনগর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে শাহরিয়ার খানকে গ্রেফতার করে ডিবি সাইবারের অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।
গ্রেফতারকৃত শাহরিয়ারের অপরাধ বিষয়ে তিনি আরো জানিয়েছেন, সে ২০২০ সালের আগস্ট মাসে নিরাপদ ডট কম নামে একটি অনলাইন ভিত্তিক ই- কমার্স সাইট খুলে বিভিন্ন চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাধারণ গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে এবং তাদের কাছ থেকে একটি পেমেন্ট গেটওয়ের (এসএসএল কমার্স) মাধ্যমে অগ্রিম অর্থ হাতিয়ে নেয়। তারা ৫০% ডিসকাউন্টে মোবাইল ফোন সেট, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফ্রিজ, ওভেনসহ অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক্স আইটেম ৩০ দিনের মধ্যে হোম ডেলিভারি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গ্রাহকদের প্রলোভিত করে।
তিনি আরও বলেন, তাদের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার এবং ১ মাসের মধ্যে প্রায় ১২ হাজার অর্ডার পায়। যার মাধ্যমে প্রায় ৭-৮ কোটি টাকা তার ব্যাংক হিসাবে যুক্ত হয়। যারা পণ্য অর্ডার করেছেন তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছাত্র ও অল্প বেতনের চাকরিজীবি। প্রাথমিক অবস্থায় তারা কিছু পণ্য ডেলিভারি করে সেই গ্রাহকদের দিয়ে তাদের পেজে পজিটিভ রিভিউ পোস্ট করিয়ে সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপন করে।
পরবর্তীতে অধিক সংখ্যায় অর্ডার এবং অগ্রিম অর্থ পেলে তারা পণ্য ডেলিভারি না দিয়ে গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা শুরু করে। অনেক দিন পেরিয়ে গেলে গ্রাহকরা যখন বুঝতে পারেন তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন তখন বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম ও মিডিয়ার মাধ্যমে এর প্রতিকার দাবি করতে থাকেন।
যারা চাপ প্রয়োগ করতে পেরেছেন তাদেরকে টাকা রিফান্ডের কথা বলে ব্যাংক চেক প্রদান করলেও টাকা উত্তোলন করতে পারেননি। বারবার চেক ডিজঅনার হওয়ার অভিযোগ আসতে থাকলে প্রতারক গ্রাহকদের সাথে সকল ধরণের যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায়। এ ঘটনায় অসংখ্য ভুক্তভোগীদের পক্ষে জনৈক ইশতিয়াক আহমেদ বাদি হয়ে আদাবর থানায় উক্ত মামলা দায়ের করেন।
(সাইবারবার্তা.কম/আইআই/১৪ জুলাই ২০২১)