Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the wordpress-seo domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/cyberbar42/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114

Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the soledad domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/cyberbar42/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114
করোনায় অনিয়ন্ত্রিত ইন্টারনেট নির্ভরতা: সাইবার ঝুঁকিতে শিশুরা - CyberBarta.com
  রবিবার, নভেম্বর ২৪ ২০২৪ | ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - হেমন্তকাল | ২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

করোনায় অনিয়ন্ত্রিত ইন্টারনেট নির্ভরতা: সাইবার ঝুঁকিতে শিশুরা

আবদুল্লাহ নাঈম, সাইবার বার্তা:  করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে বিশ্বজুড়েই শিশুদের ইন্টারনেট ব্যাবহার বেড়েছে বহুগুণে। স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় অনলাইন ভিডিও গেমস, ইউটিউব ব্রাউজিং কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষণে ক্ষণে আপডেট শেয়ার করে সময় কাটাচ্ছে শিশুরা। শিক্ষার্থী তো বটেই, পরিবারের প্রায় প্রত্যেক সদস্য এর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এই নির্ভরশীলতা বিশেষত শিশুদের জন্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। কারণ শিশুরা এই প্রযুক্তির ব্যবহারবিধি সম্পর্কে অজ্ঞাত। ফলে ওরা মানসিক সমস্যা, আচরণগত পরিবর্তন, ইন্টারনেটে আসক্তিসহ সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছে। এরমধ্যেই অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনলাইনে ক্লাস পরিচালনা করছে, তাই চাইলেও শিশুদের হাত থেকে ডিভাইস কেড়ে নিতে পারছেন না অভিভাবকরা।

 

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল ট্রমা কাউন্সিল সেন্টারের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ইসরাত শারমিন রহমান সাইবার বার্তা কে বলেন, অনেক বাবা-মাই তাদের কাছে আসছেন যারা বলছেন যে, প্রযুক্তি আসক্তি বাড়ছে।
রাজধানীর মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় নামে একটি স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী সুমাইয়া রাইদা। স্কুল বন্ধ থাকায় ঘরে থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে পড়েছে। সে বলে “বিরক্ত লাগে এখন। ফোন নিয়ে বসে থাকতে থাকতে অনেকটা এডিক্টেড হয়ে গেছি। কম্পিউটার দেখি, ল্যাপটপ দেখি, গান শুনি, পড়াশোনা অবশ্য হচ্ছেনা।

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের ইন্টারনেট আসক্তি ও নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। করোনা মহামারির এই সময়ে বিশ্বজুড়েই শিশুরা অনলাইনে ক্লাস করছে। এ জন্য নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। করোনায় শিশুদের স্বাস্থ্যসচেতনতার দিক বিবেচনা করলে দেখা যাবে, ওরা আগের মতো বাইরে যেতে পারছে না। এ জন্য অবসর সময়ে ইন্টারনেটে গেম খেলা, কার্টুন দেখাসহ বিনোদনের বিভিন্ন উৎস খুঁজছে। এই সময়টা তারা ইন্টারনেট ব্রাউজিং করছে ভালো-খারাপ না বুঝে কোনো রকম অভিজ্ঞতা ছাড়াই। এতে শিশুরা সাইবার বুলিংয়েরও শিকার হচ্ছে দ্বিগুণ হারে।

 

করোনাকালে ১০ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদের ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর ইউনিসেফ একটি জরিপ করেছে। সেখানে ২৩৯টি স্কুলের এক হাজার ২৮১ শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক পরিসংখ্যানে বেশ উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে। জরিপে অংশ নেওয়া ৯৪ শতাংশ শিশুর সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট আছে। এদের মধ্যে ৪৯ শতাংশ ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। ৩৭ শতাংশ শিশু বাবা-মায়ের ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। জরিপে ১১ বছরের নিচে ২৫ শতাংশ শিশুকে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে দেখা গেছে। ৬৫ শতাংশ শিশু নিজের পৃথক কক্ষে ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। যেখানে তারা ইন্টারনেট ব্যবহারের সর্বোচ্চ সুবিধা পাচ্ছে। নিজের ব্যক্তিগত কক্ষ হওয়ায় ইন্টারনেটের ব্যবহারবিধি নিয়ে তাদের প্রশ্নের সম্মুখীনও হতে হচ্ছেনা।

 

ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলে গড়ে প্রতিদিন ৯৪ শতাংশ শিক্ষার্থী ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, সম্প্রতি ৩২ শতাংশ ছেলে ও ২৪ শতাংশ মেয়ে (শিশু) সাইবার বুলিংয়ের শিকার। তাদের মধ্যে ২৬ শতাংশেরই সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার, রিপোর্ট, ফেক অ্যাকাউন্ট, আনওয়ান্টেড কনটেন্ট সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। ৬৫ শতাংশ শিশু জানে কিভাবে মেসেজ ব্লক করতে হয়। ৪৫ শতাংশ শিশু প্রাইভেসি সেটিংস এবং ৪২ শতাংশ রিপোর্ট অপশন সম্পর্কে জানে।

 

গত এক বছরে ১০.৮ শতাংশ শিশু তাদের ব্যক্তিগত তথ্য অনলাইনে অপরিচিত ব্যক্তিদের কাছে শেয়ার করেছে। ৫৭ শতাংশ শিশু অনলাইনে অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থেকে তাদের ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করেছে। ১৯ শতাংশ শিশু অপ্রীতিকর মেসেজ পেয়েছে, ১২ শতাংশ শিশু সেক্সুয়াল ছবি/ভিডিও এবং ৫ শতাংশ শিশুকে সেক্সুয়াল প্রস্তাবে সম্মতি দিতে জোর করা হয়েছে।

 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ফরিদা খানম বলেন, করোনাকালে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সুবাদে শিশুদের মধ্যে ইন্টারনেট আসক্তি বেড়ে যাচ্ছে। স্কুল খোলা থাকলে শিক্ষক, পবিবার ও বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে তাদের একটা বন্ডিং কাজ করত। অনলাইন ক্লাসে সেটা নেই। এ জন্য শিশুরা ইন্টারনেটে গেম খেলায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। পাশাপাশি ওরা আগ্রাসী আচরণও করছে। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে কমিউনিকেশন বাড়াতে হবে। অনলাইন ক্লাসে নজরদারিও জরুরী। সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন মোটিভেট ও কাউন্সিলিং করা।

 

জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সমন্বয়ক নাসিমা আক্তার জলি বলেন, করোনাকালে ঘরে বসে থেকে সন্তানদের ইন্টারনেটে আসক্তি বাড়ছে। এতে শিশুরা সাইবার ঝুঁকিতে পড়ছে। বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে দেখা না করতে না পেরে, বাইরে না যেতে পেরে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছে। এ ক্ষেত্রে শিশু যে মানসিক চাপের মধ্যে আছে, তার মনোজগতে যে পরিবর্তনগুলো আসছে সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। ঘরেই ওদের বিনোদনের ব্যাবস্থা করতে হবে, পরিবারকে বন্ধুসুলভ আচরণ করতে হবে।

 

প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের ইন্টারনেট ব্যবহার নিরাপদ করতে বাবা-মাকে মূলত দুটি জিনিস নজরদারিতে রাখতে হবে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে শিশুরা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গিয়ে কোনো ধরনের বিপদে পড়ছে কিনা। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে তারা কোনো আসক্তিতে জড়িয়ে পড়ছে কিনা

 

(সাইবারবার্তা.কম/জেডআই/১১ নভেম্বর, ২০২০)

শেয়ার করুন

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
আরও পড়ুন

নতুন প্রকাশ