শেষ পর্যন্ত অ্যামাজন মালিকানায় গেল হলিউডের বিখ্যাত ফিল্ম স্টুডিও মেট্রো গোল্ডউইন মেয়ার বা এমজিএম। মালিকানা হাতবদলে অ্যামাজনকে গুণতে হচ্ছে আটশ’ ৪৫ কোটি ডলার। হলিউডের ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই স্টুডিও থেকে আসা চলচ্চিত্রের তালিকায় ক্লাসিক বলে বিবেচিত ‘সাম লাইক ইট হট’ বা ‘সিংগিং ইন দ্য রেইনে’র পাশাপাশি এসেছে জেমস বন্ড সিরিজের মতো ব্যবসা সফল ফ্রাঞ্চাইজ। এই বিক্রির ফলে অ্যামাজনের প্রাইম স্ট্রিমিং সেবা এমজিএম-এর পুরোনো ক্যাটালগের এক বিশাল সম্ভার হাতে পাবে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
অ্যামাজনের এক নির্বাহী বুধবার বলেন, “অত্যন্ত উচ্চমানের গল্প সাধারণের কাছে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে এটি অসম্ভব রোমাঞ্চকার সুযোগ এবং এটি নানারকম সম্ভাবনারর পথ খুলে দেবে।” অ্যামাজন প্রাইম ভিডিও’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং অ্যামাজন স্টুডিও’র প্রধান মাইক হপকিন্স বলেন, “এই ক্রয়ের প্রধান আর্থিক মূল্য রয়েছে মেধাভিত্তিক সম্পদের এক বিশাল সম্ভার যেটি আমরা এমজিএম-এর অসম্ভব মেধাবী দলের সঙ্গে মিলে নতুন কল্পনায় দাঁড় করাবো।” চুক্তির ফলে অ্যামাজনের প্রাইম ভিডিও’র তালিকায় যোগ হবে প্রায় চার হাজার চলচ্চিত্র, যার মধ্যে রয়েছে জেমস বন্ড সিরিজ এবং প্রায় ১৭ হাজার টেলিভিশন অনুষ্ঠান।
এমজিএম স্টুডিও’র মালিক প্রতিষ্ঠান এমজিএম হোল্ডিংস গত বছর থেকেই স্টুডিও’র জন্য ক্রেতা খুঁজছিল।এক বিবৃতিতে অ্যামাজন বলেছে, “এই চুক্তির ফলে এমজিএম যে কাজটি সবচেয়ে ভালো করে, সেই অসাধারণ গল্প বলার কাজটিই চালিয়ে যাবে।” ১৯২৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই স্টুডিও এর লোগো এবং সিংহ গর্জনের প্রতীকের মাধ্যমেই অনেকের কাছে পরিচিত।
স্ট্রিমিং সেবা
অ্যামাজনের প্রাইম সেবা এখন নানামুখী প্রতিযোগীর সঙ্গে বাজারে লড়াই করছে। এর মধ্যে রয়েছে নেটফ্লিক্স, ডিজনি প্লাস এবং অ্যাপল টিভি। করোনাভাইরাস লকডাউনে লোকজনের স্ট্রিমিং ভিডিও দেখার যে অভ্যাস গড়ে উঠেছে, এই প্রতিষ্ঠানগুলোর সবকটিই চাইছে সেটি যেন চালু থাকে। “অ্যামাজন চাইছে বিনোদন জগতে বড় খেলোয়াড় হয়ে উঠতে এবং সেই দৃষ্টিকোণ থেকে হলিউডের অন্যতম পুরোনো এবং আইকনিক স্টুডিওকে কেনার চেয়ে ভালো আর কিছুই হতে পারে না।” – বলছিলেন ইনভেস্টিং ডটকম-এর জ্যেষ্ঠ অর্থ বিশ্লেষক জেসি কোহেন। “স্ট্রিমিং যুদ্ধ যখন তাপ ছড়াতে শুরু করছে তখন কনটেন্ট হচ্ছে মুল বিষয়।”
টেলিকম জায়ান্ট এটিঅ্যান্ডটি’র মালিকানাধীন ওয়ার্নার মিডিয়া এবং ডিসকভারি মিলে চার হাজার তিনশ’ কোটি ডলার মূল্যের একক প্রতিষ্ঠান পড়ে তেলার ঘোষণার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে অ্যামাজন এই চুক্তির ঘোষণা দিল। ২০১৭ সালে এক হাজার তিনশ’ ৭০ কোটি ডলারে হোল ফুডস কেনার পর এইটিই অ্যামাজনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আর্থিক মূল্যে কোনো ক্রয়ের ঘটনা।